ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

কান্নাকাটি করুন এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকুন

জাগো নিউজ ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৫:০২ পিএম, ২২ মার্চ ২০২০

বিশ্বব্যাপী প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশবাসীর উদ্দেশে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী বলেছেন, অন্যায় কাজ ছেড়ে মহান প্রভুর দরবারে খাঁটি দিলে (মন) তাওবা, দোয়া ও কান্নাকাটি করুন এবং নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকুন। আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন থাকাসহ এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জরুরি দিকনির্দেশনা মেনে চলুন।

রোববার (২২ মার্চ) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি। করোনাভাইরাসে আতঙ্কিত না হয়ে আল্লাহর ওপর ঈমান এবং আকিদা বিশ্বাস ঠিক রেখে সচেতন থাকতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বানও জানান তিনি। তিনি বলেন, বাস্তবে কেউ যদি এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয় তাহলে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী তার কোয়ারেন্টাইনে থাকা উচিত।

তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাস বিশ্বে আজ এক আতঙ্কের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুরো বিশ্ব যেন আজ অবরুদ্ধ। অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের সাথে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, এ ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে মসজিদে জামাত সহকারে নামাজ পড়তে নিষেধ করা হচ্ছে, জুমা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। কুরআন ও হাদিসের ওয়াজ মাহফিল বন্ধ করা হচ্ছে। কিন্তু কই! অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়গুলো বন্ধের তো কোনো আওয়াজ উঠছে না! মসজিদে কম যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু মন্দির প্যাগোডার কথা তো তেমন বলা হচ্ছে না!

তিনি বলেন, এমন নাজুক মুহূর্তে মসজিদে মসজিদে নামাজের পরে বিশেষ দোয়া কুনুতে নাজেলা পাঠ এবং মাদরাসায় বিভিন্ন দোয়া-দরুদ, খতমে কুরআন শরিফ, খতমে বুখারি শরিফ, দোয়া ইউনুসের আয়োজন করে করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে মহান প্রভুর দরবারে কায়মনোবাক্যে দোয়া করতে হবে। মহামারি এসেছে আল্লাহ তায়া’লার নাফরমানি, অবাধ্যতা আর ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের দরুন। এ মুহূর্তে সারাদেশে ইসলামবিরোধী সব কার্যক্রম বন্ধ করা সরকারের দায়িত্ব ও কর্তব্য।

রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা দিতে চিকিৎসকদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বাবুনগরী বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) রোগীর সেবা-শুশ্রুষা করা, তাকে সান্ত্বনা দেওয়াকে সর্বোচ্চ সৎ কাজ এবং গ্রহণযোগ্য ইবাদত হিসেবে ঘোষণা করেছেন। রাসুল (সা.) স্বয়ং রোগীদের ঘরে গিয়ে তাদের দেখাশোনা করতেন এবং তাদের সঙ্গে এমন কথা বলতেন যাতে তাদের মনে প্রশান্তি আসত, দুশ্চিন্তা হালকা হয়ে যেত।

মৃত্যু ছাড়িয়েছে ১৩ হাজার, আক্রান্ত ৩ লাখের বেশি
বিশ্বজুড়ে নভেল করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ১৩ হাজার ছাড়িয়েছে, একই সঙ্গে তিন লাখের কোটা পার হয়েছে মোট আক্রান্তের সংখ্যা। ইতোমধ্যেই ১৮৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস। সবশেষ তথ্য অনুসারে, এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৭ হাজার ৬২৫ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ১৩ হাজার ৫০ জন

চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৯৫ হাজার ৭৯৭ জন কোভিড-১৯ রোগী। চিকিৎসাধীন ১ লাখ ৯৮ হাজার ৭৭৮। এদের মধ্যে অন্তত ৯ হাজার ৩০০ জনের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। চীনে গতকাল নতুন করে ৪৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, মারা গেছেন ছয়জন। এ নিয়ে সেখানে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়ছে ৮১ হাজার ৫৪ জন, মৃত্যু ৩ হাজার ২৬১ জনের।

দেশে আক্রান্ত বেড়ে ২৭
মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসে দেশে নতুন করে আরও তিনজন আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে ভাইরাসটিতে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২৭ জন। এছাড়া সংক্রমিত রোগীদের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন আরও দুজন, ফলে মোট সুস্থ হয়েছেন পাঁচজন। তবে নতুন করে কারও মৃত্যু হয়নি। অর্থাৎ করোনায় দেশে মৃতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত দুজনই।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা রোববার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে জানান, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় সন্দেহভাজন হিসেবে আরও ৬৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে তিনজনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ২৭। এছাড়া আগে আক্রান্তদের মধ্যে তিনজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। এবার নতুন করে আরও দুজন সুস্থ হয়েছেন। ফলে মোট পাঁচজন সুস্থ হয়েছেন।

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত
করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধে এপ্রিলে অনুষ্ঠিতব্য এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। আগামী ১ এপ্রিল এই পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। রোববার দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পরীক্ষা আপাতত স্থগিত করা হলেও আগামী এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার পরবর্তী তারিখ জানানো হবে।

আন্তঃশিক্ষাবোর্ড ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক জাগো নিউজকে বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ পরীক্ষা স্থগিত রাখা হবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পরবর্তী ১৫ দিন পর পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। এ বিষয়ে সভা করে এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে পরবর্তী পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণা করা হতে পারে। ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, করোনাভাইরাসের জন্য এইচএসসি পরীক্ষা ১ এপ্রিল শুরু না করে এটি ঈদুল ফিতরের পর আয়োজন করার প্রস্তাব দেয়া হতে পারে। এরপর সুবিধামতো সময়ে এ পরীক্ষা আয়োজন করা যেতে পারে। তবে শিক্ষার্থীরা যাতে সেশনজটে না পড়ে, সেটি মাথায় রেখে এইচএসসি পরীক্ষার সংশোধিত সময়সূচি প্রকাশ করা হবে।

এনএফ/এমকেএইচ