করোনাভাইরাস রোধে জরুরি অবস্থা ঘোষণার দাবি সিপিবির
করোনাভাইরাসজনিত মহাবিপর্যয়কর পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারকে ‘নিস্পৃহ ও দায়িত্বহীন’ উল্লেখ করে এ বিষয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম।
তারা বলেন, ‘সরকারের মন্ত্রীদের দিক থেকে নানা ধরনের অসত্য ও দায়িত্বহীন বক্তব্য জনগণের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। এ ধরনের দায়িত্বহীন বক্তব্য মানুষকে সম্ভাব্য বিপর্যয় মোকাবিলার পরিবর্তে অপ্রস্তুত ও অসতর্ক করবে। যার পরিণাম হবে ভয়াবহ। করোনাভাইরাস বিপর্যয় রোধের জন্য অবিলম্বে দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে হবে।’
শুক্রবার (২০ মার্চ) এক বিবৃতিতে সিপিবির নেতৃবৃন্দ এ সব কথা বলেন।
তারা বলেন, ‘সারা পৃথিবীতে করোনাভাইরাসের কারণে যে মহাবিপর্যয় তৈরি হয়েছে, তা থেকে বাংলাদেশ সরকার কোনো শিক্ষাগ্রহণ করেনি। করোনা ভাইরাসের বিপর্যয় রোধে দীর্ঘদিন সময় পেলেও, তা হেলায় নষ্ট করে আজ তারা প্রস্তুতিবিহীন।’
নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুতি খুবই অপ্রতুল। যেসব চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী রোগীদের সেবা দেবেন তাদের নিজেদেরই কোনো নিরাপত্তা প্রস্তুতি নেই। এ মুহূর্তে দেশে করোনাভাইরাস পরীক্ষার কিটের সংখ্যা মাত্র ১৭০০ টি। যা আমাদের জনসংখ্যার তুলনায় কোনো সংখ্যাই নয়।’ জরুরি ভিত্তিতে কিট বানানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সরকারের প্রতি নেতৃবৃন্দ দাবি জানান।
করোনাভাইরাসের মহাবিপর্যয় রোধের জন্য কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষ থেকে সরকারের কাছে কয়েকদফা দফা জরুরি দাবি জানানো হয়। এতে বলা হয়, ‘করোনাভাইরাস বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য সরকারের উদ্যোগে সব দল, মহল, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে সভা করে জাতীয় কর্মনীতি গ্রহণ করতে হবে। চলতি অর্থবছরের বাজেট পুনর্বিন্যাস করে করোনাভাইরাস বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে। করোনাভাইরাস বিপর্যয়ে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা শ্রমঘন গার্মেন্টস শিল্পের ৫০ লাখ শ্রমিকের সবেতনে ছুটি নিশ্চিত করে অবিলম্বে গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ ঘোষণা এবং গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। শহরের সবচেয়ে বেশি জনঘনত্বপূর্ণ এলাকা বস্তির মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের জন্য দ্রুতই বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। গৃহহীন, উন্মুক্ত এলাকায় বসবাসকারী উন্মুক্ত শহরবাসীকে বিপর্যয় থেকে রক্ষার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অস্বাভাবিক হারে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে যুক্ত অসাধু ব্যবসায়ী এবং মজুদদার উৎপাদক-ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরির উপকরণসমূহের দাম স্বাভাবিক রাখার জন্য সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। প্রয়োজনে উপকরণসমূহের দাম কমাতে শুল্ক প্রত্যাহার করতে হবে। সব মানুষকে একটি করে মাস্ক প্রদান করতে হবে।
এফএইচএস/এফআর/পিআর