করোনার সর্বোচ্চ ঝুঁকিতেও নির্বাচন পেছাতে চান না ডা. শাহাদাত
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ক্ষেত্রে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এ ঝুঁকির কথা জেনেও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ডা. শাহাদাত চান না এ কারণে নির্বাচন পেছানো হোক। একজন চিকিৎসক নেতার এ মতামত নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সমাজের বিশিষ্টজনরা।
করোনা পরিস্থিতির কারণে নির্বাচন পেছানো সমর্থন করেন কি না- জাগো নিউজের এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘২৬ মার্চ থেকে টানা ছুটির কারণে কেউ বাড়িঘরে বা বেড়াতে গেলে তারা আর ভোট দিতে আসতে উৎসাহী হবে না। সেজন্য ২৯ মার্চের পরিবর্তে ৩১ মার্চ ভোটগ্রহণের জন্য বলেছিলাম। তার মানে করোনাভাইরাসের কারণে নির্বাচন পেছাতে হবে এমনটা নয়।’
মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রামে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে ডা. শাহাদাত হোসেনের ওয়েবসাইট উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাকে ওই প্রশ্ন করা হয়। নির্বাচনী প্রচারণার জন্য এই ওয়েবসাইট চালু করেছেন তিনি।
শাহাদাত বলেন, ‘সর্দি, কাশি, জ্বর হলেই যে করোনাভাইরাস হয়ে যাবে, এরকম ভেবে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। পানি বেশি খেতে হবে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। ভিটামিনসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে প্রচুর পরিমাণে।’
ডা. শাহাদাতের এমন বক্তব্যের বিষয়ে জাগো নিউজের পক্ষ থেকে কথা হয় বাংলাদেশ কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশনের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এস. এম নাজির হোসাইনের সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘এই সংকটময় মুহূর্তে আমাদের প্র্যাকটিক্যাল কথা বলতে হবে। গতকাল সিভিল সার্জন তার কথা বলে দিয়েছেন। তিনি আমাদের সতর্ক করেছেন। এ অবস্থায় নির্বাচনটা বন্ধ করা প্রয়োজন। এ ছাড়া আপনি একজন প্রার্থীর মতামত আমাকে জানিয়েছেন, তিনি একজন চিকিৎসক হয়ে এমন কথা বলতে পারেন না। একজন চিকিৎসকের প্রধান দায়িত্ব হলো রোগীর সুরক্ষা দেয়া। চিকিৎসক হিসেবে তার সবার আগে মানুষের স্বার্থ বিবেচনা করা উচিত ছিল।’
আজ (১৭ মার্চ) সকাল ৮টা পর্যন্ত চট্টগ্রামে বিদেশফেরত ৩১ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে বলে জানান জেলা সিভিল সার্জন শেখ ফজলে রাব্বী মিয়া। গতকাল তিনি জানান, এই মুহূর্তে করোনার সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে চট্টগ্রাম।
সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রচারে ওয়েবসাইট চালু বিষয়ে মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আমাদের প্রচারণা ও কার্যক্রমকে জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দিতে এই ওয়েবপেজ। করোনাকে এরই মধ্যে ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন মহামারি ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশেও করোনা আক্রান্ত ১০ রোগী শনাক্ত হয়েছে। গতকাল সিভিল সার্জনও বলেছেন ঝুঁকির বিষয়ে। সব মিলিয়ে প্রচারণটা অন্যভাবে আমরা করতে চাই। কোলাকুলি, হ্যান্ডশেক এগুলো এভয়েড করার জন্যই সোশ্যাল মিডিয়াকে অ্যাক্টিভ করছি। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আমাদের প্রচারণাটা চট্টগ্রাম নয় শুধু, সারাদেশের মানুষের কাছে চলে যাবে। আমরা সবসময় আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে মানুষের কাছে যেতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘২৯ মার্চ যে নির্বাচন হবে, সেখানে বিএনপির পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে চট্টগ্রামবাসী ধানের শীষে ভোট দিয়ে আমাদের জয়ী করবেন। নগরবাসী ভোটের অপেক্ষায় আছেন। ভোট বিপ্লব হবে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুকুমার বড়ুয়া, বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, দক্ষিণ জেলার আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান এবং নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর প্রমুখ।
জেডএ/এমএস