ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

খালেদার সমাবেশ শনিবার

প্রকাশিত: ০৪:০৩ এএম, ২৯ অক্টোবর ২০১৪

একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর রায় আজ ঘোষণা করবেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। এ রায়কে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে আগামী বৃহস্পতিবার ও পরের সপ্তাহের রোববার হরতাল দেওয়ার প্রাথমিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে দলটি। পাশাপাশি আগামী শুক্রবার দোয়া দিবস ও পরদিন শনিবার সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্তও গ্রহণ করেছে। মঙ্গলবার রাতে দলের নীতিনির্ধারকদের পক্ষ থেকে এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রস্তুত থাকতে সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রায় জামায়াতের প্রত্যাশিত অথবা অপ্রত্যাশিত যাই হোক, উভয় বিবেচনায় বৃহস্পতিবার ও রবিবার হরতাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রায় খুব বেশি নেতিবাচক মনে করলে কর্মসূচি আগামী সপ্তাহে আরও কয়েকদিন গড়াতে পারে। বৃহস্পতিবার হরতালের সম্ভাবনাকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের নাটোরের সমাবেশ বাতিল করা হয়েছে। এ সমাবেশে জোটনেত্রী খালেদা জিয়ার উপস্থিত থাকার কথা ছিল। মঙ্গলবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে বিএনপির উচ্চপর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলেন জামায়াতের মহানগর পর্যায়ের দুই গুরুত্বপূর্ণ নেতা। যারা কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্যও। এরপরই নাটোরের সমাবেশ পিছিয়ে ১ নভেম্বর নেওয়া হয়।

মতিউর রহমান নিজামীর রায় জামায়াতের কাছে খুব অনাকাঙ্খিত হলে ১ অক্টোবরের পর ফের হরতালের কর্মসূচি দিতে পারে দলটি। তবে রায়পরবর্তী সময় থেকে সন্ধ্যার মধ্যে রাজধানীসহ সারা দেশে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানাতে বিক্ষোভ করতে ঝটিকা মিছিল ও সহিংসতা দেখাবে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার রাতে দলের দায়িত্বশীলদের কাছ থেকে নির্দেশনা পেয়েছেন কয়েকজন নেতাকর্মী। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরের দুইজন সক্রিয় থানা পর্যায়ের নেতা এবং কুমিল্লা জেলা দক্ষিণ সদর এলাকার একজন নির্বাচিত জামায়াতসমর্থিত চেয়ারম্যানের বক্তব্যে এসব তথ্য ওঠে আসে।

জানা গেছে, দলের শীর্ষনেতার রায়ঘিরে রাজপথে প্রতিক্রিয়া দেখানোর প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে জামায়াত ও দলটির সহযোগি সংগঠন ছাত্র শিবির। তবে নেতাকর্মীদের প্রতিক্রিয়া ২০১৩ সালের মতো সহিংস ও ধ্বংসাত্মক হবে কী না, এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পল্টন থানার একজন সক্রিয় কর্মী জানান, নিজামী দলের শীর্ষনেতা হওয়ায় শক্তি জানান দেওয়ার একটি বিষয় রয়েছে। এ কারণে, ঢাকার বাইরে থেকে আসা নেতাকর্মীদের বৃহস্পতিবার হরতালে ব্যাপকভাবে পিকেটিংয়ে যুক্ত করা হবে। এ বিষয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর কথা হয় জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সহকারি সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দের সঙ্গে। ওই সময় হরতাল নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত না হওয়ায় তিনি এ প্রসঙ্গে কিছু জানাতে পারেননি। তবে আকন্দ বলেন, ‘আমরা আশাবাদী মাওলানা নিজামী বেকসুর খালাস পাবেন। এরপরও যদি সরকার কোন প্রকার জুলুম করে তাহলে সংগঠন এর মোকাবেলা করবে।‘

প্রায় একই সময়ে কথা হয় ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মনির আহমদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘মুরুব্বীরা রায় দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন।‘ ছাত্র শিবিরের সভাপতি আবদুল জব্বার ও সেক্রেটারি জেনারেল আতিকুর রহমান মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আদালত যদি কোনও মহলের প্ররোচণায় মাওলানা নিজামীর উপর অবিচার করে তাহলে কোনওভাবেই তা মেনে নেওয়া হবেনা। যে কোনও অবিচারের উপযুক্ত জবাব দিতে ছাত্রজনতাকে সাথে নিয়ে ছাত্রশিবির কঠোর আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত আছে।‘

এদিকে অনিবার্য কারণ দেখিয়ে আগামী ৩০ অক্টোবর নাটোরে ২০ দলীয় জোটের সমাবেশ পরিবর্তন করা হয়েছে। ওই দিন বৃহস্পতিবার নিজামীর রায় পরবর্তী হরতাল দেওয়ার পরিকল্পনা থাকায় জামায়াতের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করে সভার নতুন তারিখ ধার্য করা হয়েছে ১ নভেম্বর। জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ এক সদস্য বিএনপির এক সিনিয়র নেতার মাধ্যমে খালেদা জিয়ার অনুমতিসাপেক্ষে কর্মসূচির পরিবর্তিত দিনক্ষণ ঠিক করেন।