আ.লীগের সম্মেলন : নিরাপত্তা বলয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নেতাকর্মীদের ঢল নেমেছে। শুক্রবার বিকেল ৩টায় দলটির সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন।
দুই দিনব্যপী এ সম্মেলনকে ঘিরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলছে সাজ সাজ রব। সকাল থেকেই তীব্র শীত উপেক্ষা করে সারা দেশ থেকে নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অভিমুখে ছুটে আসছেন। এ সম্মেলন নির্বিঘ্ন ও নিরাপদে সম্পন্ন করতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
শুক্রবার দুপুরে সম্মেলন শুরুর কথা থাকলেও সকাল থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কেন্দ্রীক বাড়তে থাকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ভিড়। বর্ণিল ব্যানার, ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে পুরো এলাকা।
সম্মেলন কেন্দ্রস্থল ও আশপাশের এলাকা ঘিরে সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। বাড়তি পুলিশ ও র্যাব সদস্য মোতায়েনের পাশাপাশি সাদা পোশাকে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শাহবাগ, মৎস্যভবন, হাইকোর্টের সামনের এলাকা, দোয়েল চত্বর ও টিএসসি এলাকাসহ উদ্যানের চারপাশে বাড়তি পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা নিয়োজিত রয়েছেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে সেনা সদস্যদেরও নিয়োজিত থাকতে দেখা গেছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে পুলিশের সাজোয়া যান, জলকামান ও প্রিজন ভ্যান।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রতিটি প্রবেশ পথে সতর্ক অবস্থা দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যদের। এছাড়া প্রতিটি প্রবেশ পথে বসানো হয়েছে আর্চওয়ে, যার মধ্য দিয়ে সবাইকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জানায়, বিপুল সংখ্যক র্যাব-পুলিশ মোতায়েনসহ প্রস্তুত রয়েছে পুলিশের বিশেষায়িত সব টিম। পুরো এলাকা সিসিটিভির আওতায় আনা হয়েছে। নেতাকর্মীদের প্রবেশের সময় আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর এবং প্রয়োজনে দেহ তল্লাশির মধ্য দিয়ে সভাস্থলে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে।
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ৫টি প্রবেশ পথের মধ্যে শিখা চিরন্তনের ফটক দিয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ ভিআইপিরা প্রবেশ করবেন। বাকিগুলো দিয়ে কাউন্সিলর ও ডেলিগেটরা প্রবেশ করবেন।
ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার সাজ্জাদুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগের এ সম্মেলনে বিপুল পরিমাণ জনসমাগমের কথা মাথায় রেখে পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ দিন ভোর থেকেই পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। সভাস্থলের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে। প্রতিটি প্রবেশপথে তিন স্তরের নিরাপত্তা রয়েছে। মেটাল ডিটেক্টরের পাশাপাশি দেহ তল্লাশি করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে অনুষ্ঠানস্থলে আগতদের যাতায়াত সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করতে সবার সহযোগিতা কামনা করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
সম্মেলন উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কেন্দ্রিক ডাইভারভেশন ও পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গাড়ির ধরন অনুযায়ী পার্কিংয়ের স্থান
১. ভিআইপি গাড়ি পার্কিং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান
২. পুলিশ, সাংবাদিকের গাড়ি ও মোটরসাইকেল রমনা ইউরো আসিয়ানো চাইনিজ রেঁস্তোরা
৩. সাংবাদিকদের গাড়ি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি রমনা টেনিস কমপ্লেক্স
৪. বড় বাস জিমনেশিয়াম মাঠ ও নীলক্ষেত হয়ে পলাশী (পূর্ব প্রান্ত)
৫. ছোট-বড় গাড়ি মল চত্বর
৬. বড় গাড়ি ভাস্কর্য ক্রসিং হয়ে ভিসির বাংলো ও
৭. ছোট গাড়ি সুগন্ধা ক্রসিং হতে বেইলি রোড।
যেখানে ডাইভারশন থাকবে
বাংলামোটর ক্রসিং, রূপসী বাংলা ক্রসিং, রাজমনি ক্রসিং, মিন্টু রোড পূর্ব প্রান্ত ক্রসিং, কাকরাইল চার্চ ক্রসিং, মৎস্য ভবন ক্রসিং, জগন্নাথ হল ক্রসিং, শাহবাগ ক্রসিং, ইউবিএল ক্রসিং, কাঁটাবন ক্রসিং, দোয়েল চত্বর ক্রসিং ও সাইন্সল্যাব ক্রসিং। তবে এই ডাইভারশন প্রয়োজন অনুযায়ী কার্যকর হবে।
যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা রক্ষা ও যানজট এড়ানোর লক্ষ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ জনসাধারণের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছে। সেই সঙ্গে নাগরিকবৃন্দের যানবাহন চলাচলে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটায় আন্তরিকভাবে সমানুভূতি প্রকাশ করছে।
জেইউ/এমএসএইচ/পিআর