ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

কক্সবাজার জেলা বিএনপিতে পরিবর্তনের আভাস

প্রকাশিত: ০৮:৪০ এএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপির কক্সবাজার জেলা কমিটিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। দলটির ইউনিয়ন থেকে জেলা পর্যায় পর্যন্ত পুনর্গঠন করা হচ্ছে। বিশেষ করে জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ কমিটির প্রতিটি পর্যায় থেকে বাদ যাচ্ছেন নিষ্ক্রিয়রা।

তাদের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন অপেক্ষাকৃত তরুণ, দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ, যোগ্য, মেধাবি ও নির্যাতিত নেতারা। ঈদের পর বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া লন্ডন সফর শেষে দেশে ফিরলেই মেয়াদোত্তীর্ণ ও বিতর্কিত বর্তমান জেলা কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি ঘোষণা করবেন বলে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক নেতা আভাস দিয়েছেন।

কেন্দ্রিয় দ্বায়িত্বশীল একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাগো নিউজকে জানান, কক্সবাজার জেলার পুরো কমিটিকে ঢেলে সাজানো হবে। যেহেতু, কক্সবাজার গুরুত্বপূর্ণ একটি জেলা তাই এ লক্ষ্যে বিএনপি নেত্রীর সঙ্গে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আলোচনা হয়েছে। বিএনপির দুই দফা সরকারবিরোধী আন্দোলনের যারা নিষ্ক্রিয় ছিলেন এবং সরকারের সঙ্গে ‘সমঝোতা’ করে আন্দোলন থেকে নিজেকে দূরে রেখেছেন তারা নতুন কমিটিতে স্থান পাচ্ছেন না।

সুত্র জানায়, নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয় মাথায় রেখে সম্মেলন না করে জেলা বিএনপির নতুন কমিটি মনোনীত করার গোপন সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে জেলা বিএনপির এক ডজন নেতা সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদক হওয়ার জন্য ঢাকায় জোর লবিং শুরু করেছেন। বিশেষ করে ভারতের শিলংয়ে অবস্থানরত বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিনের আশির্বাদ পেতে সেখানেও ভিড় জমাচ্ছেন অনেকেই।

নেতা-কর্মীরা জানান, জেলা বিএনপির সভাপতি পদে চার জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে চার জনের নাম ঘুরে ফিরে শোনা যাচ্ছে। তারা হলেন সভাপতি পদে, বর্তমান সভাপতি সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরী, সাবেক সাংসদ লুৎফর রহমান কাজল, সাবেক সাংসদ আলমগীর মো. মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ এবং জেলা কমিটির বর্তমান সহ-সভাপতি ও কুতুবদিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এটিএম নুরুল বশর চৌধুরী। আর সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শামীম আরা স্বপ্না, পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল হুদা চৌধুরী, জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি অধ্যাপক আজিজুর রহমান ও পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ মো. আলী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতা-কর্মী জানান, বর্তমান সভাপতি শাহজাহান চৌধুরী সিনিয়র একজন রাজনীতিবিদ ও সাবেক হুইপ। আর সাবেক সাংসদ লুৎফর রহমান কাজল ও আলমগীর মো. মাহফুজ উল­াহ ফরিদ দুজনই কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। এছাড়া এ দুই সাংসদের সুনামও রয়েছে কেন্দ্রে। তাই তাদের তিন জনকেই কেন্দ্রীয় কমিটির যে কোনো সাংগঠনিক দ্বায়িত্বে নিয়ে যেতে পারেন দলের নীতি নির্ধারক মহল। গোপনে একটি পক্ষ এমনটিই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও জনশ্রুতি আছে।

এছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদে  ইতোপূর্বে বিএনপির দুই দফা সরকারবিরোধী আন্দোলনে নিষ্ক্রিয় থাকায় বর্তমান সাধারণ সম্পাদক শামীম আরা স্বপ্না নতুন কমিটিতে বাদ পড়তে পারেন। আর বর্তমান পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল হুদা চৌধুরীর বয়স ও সামাজিক অবস্থান সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে তাকে নতুন কমিটিতে সহ-সভাপতি পদে রাখা হতে পারে। এ পদে আরেক প্রার্থী জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক আজিজুর রহমান বিএনপির বিগত দুই দফা সরকারবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে মাঠে থাকায় এবং একাধিক মামলায় হয়রানির শিকার হওয়ার কারণে তাকে নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না বলে মনে করছেন তারা।

আবার ছাত্রদলের রাজনীতি থেকে ক্রমে মূল দলে জায়গা করে নেয়া রাশেদ মো. আলীও নিজ কর্ম গুণে হট লিস্টে রয়েছেন বলে মনে করছেন দলীয় বোদ্ধামহল।  

নতুন কমিটি গঠন প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির দফতর সম্পাদক ইউসুফ বদরী বলেন, নতুন কমিটিতে তারাই স্থান পাবেন যারা অপেক্ষাকৃত তরুণ, দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ, যোগ্য ও মেধাবি। এটাই কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত।

পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ মো. আলী বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে নতুন কমিটি গঠন করা হোক সেটা সবাই আশা করে। যারা সামনে সরকারের অপকর্মের বিরুদ্ধে মাঠে সোচ্চার থাকবেন তাদেরকেই কমিটিতে আনা উচিত বলে মনে করে তিনি।

দলীয় সূত্র জানায়, সর্বশেষ ২০০৯ সালের ২০ নভেম্বর কক্সবাজার স্টেডিয়ামে জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেত্রী সেলিমা রহমান সভাপতি পদে শাহজাহান চৌধুরীর নাম ঘোষণা করেন। এরপর সাধারণ সম্পাদক পদে কক্সবাজার আদালতের তৎকালীন সরকারি কৌঁসুলি শামীম আরা স্বপ্নার নাম ঘোষণা করলে শুরু হয় হইচই, সংঘর্ষ ও ভাঙচুর।

সাবেক সাংসদ লুৎফুর রহমান কাজল জাগো নিউজকে বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে জাতীয়তাবাদের পক্ষে ছাত্র জীবন থেকে কাজ করে আজকের অবস্থানে এসেছি। দলের সঙ্গে কখনো স্বার্থপরতা করিনি, দলের নীতিনির্ধারণী মহলের প্রতি অগাধ বিশ্বাস রয়েছে। দলের মঙ্গলের জন্য কেন্দ্র যে সিদ্ধান্ত দেবে তাই মেনে নিয়ে গণমানুষের তরে কাজ করে যাব।

এমজেড/এমএস