ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

আসামে তীক্ষ্ম নজর, দেশের স্বার্থে সীমান্তে সতর্কতা

আমানউল্লাহ আমান | প্রকাশিত: ১১:০৮ পিএম, ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ভারতের আসাম রাজ্যের ঘোষিত চূড়ান্ত জাতীয় নাগরিক তালিকা (এনআরসি) দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয় হলেও, পরিস্থিতির ওপর বাংলাদেশের তীক্ষ্ণ নজর রয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা।

তারা মনে করেন, এনআরসি নিয়ে মন্তব্য করার সময় এখনও আসেনি। কারণ এনআরসির প্রকাশিত তালিকা চূড়ান্ত নয়। আরও বেশ কয়েকটি ধাপ রয়েছে। তবে বাংলাদেশের স্বার্থ যাতে ক্ষুণ্ন না হয় সেজন্য নিরাপত্তামূলক ও সতর্ক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, আসামে চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা থেকে ১৯ লাখ বাসিন্দার নাম বাদ পড়েছে। এর মধ্যে ১৪ লাখ বাসিন্দা নাকি বেআইনিভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসেছে। তাদেরকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে দেয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছেন আসামের অর্থমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্ব শর্মা।

তিনি বলেছেন, সীমান্তবর্তী জেলার বাসিন্দাদের নথি আবার খতিয়ে দেখা উচিত। ১৪ লাখ বেআইনি শরণার্থীকে ফিরিয়ে দেয়ার বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলবেন।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, নাম বাদ যাওয়া বাসিন্দারা আবারও তাদের নথি জমা দিয়ে তালিকায় নাম তোলার জন্য আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আবেদন জানাতে পারবেন।

এ সংক্রান্ত বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আসাম আমাদের একেবারে নিকটতম প্রতিবেশী। কাজেই আমরা বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছি। তবে বিষয়টি একেবারেই ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমরা এটা পর্যবেক্ষণ করছি এই কারণে যে যাচাই-বাছাইয়ের একটা প্রক্রিয়া আছে, উচ্চ আদালতে আপিলের একটা সুযোগ আছে। বিষয়টি সম্পর্কে এই মুহূর্তে চূড়ান্ত মন্তব্য করার কোনো সুযোগ নেই।’

এদিকে রোববার গাজীপুরে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আসামের বিষয়ে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ‘কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে আমরা মন্তব্য করছি না, করতে চাইও না। ভারত যদি আমাদের কিছু জিজ্ঞাসা করে তখন আমরা আমাদের প্রতিক্রিয়া জানাব। সুস্পষ্টভাবে বলতে চাই, একাত্তরের পর বাংলাদেশ থেকে কেউ ভারতে যায়নি। যারা গেছেন তারা আগেই গেছেন। ওই দেশ থেকে যেমন এখানে এসেছেন এখান থেকেও ওখানে গেছেন। কাজেই আমাদের চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।’

southeast

আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জমির জাগো নিউজকে বলেন, চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা যেটা প্রকাশ হয়েছে, তাতে বলা হয়েছে ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন। বলা হয়েছে, নাগরিকত্ব নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যে আছে তারা। এর মধ্যেই অধিকাংশ বাংলা ভাষাভাষী, কিংবা মুসলমান কিংবা হিন্দু ধর্মাবলম্বী। আমাদের তরফ থেকে যেটা করা হয়েছে, আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন যে এইটার ব্যাপারে সিলেটের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।

তিনি বলেন, সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে বিজিবির ১৯ তম ব্যাটালিয়ান যে আছে তাদের পক্ষ থেকে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণে বাসিন্দাদের সহায়তা করতে বলা হয়েছে। আমরা আমাদের তরফ থেকে নিরাপত্তা জোরদার করছি। দেশের জন্য যা কিছু করণীয় সেটা আমরা সচেষ্ট আছি। আমরা মনে করি, এই ফরেনার্স ট্রাইবুন্যাল এটা নিয়ে বেশকিছু বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সেখানকার জুরিস্টরা বলেছে, সর্বক্ষেত্রে সর্বপ্রকার একাউন্টিবিলিটি নিয়ে বিচার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা করা হয়নি। আমরা আশা করবো, যে তালিকা করা হয়েছে সেটা পুনর্বার দেখা শোনা করবে।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কর্ণেল (অব.) ফারুক খান জাগো নিউজকে বলেন, আমি যতটুকু জানি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই পরিস্থিতির ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম থেকে আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি এটা ফাইনাল না, এরপরও আরও অনেক স্টেপ আছে। সুতরাং আমরা দেখছি এবং এটা তো ভারতে ভ্যন্তরীণ ব্যাপার। তবে আমরা এই ব্যাপারটার ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছি যাতে আমাদের দেশের স্বার্থ ক্ষুণ্ন না হয়।

এইউএ/এমএসএইচ

আরও পড়ুন