ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

তারেককে নেতা বানানোর রাজনীতি জীবনেও করব না

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৯:০৪ পিএম, ২৬ আগস্ট ২০১৯

শেখ হাসিনাকে সরিয়ে তারেক রহমানকে নেতা বানানোর জন্য আমি কখনও রাজনীতি করি না, জীবনেও করবো না বলে মন্তব্য করেছেন কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম।

সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগ আয়োজিত বঙ্গবন্ধু হত্যা ও প্রতিরোধ যুদ্ধ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, খালেদা জিয়া জাতির একজন অন্যতম নেতা, কিন্তু তারেক রহমান নয়। কিন্তু গত নির্বাচনে প্রায় সব কিছুতেই নেতৃত্ব তারেক রহমানের হাতে চলে গিয়েছিল। যেহেতু ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নাই, সেহেতু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে আমাদের দলকে ঐক্যফ্রন্ট থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছি।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমরা ঐক্যফ্রন্ট থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করতে পারি, কিন্তু ড. কামাল হোসেনের ভালোবাসা থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করিনি। কোনো দিন করব না। ড. কামাল হোসেন যেভাবে চান জাতীয় ঐক্য আমিও সেভাবে চাই জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা হোক।

তিনি বলেন, আমরা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছিলাম নির্বাচনের আগে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আমরা কোনো মতেই বিএনপির নেতৃত্বে করিনি। আমরা ঐক্যফ্রন্ট করেছিলাম ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে। কিন্তু যে কোনোভাবেই হোক নির্বাচনের মনোনয়ন দেয়ার সময় থেকেই দেখা গেল, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মূল নেতৃত্ব বিএনপির হাতে চলে গেছে।

বিএনপি নেতাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আমি বিএনপি নেতা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ফোন করেছিলাম গতকাল। আমাদের বঙ্গবন্ধুর ওপর স্মরণসভায় আপনি আসেন। বললেন, ভাই আমার কালকে তিনটা প্রোগ্রাম, আমি তো ভাই আসতে পারব না। সত্য কথা বলতে আমার মুখে বাজে না, আমার বুকও কাপে না।’

তিনি বলেন, ‘আমি সঙ্গে সঙ্গে ফখরুল ইসলামকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যদি মিটিং না থাকতো তাহলে কী আপনাকে আশা করা যেত? তিনি বলেছেন, ভাই আপনি তো জানেন আমি অত সাহসী মানুষ না। পাঁচ মিনিট পরে নজরুল ইসলাম খানকে আমি ফোন করেছিলাম। তিনি বলেছেন, সালাম খানের মৃত্যু দিবস উপলক্ষে গাজীপুরে আমার প্রোগ্রাম আছে, আমি আসতে পারব না। আমি বলেছিলাম, প্রোগ্রাম না থাকলে কী আপনি আসতেন? বলেছেন, আপনার অনুভূতির সঙ্গে আমি একমত। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আমাদের কারো কোনো বিতর্ক থাকার কথা নয়।’

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে কাদের সিদ্দিকী বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যদি বিএনপির এই রকম বিতর্ক থাকে, বিএনপির মধ্যে যদি এমন দ্বন্দ্ব থাকে তাহলে বিএনপি রাজনীতি করতে পারবে না। বিএনপি একটি মাত্র দল বাংলাদেশে এটা সত্য কথা নয়। বিএনপিকে জিইয়ে রেখেছে আওয়ামী লীগ। বিএনপিকে জিইয়ে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা যদি ছয় মাস বিএনপির নাম মুখে না আনতেন এটার আজকে যা অবস্থা এটার চার ভাগের এক ভাগ হয়ে যেত।

তিনি বলেন, বিএনপি বিএনপি বলে শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দল বিএনপিকে বানিয়ে রেখেছেন। এটা তার নিজের স্বার্থে বানিয়ে রেখেছেন। বিএনপি না থাকলে শেখ হাসিনা থাকেন না, এটা তিনি জানেন বলেই তিনি এই কাজটি করেন। আমি সেই জন্যই বিএনপিকে পরিষ্কার কথা বলছি, জাতির পিতা নিয়ে যদি আপনাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব থাকে তাহলে কেয়ামত পর্যন্ত চিন্তা করেন না যে বাংলাদেশের শাসন ক্ষমতায় আবার আপনারা যাবেন। আপনারাই চান না বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি।

এ সময় পঁচাত্তরের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের স্বীকৃতি দাবি করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, আপনি হয় বলেন, আমরা পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ প্রতিরোধ করে অন্যায় করেছি। না হলে আপনি বলেন, আমরা সঠিক করেছি, দেশপ্রেমিক নাগরিক। যদি স্বীকৃতি না দেন তাহলে আপনার বিষয়ে আমরা সন্দেহ করব যে আপনি ক্ষমতার জন্য বঙ্গবন্ধুর নাম ব্যবহার করেন।

পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় তৎকালীন সেনাপ্রধান কে এম সফিউল্লাহ ও গোয়েন্দা প্রধান কর্নেল জামিলের মরোণত্তর ফাঁসির দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু বলেন, জিয়াউর রহমান সব করেছে, তিনি তো সেনাপ্রধান ছিলেন না। অথচ তার বিরুদ্ধে মামলাও করেন না।

কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল সিদ্দিকী। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান প্রমুখ।

এইউএ/জেএইচ/জেআইএম

আরও পড়ুন