২য় দিনেও হলো না বিএনপির সম্মেলন
তারিখ পরিবর্তন করার পর মঙ্গলবার আয়োজিত ঈশ্বরদী উপজেলা বিএনপির নির্ধারিত সম্মেলন আবারও অনুষ্ঠিত করা সম্ভব হলো না। দাশুড়িয়া এমএম উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর একই স্থানে সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিলো।
কিন্তু সেইদিন অনিবার্য কারণ দেখিয়ে সম্মেলন স্থগিত করে ১৫ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করা হয়। একই সময় বিএনপির অপর পক্ষ বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে।
এদিকে অনেক আগে থেকে ঈশ্বরদীতে বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দল বহাল থাকায় এবং আবারও সংঘাতের আশঙ্কায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মঙ্গলবারের সম্মেলন এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। ফলে সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি কেএস মাহমুদ, প্রধান বক্তা ছিলেন সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান তোতা। সভাপতিত্ব করার কথা ছিল উপজেলা কমিটির সভাপতি শামসুদ্দিন আহমেদ মালিথার।
একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমান কমিটি পাঁচ বছর আগে গঠন করা হয়। দুই বছর আগে মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পৌর কমিটির সম্মেলন না করেই গোপনে একটি পকেট কমিটি গঠনের চেষ্টা করায় বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। বিএনপি নেতা ও ছলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান এই অবস্থার কথা স্বীকার করে জাগো নিউজকে বলেন, আমরা নিম্ন পর্যায় থেকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে কমিটি গঠন করে তারপর উপজেলা সম্মেলন করতে চাই।
সম্মেলন আবারও স্থগিত বিষয়ে জেলা বিএনপির মৎস্য বিষয়ক সম্পাদক ও সাহাপুর ইউপি চেয়ারম্যান নেফাউর রহমান রাজু জাগো নিউজকে জানান, অনিয়মতান্ত্রিকভাবে উপজেলা সম্মেলন আয়োজনের প্রতিবাদে আমাদের বিক্ষোভ প্রদর্শনের প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে এটি করতে নিষেধ করা হয়। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে এ কর্মসূচি স্থগিত করেছি।
উপজেলা কমিটির বর্তমান সভাপতি শামসুদ্দিন আহমেদ মালিথা এ ব্যাপারে জাগো নিউজকে বলেন, সম্মেলনে ৩৫৭ জন কাউন্সিলর অংশগ্রহণ করেন। এর আগে গঠিত নির্বাচন কমিশনের কাছে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদকসহ পাঁচটি পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। আর কোনো মনোনয়নপত্র না পড়ায় তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
ঈশ্বরদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিমান কুমার দাশ জাগো নিউজকে জানান, বিদ্যালয় মাঠে সম্মেলনের বিষয়টি জানার পর বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আইন শৃঙ্খলার অবনতির হতে পারে আশঙ্কায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে লিখিত আবেদন করলে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। জারিকৃত আদেশ মঙ্গলবার সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
সম্মেলনে উপজেলা বিএনপির সভাপতি শামসুদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ঈশ্বরদীর বিএনপিতে জনসমর্থনহীন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব ও স্থানীয় নেতা নেফাউর রহমান রাজু ষড়যন্ত্র করে পাবনা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নিকট বিএনপির সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সারা ঈশ্বরদীতে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে আশঙ্কা দেখিয়ে আবেদন করেন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধারা জারি করে এলাকায় মাইকিং করা হয়।
তিনি আরও বলেন, খোলস পাল্টানো বিএনপির নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে যোগদানের পর থেকে অদ্যাবধি বিএনপির বিরুদ্ধে নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।
আলাউদ্দিন আহমেদ/এমজেড/আরআইপি