ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

প্রধানমন্ত্রী অবলীলায় মিথ্যাচার করছেন : রিজভী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৪:২৯ পিএম, ০৭ আগস্ট ২০১৯

ডেঙ্গু নিয়ে সরকারের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে গুম খুন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী অবলীলায় মিথ্যাচার করেছেন। আসলে সরকার মানুষের সামনে বক্তব্যের ধোঁয়া উড়াচ্ছে। মানুষের সঙ্গে রং তামাশা করছে।

বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচ তলায় ডেঙ্গু পরামর্শ কেন্দ্র ও হটলাইনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, বিএনপি সব সময় জনকল্যাণে কাজ করে। আজও ডেঙ্গু নিয়ে বিশিষ্ট চিকিৎসকরা সচেতন করতে কাজ করছে। লিফলেট বিতরণ করছে।

বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রুহুল কবির রিজভী। এ সময় অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন ড্যাবের সিনিয়র সহ সভাপতি মো. আবদুস সেলিম, মহাসচিব অধ্যাপক ডা. আব্দুল সালাম, কোষাধ্যক্ষ ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, ডা. মো. ফখরুজ্জামান, ড্যাবের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ডা. মো. সায়েম, ফারুক কাশেম, মশিউর রহমান কাজল প্রমুখ। হটলাইন উদ্বোধনের পর নয়াপল্টন এলাকায় লিফলেট বিতরণ করেন রুহুল কবির রিজভী।

রিজভী বলেন, দেশে ভয়ংকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ডেঙ্গু জ্বর মহামারি রূপ নিয়েছে। কিন্তু সরকার কোনো গুরুত্ব দেয়নি। ভোটারবিহীন সরকার ডেঙ্গু সম্পর্কে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক, দেশীয় সংস্থা ও সুশীল সমাজের সতর্ক বার্তাকে ভ্রুক্ষেপ করেনি। বরং মশকরা আর উপহাস করেছে। যিনি প্রধান দায়িত্বে ছিলেন সেই মন্ত্রী দেশের বাইরে গেছেন। শুনেছি প্রধানমন্ত্রীও অসুস্থ তিনিও দেশের বাইরে। কিন্তু এখন কোরবানির ঈদ উপলক্ষে লাখ লাখ মানুষ গ্রামে যাবেন। কিন্তু ডেঙ্গু প্রতিরোধে প্রত্যন্ত অঞ্চলে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেই। যেখানে ঢাকাতেই এ রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসক, শিক্ষার্থীসহ অনেকেই প্রতিদিন মারা যাচ্ছে। তাহলে গ্রামগঞ্জের কী অবস্থা হবে? ৬৪ জেলায় এখন ডেঙ্গু। এটা আরও তীব্রতর হলে কী পরিমাণ মড়ক শুরু হবে? তার ইয়ত্তা নেই। অথচ সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। সরকারের প্রস্তুতি কী। কী করছে তারা?

তিনি বলেন, সংবাদ মাধ্যমে হুমকি পাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের কথা নাকি গণমাধ্যম বেশি বেশি প্রচার করছে! আসলেই কী তাই? দেশের সাংবাদিক ঢাকা থেকে গুম হয়ে উদ্ধার হয় সুনামগঞ্জে। তারপরও নাকি গণমাধ্যমে বেশি বেশি প্রচার করা হচ্ছে বলে সাক্ষাৎকার দিয়ে অবলীলায় মিথ্যা বলছেন। তাহলে আমাদের ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলম, সাইফুল ইসলাম হিরু, হুমায়ুন পারভেজ, জাকির, সুমনসহ অন্যরা কই? প্রধানমন্ত্রী জবাব দিন। বিবিসির মতো গণমাধ্যমে আপনি অবলীলায় মিথ্যা বলে গেলেন। নাকি যতটুকু প্রচার করা দরকার ততটুকু তারা প্রচার করতে পারছে না। গণমাধ্যমের ওপর ভয়ংকর বিধিনিষেধের তরবারি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এর মধ্যেও মিডিয়া ডেঙ্গু নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আসলে যে দেশে মিডিয়ার স্বাধীনতা অনুপস্থিত, গণতন্ত্র নেই, বাকস্বাধীনতা নেই সেখানে তো মড়ক লাগবে, মহামারী লাগবে, দুর্ভিক্ষ লাগবে এটাই স্বাভাবিক।

রিজভী বলেন, রাতে বা দিনে কেউ যদি সত্য কথা বলতে চায় তাহলে তার কাছে অজানা টেলিফোন আসে। তারপরও প্রধানমন্ত্রী বিবিসির মতো একটি গণমাধ্যমে অবলীলায় মিথ্যা কথা বলেছেন। এ পরিস্থিতি চলতে পারে না। এটা চলতে দেয়া যায় না। আজকে এই দুর্দিন ও মহামারি, সরকারের দুঃশাসন অনাচার অত্যাচারের বিরুদ্ধে যেনো কোনো কথা বলতে না পারে সে জন্যই দেশের জনগণের প্রাণপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে বন্দি রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, আজকে সবাই মুখাপেক্ষী। যে আদালত মানুষের আস্থার শেষ ভরসা ছিল সেই আদালতও সরকারের মন্ত্রী এমপিদের ভাষায় কথা বলছে। দেশে ন্যায় বিচার থাকলে বেগম খালেদা জিয়া জেলে থাকতেন না। যে নেত্রী গণতন্ত্রের জন্য সারা জীবন লড়াই করেছেন তাকে বন্দি করা হয়েছে।

ড্যাবের কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করে রিজভী বলেন, আজকে ডেঙ্গু আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ড্যাব হটলাইন চালু করেছে যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে কেউ ডেঙ্গু বিষয়ে পরামর্শ জানতে চাইলে সহজেই সহযোগিতা পাবেন। ০১৩০৬৮৫৯৬৬৪ নাম্বারে কল করলে যে কেউ ডেঙ্গু বিষয়ে পরামর্শ জানতে পারবেন। বিএনপির অন্য অঙ্গ সংগঠনগুলোও পাড়ায় মহল্লায় ডেঙ্গু সচেতনতায় লিফলেট বিতরণ করছে।

ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদ বলেন, আমরা মানবিক কারণে কাজ করছি। আজকে ডেঙ্গু আক্রান্ত মানুষের পদভারে হাসপাতালে ঠাঁই নেই। এজন্য মানুষের পাশে দাঁড়াতে আমরা ড্যাব বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে।

ড্যাব মহাসচিব আবদুস সালাম বলেন, ডেঙ্গু এখন সারা দেশে মহামারি আকার ধারণ করেছে। কিন্তু সরকার প্রকৃতপক্ষে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ডেঙ্গু রোগ সামাল দেয়া যাচ্ছে না। অবিলম্বে ডেঙ্গুকে মহামারি ও জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা করা হোক। তাহলে সবাই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নিবে। সবাইকে সচেতন হতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই।

কেএইচ/এএইচ/এমকেএইচ

আরও পড়ুন