বিএনপিকে রাজনীতি থেকে মাইনাসের আহ্বান ইনুর
বিএনপিকে সাম্প্রদায়িক জঙ্গির তোষক রাজনৈতিক দল হিসেবে উল্লেখ করে দেশের অর্থনীতির সমৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে দলটিকে মাইনাসের আহ্বান জানিয়েছেন মহাজোটের অন্যতম শরিক, জাসদ সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। তিনি বলেন, এ ধরনের শক্তিকে ক্রেন দিয়ে তুলে বিরোধীদলে বসানো গণতন্ত্রের জন্য মঙ্গলজনক নয়।
সোমবার (২৪ জুন) জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। ইনু বলেন, অর্থনীতির সমৃদ্ধির জন্য রাজনৈতিক শান্তি দরকার। শেখ হাসিনা সরকারকে অনেক মূল্য দিয়ে তা অর্জন করতে হয়েছে। তাই শান্তির শত্রু অশান্তির হোতাদের কোনো ছাড় নেই, দমন এদের করতেই হবে। তাই আগুন সন্ত্রাস দমন প্রতিহিংসা না, জঙ্গি সন্ত্রাস দমন প্রতিহিংসা না, অন্তর্ঘাত দমন, খুনিদের দমন, যুদ্ধাপরাধীদের দমন প্রতিহিংসা না, দুর্নীতির বিচারও প্রতিহিংসা না, এসবের ছাড় দেওয়া ঠিক হবে না।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক স্পেস দেওয়া একটা কথা ফ্যাসানে পরিণত হয়েছে। কিন্তু গণতন্ত্রের সুযোগ নিয়ে যারা গণতন্ত্রের পিঠে ছোবল মারে, তাদের জন্য মায়াকান্না গণতন্ত্রকে ধ্বংসই করে। এখানে এমনও রাজনৈতিক শক্তি বর্তমান যারা সামরিক শাসনামলে রাজনৈতিক বিষবৃক্ষ হিসেবে কাজ করে। বিএনপি হচ্ছে সেই দল, যারা জামায়াতের দিকে তাকায়, তারা সকল সাম্প্রদায়িক শক্তি ও জঙ্গি সন্ত্রাসবাদের ছাতা, তারা নিজেরাই সাম্পদায়িক দল।
সাবেক এই তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি সেই দল যারা সংবিধানের চার নীতি মানে না, বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা মানে না, স্বাধীনতার চার নীতি মানে না। বিএনপি কিন্তু সেই বিরোধী দল, যারা ১৫ আগস্টকে খালেদা জিয়ার জন্মদিন হিসেবে পালন করে। তারা জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে উল্লেখ করে। উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রাখতে প্রধানমন্ত্রীকে দল দেখে মুখ না দেখে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বাজেটের বিষয়ে হাসানুল হক ইনু বলেন, বড় বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা শেখ হাসিনা সরকার ও প্রশাসন অর্জন করেছে, যার জন্য সরকার জিপিএ ফাইভ ও গোল্ডেন জিপিএ ফাইভও পাবেন। সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপে বাজেটের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হতে পারে। সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করতে হবে, ঋণ খেলাপী কমিয়ে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রয়োজন, দুর্নীতি ও অপচয়ের রাষ্ট্রীয় খাত থেকে এ বাজেটকে রক্ষা করতে হবে।
জিডিপি ও করের অনুপাত ১০ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে উন্নীত করার দাবি জানান ইনু। শিক্ষা খাতকে ঢেলে সাজিয়ে বরাদ্দ বাড়ানো এবং স্বাস্থ্য খাতে আরও বেশি নজর দিতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ব্যাংকিং খাতের অনিয়মের বিষয়ে ইনু বলেন, ব্যাংকিং খাতে সংস্কার করার প্রয়োজন, ব্যাংকের আইন সংস্কার, ব্যাংকের সংখ্যা কমিয়ে ব্যাংকগুলোকে একীভূত করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া দরকার। বড় বড় ঋণ খেলাপীরা আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে বড় বড় ঋণ আটকে রাখে, ৩৭ হাজার কোটি টাকা তারা এভাবে আটকে রেখেছে।
তিনি বলেন, আইনে যা আছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সেভাবে আইন প্রয়োগ করুক, স্বাধীনতা প্রয়োগ করুক। সেখানে অর্থ মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ না করাই ভালো। ব্যাংকিং খাতে যে বিষফোঁড়া তা ট্যাকল করার ক্ষমতা কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রয়েছে। তাদের সে ক্ষমতা প্রয়োগ করার অধিকার দেওয়া হোক। যতদিন ব্যাংক কমিশন না হচ্ছে ততদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়ায় আহ্বান জানান তিনি।
এইচএস/আরএস/এমএস