তথ্যমন্ত্রী রমজানেও মিথ্যা পরিত্যাগ করতে পারেনি : রিজভী
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ রোজা-রমজানের দিনেও তার স্বভাবগত মিথ্যা পরিত্যাগ করতে পারেননি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
সোমবার (২৭ মে) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘সরকার খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করে আসছে, আর বিএনপি এ নিয়ে অপরাজনীতি করে চলছে। বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক যেসব সমস্যার কথা বলা হচ্ছে, সেগুলো পুরাতন সমস্যা। তার হাঁটুতে অস্ত্রোপচার হয়েছে আজ থেকে প্রায় ১৫ বছর আগে। এই সমস্যাগুলো মাঝে মধ্যে বাড়ে-কমে। সুতরাং এগুলো নতুন কোনো সমস্যা না। এছাড়া কদিন আগে তার জিহ্বা কামড় লেগে একটু ঘা হয়েছিল, তিনি স্বাভাবিকভাবে খেতে পারছিলেন না। এমন মাঝে মধ্যে আমাদেরও হয়। তার সেই সমস্যাও কেটে গেছে।’ তথ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্য উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘তথ্যমন্ত্রীসহ ক্ষমতাসীনরা বেগম জিয়ার জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন, তামাশা করছেন। তথ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য একটি বেপরোয়া, বেআইনি, মধ্যযুগীয়, জ্ঞান-বিজ্ঞানের আলো-বাতাসহীন কাণ্ডজ্ঞানহীন হবুচন্দ্র রাজার গবুচন্দ্র মন্ত্রীর মতো বক্তব্য। সাবেক চারবারের একজন প্রধানমন্ত্রীর প্রতি নিষ্ঠুরভাবে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা।’
তিনি বলেন, ‘মিডনাইট ভোটের সরকারের গবুচন্দ্র মন্ত্রীদের কাছ থেকে এরকম বক্তব্য আসবে এটাই স্বাভাবিক। তথ্যমন্ত্রীসহ মন্ত্রীদের বক্তব্যে মনে হচ্ছে- প্রচ্ছন্নভাবে তারা বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে বিনা চিকিৎসায় হত্যার উদ্দেশ্যে নতুন ষড়যন্ত্র করছেন। বিএসএমএমইউ-তে তো চিকিৎসার পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতিই নেই। সেখানে সর্বোচ্চ চিকিৎসা হলে আওয়ামী লীগের নেতা ও মন্ত্রীদের চিকিৎসা দিতে কেন সিঙ্গাপুর নেয়া হয়? তারা কারাবন্দি থাকাবস্থায় স্কয়ার ও ল্যাবএইডে চিকিৎসা দেয়া হয়েছিল কেন?’
রিজভী বলেন, ‘আমি তথ্যমন্ত্রীকে বলবো- আপনি রোজা-রমজানের দিনেও স্বভাবগত মিথ্যাচার পরিত্যাগ করতে পারেননি। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সর্বোচ্চ কেন, ন্যূনতম চিকিৎসা সেবাটুকুও পাচ্ছেন না। যেহেতু প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েই দেশনেত্রীকে আজীবন জেলে রাখার কথা বলেছেন তাই বেগম জিয়া তাদের কাছ থেকে সুচিকিৎসা কখনোই পাবেন না।’
‘খালেদা জিয়া কারাগারে যে সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন এশিয়া মহাদেশের কেউ এমন সুযোগ পেয়েছে বলে আমার জানা নেই।’ -তথ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য হলো- এশিয়া বা উপমহাদেশের কোন দেশে কোথায় এমন আইন-আদালতের ওপর ঘোষণা দিয়ে কর্তৃত্ব স্থাপন করে চারবারের প্রধানমন্ত্রীকে মিথ্যা সাজানো মামলায় জেলে রাখা হয়েছে হত্যার উদ্দেশ্যে কি-না তা জনগণ জানতে চায়। তবে মনে রাখতে হবে আপনাদের ভাগ্যেও এমন সুযোগ-সুবিধা আসতে পারে, তখন হয়তো বুঝতে পারবেন- এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের কারাগারের অবস্থা কী রকম।’
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ তাদের পুরানো ঐতিহ্যের মাধ্যমে দেশ থেকে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেয়ায় মানুষ তাদের থেকে অনেক আগেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাই বেগম জিয়া সরকারের প্রতিহিংসায় কারাবন্দি থাকলেও এখনও তিনি দেশের মানুষের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী। তার আপোষহীন মনোভাব সর্বজন শ্রদ্ধেয়। তাইতো আওয়ামী নেতাদের এত জ্বালা। তাই বেগম খালেদা জিয়াকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে নতুন ষড়যন্ত্র শুরু করেছে সরকার।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তথ্যমন্ত্রী ও সেতুমন্ত্রীর বক্তব্য তারই বহিঃপ্রকাশ। আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে আবারও আহ্বান জানাচ্ছি- ঈদের আগেই বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন, জামিনে বাধা প্রদান করবেন না। তাকে তার পছন্দ অনুযায়ী বিশষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ দিতে হবে।’
কেএইচ/এমবিআর/এমকেএইচ