আন্তর্জাতিক গবেষণায় স্বৈরাচারী বাংলাদেশ : নজরুল
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো গবেষণায় দেখেছে, বিশ্বের স্বৈরাচারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ একটি। যে দেশ উন্নয়নের কথা বলে, সেই দেশের রাজধানীকে চিহ্নিত করা হয়েছে দুনিয়ার সবচেয়ে বেশি দূষিত শহর হিসেবে।
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কর্মজীবী দল আয়োজিত বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আলোচনা সভায় তিনি এসব বলেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি দেশটাকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য। যে দেশে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য থাকবে না, আমার মা-বোনরা কারো দ্বারা লাঞ্ছিত হবে না।, সে ধরনের একটি দেশ গড়ার জন্য আমরা লড়াই করেছি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে যখন ফ্যাসিবাদ কায়েম হয়, স্বৈরাচার কায়েম হয়- এগুলো আমার কথা না। আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো গবেষণায় দেখেছে, বিশ্বে যতগুলো স্বৈরাচারী দেশ আছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ একটি। যে দেশ উন্নয়নের কথা বলে, সেই দেশের রাজধানীকে চিহ্নিত করা হয়েছে দুনিয়ার সবচেয়ে বেশি দূষিত শহর বলে।
নজরুল ইসলাম বলেন, আজকে আবার আওয়ামী লীগ সমাজতন্ত্রকে সংবিধানে পুনর্বহাল করেছে। যদি তাই হয় তাহলে তো দেশে সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি প্রচলিত হওয়ার কথা। কিন্তু আসলে আমরা কী করছি? দেশের সবাই জানে, এটা একটা মুক্তবাজারের দেশ। মুক্তবাজার অর্থনীতিকে আওয়ামী লীগ তাদের দলীয় সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেছে। সংবাদ সম্মেলন করে জাতিকে জানিয়েছে যে, তারা মুক্তবাজার অর্থনীতিতে বিশ্বাস করে। তারা বিশ্বাস করেন মুক্তবাজার অর্থনীতিতে আর সংবিধানে লেখা সমাজতন্ত্র- এই যে দ্বিমুখী নীতি, এটা জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা। এটা গ্রহণযোগ্য না।
শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে কেরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, আমার বোন নুসরাত যখন লাঞ্চিত হয় এবং লাঞ্চনা সইতে না পেরে নিজেকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়, তখন তো মানবাধিকার ও মহিলা সংগঠনগুলোকে সোচ্চার হতে দেখি না। আজকে আমরা শুনি নুসরাতকে যারা লাঞ্ছিত করেছে তাদের মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা আছে। তাদের এক নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের বেশ সখ্য। আমরা দাবি করব, নুসরাতকে লাঞ্ছনাকারী সে যেই হোক না কেন, তাকে বিচারের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে।
কিন্তু হবে কি না, তা জানি না।
খালেদা জিয়াকে নিরপরাধ উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, খালেদা জিয়া কোনো অপরাধ করেননি। তিনি কোনো দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তার ঘনিষ্ঠ সহকর্মী হিসেবে এ কথা জোর দিয়ে বলতে পারি। আজকে আইন বিভাগ পর্যন্ত সরকার তাদের অধীনস্থ করে ফেলেছে। এটাই ফ্যাসিবাদের চরিত্র।
তিনি বলেন, আজকে আমরা রাজনীতি করব বিএনপির, আমাদের প্রতিপক্ষ হবে আওয়ামী লীগ। কিন্তু আমার প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগ না। আমার প্রতিপক্ষ হলো পুলিশ-র্যাব-বিজিবি। আমি মিছিল-মিটিং করতে গেলে আমার সামনে আওয়ামী লীগরা দাঁড়ায় না। এই যে রাষ্ট্রকে বিরোধী রাজনীতির প্রতিপক্ষ বানানো- এটাকেই বলে ফ্যাসিবাদ, এটাই হলো স্বৈরাচার।
আয়োজক সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সালাউদ্দীন খানের সভাপতিত্বে এবং প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক মো. আলতাফ হোসেন সরদারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।
কেএইচ/এমএসএইচ/এমকেএইচ