নেতাকর্মীদের নজরুলের ভর্ৎসনা
দলীয় কর্মসূচিতে কাঙ্ক্ষিত উপস্থিতি না থাকায় নেতাকর্মীদের ভর্ৎসনা করলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
আজ (শুক্রবার) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘জিয়া আদর্শ একাডেমি’ আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আপনারা তো মুখে আন্দোলনের কথা বলেন, ঘরের মধ্যে ফাটায় দিচ্ছেন, কিন্তু যখন গণঅনশন হয়, মানববন্ধন হয় তখন লোক হয় না। যদি মানববন্ধনে ৫০ হাজার লোক হয় তাহলে বড় কর্মসূচি দেয়ার চিন্তা করতে পারি, যদি এক লাখ হয় তাহলে আরও বড় কর্মসূচি দেয়ার চিন্তা করতে পারি। আমরা তো তারেক রহমানের সাথে কথা বলেই সিদ্ধান্ত নেই। কিন্তু আপনাদের উপস্থিতি তো থাকে না। তখন তো সাহস পাই না, আপনারা মুখে আন্দোলনের কথা বলছেন কিন্তু রাজপথে তো নেই। মুখে আন্দোলনের কথা বাদ দেন, আপনারা রাজপথে আসেন।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলসহ সকল কারাবন্দি নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
দলীয় নেতাকর্মীরা ঘরের মধ্যে যে রকম জ্বালাময়ী বক্তব্য দেন তা বাইরে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে নজরুল বলেন, ‘আমি স্পষ্ট বলে দিতে চাই, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্যে যেকোনো আন্দোলনের প্রতি আমারও আগ্রহ আছে। আপনারা মুখে যেমন বলেন কাজে দয়া করে তেমন দেখান, দেখবেন অনেক বড় আন্দোলন গড়ে তোলার ব্যবস্থা হবে। সেটা না করা পর্যন্ত আন্দোলন সংগ্রাম জোরদার হবে না।’
বিএনপির নীতি নির্ধারণী ফোরামের এই নেতা বলেন, ‘২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে, ১৯ মার্চ জয়দেবপুরে আর্মির অস্ত্র কেড়ে নিয়ে আমরা আর্মির সঙ্গে লড়াই করেছিলাম। ঢাকায় মিছিল হয়েছিল ‘জয়দেবপুরের পথ ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’, আজকে ৭২ বছর বয়সে আমাকেই সেই কাজ করতে বলেন? না আপনাদেরও দায়িত্ব আছে। তারপরও বলছি, আছি আপনাদের সাথে। শুধু সাথে না, আপনাদের সামনেই থাকবো। চলেন আমরা একসাথে নামি।’
নজরুল আরও বলেন, ‘দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে হবে। তিনি দারুণ অসুস্থ। তাকে যদি মুক্ত আলো বাতাসে আনা না যায়, যদি তার সঠিক চিকিৎসা করা না যায়, তাকে আমরা হারাবো। আর তাকে হারালে আপনার আমার কার কত দাম সেটা আমাদের জানা আছে। তাই তার আন্দোলনের সঙ্গী হাবিব উন নবী খান সোহেলের মতো যারা বন্দি আছেন, তাদের মুক্ত করার জন্য যে লড়াই প্রয়োজন আসুন সেই লড়াইয়ের প্রস্তুতি নেই।
বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই এমন মন্তব্য করে সরকার বিরোধী এই নেতা বলেন, ‘এই সরকারকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা স্বৈরাচারী বলে চিহ্নিত করেছে। আমরা যে শহরে বাস করি সেটা দুনিয়ায় সবচেয়ে বেশি দূষিত শহর। অথচ সরকার দাবি করে উন্নয়ন হচ্ছে।’
বিশ্বের কোনো স্বৈরাচারী সরকার জনগণের আন্দোলনের মধ্যে টিকে থাকতে পারেনি উল্লেখ করে নজরুল বলেন, ‘ফিলিপিন্সে মার্কোসের দমন নীতির বিরুদ্ধে জনগণ যখন রাজপথে ট্যাংকের সামনে শুয়ে পড়েছিল তখনই মার্কোসের পতন হয়েছিল। ওই পরিমাণ সাহস কি আপনাদের আছে? মুখে আছে, যেদিন কাজে দেখাতে পারবেন, সেদিন এই সরকারের পতন হবে।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আজম খানের সভাপতিত্ব প্রতিবাদ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাবেক স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, কৃষক দল নেতা মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, এম জাহাঙ্গীর আলম, মৎসজীবী দল নেতা ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
কেএইচ/এনএফ/এমকেএইচ