পাহারায় এরশাদ!
ঘন ঘন যেন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন না করেন সেজন্য ‘পাহারায়’ রয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা এইচএম এরশাদ।
শনিবার (৬ এপ্রিল) রাজধানীর বারিধারায় প্রেসিডেন্ট পার্কের সামনে পাহারায় বসেন জাপার নেতাকর্মীরা।
নেতাকর্মীরা জানান, পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ গত ২২ মার্চ গভীর রাতে কো-চেয়ারম্যান পদ থেকে জিএম কাদেরকে অব্যাহতি দেন। দল চালাতে ব্যর্থ, সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় না করাসহ বেশকিছু অভিযোগ ওঠে জিএম কাদেরের বিরুদ্ধে। কো-চেয়ারম্যান পদ হারানোর পরদিন বিরোধী দলের উপনেতা থেকেও বাদ দেয়া হয় জিএম কাদেরকে। এতে পার্টির সিনিয়র নেতারা খুশি হলেও রংপুর এলাকার নেতাকর্মীদের মাঝে অসন্তোষ দেখা দেয়।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) রাতে জিএম কাদেরকে পুনরায় কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেয়া হয়। শনিবার (৬ এপ্রিল) সকালে অপর এক সাংগঠনিক নির্দেশে এরশাদ তার অবর্তমানে পার্টির চেয়ারম্যান হবেন জিএম কাদের- এমন নির্দেশনা গণমাধ্যমে পাঠান।
এরশাদের সর্বশেষ এ নির্দেশনা যাতে আর কেউ পরিবর্তন করতে না পারে সেজন্য শতাধিক নেতাকর্মী পাহারায় বসেছেন বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্ক বাসভবনের সামনে। এমন পরিস্থিতিতে জাপার সিনিয়র নেতারাও এরশাদের বাসভবন এড়িয়ে চলছেন বলে জানা গেছে।
রংপুর মহানগর শাখা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এসএম ইয়াসির বলেন, বৃহত্তর রংপুরের মাটি ও মানুষ পল্লীবন্ধু এরশাদের প্রাণের স্পন্দন। আমরা চাই জাতীয় পার্টি বেঁচে থাকুক। কিন্তু দলের ভেতর একটি কুচক্রী মহল জিএম কাদেরসহ পার্টির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। আমরা এরশাদকে জিম্মি করিনি। ষড়যন্ত্রকারীরা এরশাদকে ভুল বুঝিয়ে পার্টি ধ্বংসের অপচেষ্টা করছেন। এরশাদই আমাদের তার বাসভবনে ডেকেছিলেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা জাতীয় পার্টির সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা বলেন, জাতীয় পার্টি সব সময় এরশাদের সিদ্ধান্তে চলে। আমরা তার সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তবে সম্প্রতি জাপার নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন মহলে অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা থাকলেও পার্টির অধিকাংশ নেতাকর্মী চেয়ারম্যানের যে কোনো সিদ্ধান্তের প্রতি সম্পূর্ণ আস্থাশীল। এতে সমালোচনার কিছু আছে বলে মনে করি না।
এ বিষয়ে পার্টির যুগ্ম-মহাসচিব হাসিবুল ইসলাম জয় বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে ঘাপটি মেরে থাকা কুচক্রীরা পার্টিকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন। ভেবে দেখতে হবে এদের উৎপত্তি কোথা থেকে। যারা ষড়যন্ত্র করছেন তারা একসময় বিএনপি থেকে জাপায় এসেছেন। তাদের মাঝে কেউ কেউ এরশাদের বুকে ছুরিকাঘাত করে চলে গেলেও আবার ফিরে এসেছেন।
সরকারের কাছে অনুরোধ, সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিয়ে যেন জাপার ভাঙার মিশনে কেউ লিপ্ত না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে। কারণ অনেকে জাপাকে ভেঙে বিএনপি-জামায়াত জোটের মিশন বাস্তবায়ন করতে চায়।
এইউএ/এএইচ/এমএস