নির্বাচনের প্রতি অনীহা গণতন্ত্রের জন্য অশনি সংকেত
সাম্প্রতিক অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্প ধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচনের প্রতি অনীহা গণতন্ত্রের জন্য একটি অশনি সংকেত।
শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ জনদল আয়োজিত মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এ আহ্বান জানান।
বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, এক তৃতীয়াংশ লোক মাত্রই নির্বাচনে ভোট দিয়েছে। এটা লজ্জার কথা এবং ভয়ের কথা। নির্বাচনের প্রতি অনীহা গণতন্ত্রের জন্য একটি অশনি সংকেত। এর কারণ খুঁজে বের করতে হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন বা রাজনীতিবিদরা দায়ী কি-না, বিরোধী দলকে বিশ্বাস করতে হবে। তাদের রাজনীতির সুযোগ দিতে হবে। তবে বিরোধী দলকেও উশৃঙ্খলতা পরিহার করতে হবে।
বিরোধী দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, আপনাদের আমি আহ্বান জানাই, আইনের পথে আসেন। গণতন্ত্রের পথে আসেন। আমাদের খেয়াল রাখতে হবে নারীদের উন্নয়নে আরও বেশি করে সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। তাদের আস্থা যাতে না হারায়, তাদের বিরুদ্ধে জুলুম নির্যাতন করা যাবে না। আগামী পাঁচ বছর আওয়ামী লীগের সরকার আছে তারা এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য প্রচেষ্টা গ্রহণ করবে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের আহ্বান জানান বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান।
তিনি বলেন, দুর্নীতি বন্ধ করা গেলে দুই ভাগ জিডিপি বৃদ্ধি করা যেত দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে কোনো রকম আপস নয়। শিশু ধর্ষণের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ছাড়া আর কিছু নয়। কিছু কিছু সেক্টর আছে যেখানে উন্নয়ন না হলে স্বাধীনতা অর্থহীন হবে। সামাজিক ন্যায়বিচার আইনের শাসন নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং শিশু ধর্ষণ বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং গার্মেন্টস শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি কৃষকের এবং শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসিনাকে দূরদর্শী নেত্রী আখ্যায়িত করে বি. চৌধুরী বলেন, তিনি (শেখ হাসিনা) রাজনীতি বোঝেন এবং সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন। ঘৃণা করে কেউ বড় হয় না বা শ্রদ্ধা করে কেউ ছোট হয় না। দায়িত্বের রাজনীতি, শ্রদ্ধার রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
ছাত্রদেরকে জুলুম-অত্যাচার করা যাবে না জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের লেখাপড়ার স্ট্যান্ডার্ড অত্যন্ত নিচে নেমে গেছে।
ডাকসু নির্বাচনের কথা স্মরণ করে বিকল্পধারার চেয়ারম্যান বলেন, এই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
‘দেশে অনেক উন্নয়ন হয়েছে, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হয়েছে। এ জন্য আমি শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাই। মধ্যবিত্তের স্বপ্নের উপর নির্ভর করে বাংলাদেশের বুর্জোয়া রাজনীতি চলছে। শেয়ার মার্কেট নিয়ে ছিনিমিনি বন্ধ করতে হবে। ব্যাংকিং খাতে অত্যন্ত দুর্বল, দুর্নীতি প্রকট। এটা উন্নয়নের বড় বাধা দুর্নীতি বন্ধ করা গেলে জিডিপি এক থেকে দুই শতাংশ বেড়ে যেত। দুর্নীতি সর্বগ্রাসী ব্যাধি এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ নিতে হবে এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করতে হবে দুর্নীতির সঙ্গে কোনো আপস নয়’ বলে যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশ জনদলের সভাপতি মাহবুবুর রহমান জয় চৌধুরী সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএলডিপির চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন আল আজাদ, বিকল্পধারার প্রেসিডিয়াম সদস্য মজহারুল হক শাহ চৌধুরী, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, জনদলের মহাসচিব সেলিম আহমেদ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদী প্রমুখ।
এইউএ/জেএইচ/পিআর