কখনও অন্যায়ের কাছে ন্যায়ের পরাজয় হতে পারে না : ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বারবার বিএনপিকে ভেঙে ফেলতে চেয়েছে, নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছে কিন্তু সমস্ত বাঁধা-বিপত্তি অতিক্রম করে বিএনপি ঠিকই উঠে দাঁড়িয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, কখনও অন্যায়ের কাছে ন্যায়ের পরাজয় হতে পারে না। যেটা হয় সেটা সাময়িক হতে পারে। অবশ্যই ন্যায়ের জয় হবেই, সত্যের জয় হবেই। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে, গণতন্ত্রকে মুক্ত করে, বিএনপি আবার উঠে দাঁড়াতে সক্ষম হবে- এটা আমরা মনে প্রাণে বিশ্বাস করি।’
বুধবার (৩ এপ্রিল) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
‘নব্বইয়ের ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্য’ এর উদ্যোগে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে দেশনেত্রীর মুক্তিই আমাদের কাছে প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য। সেই মুক্তির জন্য আমাদের সংগঠিত হয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এগোতে হবে। তিনি মুক্ত হলে গণতন্ত্রের মুক্তি অবশ্যম্ভাবী হবে। এজন্য জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তীব্রভাবে আমাদের আন্দোলনে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মহোদয় অত্যন্ত সঠিকভাবেই আমাদের অঙ্গ সংগঠনগুলোকে পুনর্গঠিত করবার কাজ শুরু করেছেন, সক্রিয় করবার কাজ শুরু করেছেন, বিএনপির সাংগঠনিক জেলাগুলোকে সক্রিয় করবার কাজ শুরু করেছেন। আমার বিশ্বাস যে, অতি অল্প সময়ের মধ্যেই আমাদের এই সংগঠন আবার তার নিজের পায়ে দাঁড়াতে সক্ষম হবেই। অনেক ঝড় গেছে, অনেক ঝঞ্ঝা গেছে, অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে তার মধ্যেও বিএনপি কিন্তু উঠে দাঁড়িয়েছে সবসময়।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘অনেকে হতাশায় ভোগেন। হতাশায় ভুগলে বিজয় অর্জন সম্ভব নয়। বিএনপি সেই দল, যে দলের রাজনীতি হচ্ছে এদেশের জনগণের রাজনীতি। এদেশের মানুষ হচ্ছে বিএনপির সবচেয়ে বড় শক্তি। এই শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে।’
সরকারের কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন ‘আজকে দেশে যে সঙ্কট, সেটা শুধু বিএনপির সঙ্কট নয়। এই সঙ্কট এতো গভীর সঙ্কট যে, এটা জাতির সঙ্কট, এটা রাষ্ট্রের সঙ্কট। কারণ এই রাষ্ট্র থেকে চিরতরে গণতন্ত্রকে বিসর্জন দেয়ার আয়োজন প্রায় সম্পন্ন হয়ে গেছে। এটাকে একটা একদলীয় শাসন ব্যবস্থায় নিয়ে যাওয়ার জন্য সমস্ত চক্রান্ত প্রায় সম্পন্ন, আয়োজন সম্পন্ন।’
দেশের মানুষ পুরোপুরি একটা আবদ্ধ কারাগারের মধ্যে রয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের মিডিয়া এখন নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া। আপনারা লক্ষ্য করে দেখবেন যে, এখানে বিরোধীদলের খবর এখন সবচেয়ে কম ছাপা হয়- তৃতীয় কিংবা চতুর্থ পৃষ্ঠায়। ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় কয়েক সেকেন্ড খবর দেয়া হয়। কারণটা কী? মিডিয়া হচ্ছে একটা বড় মাধ্যম, যে মাধ্যমে জনগণের কাছে পৌঁছানো যায়।’
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের নেতৃবৃন্দের সকলের পবিত্র দায়িত্ব হচ্ছে- আজকে এই ষড়যন্ত্রকে আমাদের রুঁখে দিতে হবে। আমাদের যে গণতন্ত্র, সেই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে নামতে হবে।’
তিনি আর বলেন, ‘এই কথাটার ওপর বেশি জোর দিতে চাই- জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের এই আন্দোলন করতে হবে। গণবিচ্ছিন্ন হয়ে কখনও কোনো আন্দোলন সফল হয় না, হবে না। সেজন্য জনগণকে সম্পৃক্ত করবার জন্যে আমাদের সমস্ত কৌশল নিতে হবে।’
বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় সাবেক ছাত্র নেতা শামসুজ্জামান দুদু, আসাদুজ্জামান রিপন, খায়রুল কবির খোকন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, সাইফুদ্দিন আহমেদ মনি, খন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান, শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আব্দুল আউয়াল খান, শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, ওমর ফারুক শাফিন, ছাত্রদলের সহ সভাপতি এজমল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কেএইচ/এমবিআর/পিআর