যারা নৌকায় নমিনেশন পাবে তারাই পাস : মোশাররফ
আসন্ন উপজেলা নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ৩০ ডিসেম্বর আমরা তথাকথিত নির্বাচন দেখেছি, এই নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এ কমিশন দিয়ে উপজেলা নির্বাচন কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তাই আমরা ইতোমধ্যে ঘোষণা করেছি, আমরা এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব না। এটা নির্বাচন হবে না, আবার আগের মতো প্রহসন হবে। এ নির্বাচনে যারা নৌকা মার্কায় নমিনেশন পাবে তারাই পাস। এখানে কোনো প্রতিযোগিতার সুযোগ নেই, কোনো বিরোধী দল নেই। অতএব এ নির্বাচন আরেকটি নাটক, আরেকটি প্রহসন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এক আলোচনা সভায় নির্বাচন কমিশনের কড়া সমালোচনা করে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপি পরাজিত হয়নি মন্তব্য করে মোশাররফ বলেন, আজকে আমাদের নেতাকর্মীরা হতাশ নয় হতভম্ব।
তিনি বলেন, দেশের গণতন্ত্র, মানুষের ভোটের অধিকার এবং খালেদা জিয়ার মুক্তি একেই সূত্রে গাঁথা। আজকে বেগম জিয়াকে কারাগারে নিঃশেষ করে দেয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। এর থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, প্রমাণ হয়েছে, যেখানে খালেদা জিয়া নেই, সেখানে গণতন্ত্র নেই। তাই আমাদের প্রথমে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রয়োজন।
সম্প্রতি দেশে দুটি অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, একটি হচ্ছে ২৯ ডিসেম্বর ভোট হয়েছে। আরেকটি হচ্ছে মন্ত্রিসভা গঠন। এই মন্ত্রিসভায় আওয়ামী লীগের ৩০ থেকে ৩৫ জন নেতা জায়গা পাননি, যারা ফিল্ডে ছিলেন। এই দুইটা অস্বাভাবিক ঘটনা। তাই এটা জাতীয়তাবাদী দলের জন্য একটা সুযোগ। জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়েছিলেন। এখন আমাদের সুযোগ এসেছে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জনগণকে সংগঠিত করার।
সভায় উপস্থিত বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার বলেন, বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর প্রধান থেকে শুরু করে বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য, যাদের মুখের দিকে মানুষ চেয়ে থাকেন। তিনি হয়ত বিবেক দিয়ে কথা বলবেন। কিন্তু আজকে দেখছি তারা কে কত মিথ্যা বলে প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করতে পারেন, সেই প্রতিযোগিতায় নেমেছেন।
তিনি বলেন, বিএনপিকে ঘুরে দাঁড়াতে হলে প্রথমে সমাজের খেটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে উচ্চপর্যায়ে একটা ঐক্য প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত বিএনপির আপন পর বুঝতে হবে, যারা এই নির্বাচনে ত্যাগ স্বীকার করেছে, যারা হামলা-মামলায় বিএনপিকে ছেড়ে যায়নি, তাদের মূল্যয়ন করতে হবে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের ফাঁসির দাবি জানিয়ে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ আবু জাফর আহমেদ বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে বিরোধিতাকারীদের যদি ফাঁসি জেল হয়ে থাকে, তাহলে ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে গণতন্ত্র হত্যার দায়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ যারা এই ষড়যন্ত্রকারী তাদের ফাঁসি হওয়া উচিত।
মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক লে. কর্নেল (অব.) জয়নাল আবেদীন, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
কেএইচ/জেডএ/এমএস