নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে মিয়ানমারও স্পর্ধা দেখাচ্ছে
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ অভিযোগ করে বলেছেন, ‘সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ক্রমাগত ব্যর্থ হচ্ছে। নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে মিয়ানমারও বাংলাদেশকে নিয়ে স্পর্ধা দেখাচ্ছে। বারবার মিয়ানমার সরকারিভাবে তাদের ওয়েবসাইটে সে দেশের মানচিত্রে সেন্ট মার্টিন দ্বীপকে নিজের অংশ হিসেবে দেখাচ্ছে। সে দেশের আরাকান রাজ্যের ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা অধিবাসীকে বাংলাদেশে আসতে বাধ্য করেছে। এখন সেখানকার সংখ্যালঘু উপজাতিদেরও তাড়িয়ে ঢুকিয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশে।’
শনিবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে চরমভাবে ব্যর্থ হচ্ছে জাতির ঘাড়ে জোর করে চেপে বসা আওয়ামী সরকার। প্রতিবাদ করা তো দূরে থাক, বরং মিয়ানমারের বাংলাদেশবিরোধী নীতির পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন শেখ হাসিনা। সারাবিশ্ব যখন রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে মিয়ানমারকে চাপ দিচ্ছিল সে সময় প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমারের পক্ষ নিয়ে বক্তব্য দিয়েছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ভূখণ্ডকে মিয়ানমার তাদের অংশ করে নিতে চাইবে আর আমরা কিছুই করব না! শুধু দূতকে ডেকে নিয়ে প্রতিবাদ করলেই সব শেষ হয়ে যায় না। এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের ওপর সরাসরি আঘাত। বিষয়টি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জোরালোভাবে উপস্থাপন করা হয়নি। তারা একবার না কয়েকবার একই ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে। গত বছরের অক্টোবর মাসেও মিয়ানমারের শ্রম, অভিবাসন, জনসংখ্যা মন্ত্রণালয়সহ সে দেশের অন্তত তিনটি ওয়েবসাইটের মানচিত্রে সেন্ট মার্টিন দ্বীপকে তাদের দেশের অংশ হিসেবে দেখানো হয়। তখনও এ জনবিচ্ছিন্ন সরকার কেবল নামকাওয়াস্তে প্রতিবাদ করে চুপ হয়ে যায়।’
রিজভী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সীমান্ত জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলায় কী চলছে? সেখানে বিজিবির গুলিতে নিহতদের পরিবারে যখন শোকে মাতম তখন নিহতদের নামে আবার মামলা দেয়া হয়েছে। হরিপুর উপজেলা বহরমপুর ও রুহিয়া গ্রামের ২৭২ জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে বিজিবি। একটি মামলার এজাহারে বিজিবির গুলিতে নিহত শিক্ষক নবাব আলী ও কৃষক সাদেক আলীর নামও রয়েছে। ভয়ে আতঙ্কে এখন পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে এলাকা। গ্রামবাসীর মধ্যে বিরাজ করছে অস্থিরতা। সীমান্ত পাহারা দেয়ার কাজ বিজিবির। কিন্তু তারা সীমান্ত পাহারা না দিয়ে বিএসএফ-এর মতোই বাংলাদেশিদের হত্যা করছে। প্রায়দিনই বিএসএফ বাংলাদেশিদের গুলি করে হত্যা করছে, অথচ বিজিবি এ বিষয়ে নির্বিকার।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রশ্ন হলো, সামান্য দুটি গরুর জন্য আমাদের সীমান্ত প্রহরায় নিয়োজিত বিজিবি গুলি করে চারজন নিরীহ গ্রামবাসীকে কি করে হত্যা করতে পারে? আবার কি করে মৃত ব্যক্তির নামে মামলা দিতে পারে? তারা তো জনগণের পরিশ্রমলব্ধ অর্থে বেতন ভাতা নিয়ে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে সীমান্ত পাহারা দিচ্ছে। রক্ষকরাই এখন ভক্ষক হয়ে উঠেছে।’
কেএইচ/এনডিএস/এমএস