কাউন্সিলর প্রার্থীদের সংখ্যা দেখে সিদ্ধান্ত নেবে আ.লীগ
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ১৮টি ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১৮টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে আওয়ামী লীগের সমর্থন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটির এ সংক্রান্ত সমন্বয় কমিটি। কাউন্সিলর প্রার্থীদের সংখ্যা দেখে দলীয় প্রার্থী নির্ধারণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ক্ষমতাসীন দলটি।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান এ সংক্রান্ত সমন্বয় কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বিগত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন সমন্বয়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি।
ফারুক খান জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সভায় কাউন্সিলর পদে প্রার্থীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আমরা আগে দেখবো কে কে সাবমিট (মনোনয়নপত্র জমা) করে। তারপর বিষয়টি নিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে রোববার কাউন্সিলর প্রার্থী নির্ধারণের বিষয়ে এ সংক্রান্ত সমন্বয় কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন সমন্বয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও উপ দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
সভা সম্পর্কে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুর রহমান বলেন, আমরা রোববার সভা করেছি। সোমবার ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে আওয়ামী লীগের সমর্থন প্রত্যাশী ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হবে। তারপর আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের মধ্যম সারির একজন নেতা বলেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের ওপর নির্ভর করছে কাউন্সিলর পদে প্রার্থীদের সমর্থন দেয়া হবে কি না। যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী বেশি হয় তবে আওয়ামী লীগ কাউন্সিলর পদে প্রার্থীদের সমর্থন দেবে। অংশগ্রহণকারী কম হলে কাউন্সিলর পদটি উন্মুক্ত রাখা হতে পারে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, জনপ্রিয়তা, সততা, নিষ্ঠা, দলীয় কমিটমেন্ট আমাদের যোগ্যতার মাপকাটিতে থাকবে। এইগুলো বিবেচনায় নিয়েই কাউন্সিলর পদে প্রার্থীদের সমর্থন দেয়া হবে।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলার নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের একটি প্যানেল তৈরির জন্য ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্যদের নিয়ে সভা করবে। সভায় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কমপক্ষে তিনজনের একটি প্যানেল সুপারিশ করবে। প্যানেলটি মহানগর, থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের যৌথ স্বাক্ষরে প্রার্থীদের যোগ্যতা, নেতৃত্বের গুণাবলী ও জনপ্রিয়তা ইত্যাদি বিষয় উল্লেখ করে কমপক্ষে তিনজনের সুপারিশ করার কথা ছিল। সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডের কাউন্সিলার নির্বাচনে (৩টি ওয়ার্ড নিয়ে একটি সংরক্ষিত নারী আসন) উল্লিখিত নিয়মাবলী প্রযোজ্য।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, ৩৬টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রায় শতাধিক প্রার্থী রয়েছে। মহানগরের থানা, ওয়ার্ড ইউনিটে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে জনপ্রিয় অনেকেই নির্বাচন করতে আগ্রহী। তবে দলীয় সিদ্ধান্ত এক্ষেত্রে অনুসরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, অনেকেই নির্বাচন করতে চান। কিন্তু আমরা যাচাই-বাছাই করে যাদেরকে সমর্থন দিলে দল সংগঠিত হবে, নির্বাচনে জয় নিশ্চিত করা যাবে তাদের নামই দলীয় সভানেত্রীর অফিসে জমা দিয়েছি। আমরা দলীয়ভাবে ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করতে আগ্রহীদের বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়েই সুপারিশ করেছি। এখন দলীয় সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হবে।
এদিকে আজ সোমবার আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে ৩৬টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে তিনজনের করে সাক্ষাৎকার নেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এইউএ/এমবিআর/এমএস