৩০ ডিসেম্বর বিএনপির ‘মহাবিপর্যয় দিবস’
ভোটের দিন ৩০ ডিসেম্বরকে ‘মহাবিপর্যয় দিবস’ হিসেবে বিএনপি পালন করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বুধবার (২৩ জানুয়ারি) সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে ‘বিএসআরএফ সংলাপ’ অনুষ্ঠানে তিনি মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) এ সংলাপের আয়োজন করে। সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী।
বিএনপি নেতারা ৩০ ডিসেম্বরকে ‘জাতীয় বিপর্যয় দিবস’ পালনের কথা বলেছেন- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি বলেছে জাতীয় বিপর্যয়- এটি আসলে বিএনপির মহাবিপর্যয়, সেটা তারা পালন করতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘একটি নির্বাচন করার আগে যে প্রস্তুতি দরকার, যে প্রক্রিয়াগুলো অনুসরণ করা দরকার...বিএনপির সবকিছু ছিল ত্রুটিযুক্ত, নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে ৮০০ ক্যান্ডিডেটকে নমিনেশন দেয়া আমাদের দেশে কখনও ঘটেনি।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম নির্বাচিত হয়েছেন তাকে অভিনন্দন, দলের মহাসচিব হিসেবে তিনি প্রচণ্ডভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। এটি বাস্তবতা। এটি বিএনপির জন্য মহাবিপর্যয়ের দিন বলা যেতে পারে। তারা সেভাবে পালন করতে পারে।’
বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে নাও অংশ নিতে পারে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে বিএনপি যেমন আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছিল। তারা যদি আবার উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে তবে ২০১৪ সালে অংশগ্রহণ না করার মতো মহাভুল করবে। আমি মনেকরি দলগতভাবে অংশগ্রহণ না করলেও বিএনপির অনেক নেতা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন।’
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ বেরিয়েছে যে, নির্বাচনের পরদিন নির্বাচনকে সুষ্ঠু বললেও সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের কোনো কোনো পর্যবেক্ষক এখন নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রথমত ইলেকশন অবজার্ভার যারা এসেছিলেন তারা একবাক্যে বলেছেন নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু, অবাধ ও উৎসব মুখর হয়েছে। এখন কার কোথা থেকে বক্তব্য নিয়ে কোন পত্রিকায় প্রতিবেদন ছাপিয়েছেন, তা অনুসন্ধানের বিষয়। তারা জনসম্মুখে যা বলেছে, সেটি হচ্ছে নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে।’
ডিএফপির মিডিয়া তালিকায় শীর্ষে অনেক অখ্যাত পত্রিকা দেখা যায়, এ বিষয়ে আপনি কোনো পদক্ষেপ নেবেন কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিষয়টি ইতোমধ্যে দেখেছি। এটা বাস্তবসম্মত করতে পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
ওয়েজবোর্ড ঘোষণার পর মুষ্টিমেয় কয়েকটি পত্রিকা তা বাস্তবায়ন করে, এ ক্ষেত্রে আপনি কী ভূমিকা রাখবেন- এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওয়েজবোর্ড যাতে বাস্তবায়ন হয় সেজন্য আমরা মালিক পক্ষের সঙ্গেও আলোচনায় বসব।’
আপনাদের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপি মহাসচিবকে সজ্জন ব্যক্তি বলেছেন- আপনি তাকে কী হিসেবে দেখছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম সজ্জন ব্যক্তি আমিও বলব, তবে তিনি খুব সুন্দর করে মিথ্য কথা বলতে পারেন।’
বিএনপি কেন নির্বাচনের সময় যথাযথ প্রচারণা চালায়নি বলে মনে করেন- এ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি গত ১০ বছরে সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রচণ্ড ভুলে ভরা। তারা আন্দোলনের ক্ষেত্রে জনগণের বিষয়-আশয় ফোকাস করেনি। তারা দলীয় স্বার্থকে ফোকাস করেছে। নির্বাচনের ক্ষেত্রে যে প্রস্তুতি দরকার ছিল তা তারা নেয়নি। তারা অলৌকিক কিছুর জন্য অপেক্ষা করছিল কি-না জানি না, এটি আপনারা অনুসন্ধান করে দেখতে পারেন।’
নিজের মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি নির্মূল ও সুশাসন প্রতিষ্ঠান বিষয়ে কী উদ্যোগ গ্রহণ করছেন জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমার মন্ত্রণালয় দুর্নীতিমুক্ত করার জন্য যা যা পদক্ষেপ নেয়া দরকার সেগুলো অবশ্যই গ্রহণ করব।’
সাংবাদিকদের জন্য এ সরকার আবাসিক প্লট দেয়ার পরিকল্পনা নেবে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনী ইশতেহারে বলা আছে সাংবাদিকদের আবাসনের ব্যবস্থা করা, সেক্ষেত্রে সাংবাদিকদের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণের চিন্তাভাবনা করছি। ফ্ল্যাট নির্মাণের পর কারা পাবে তা সাংবাদিক সমিতিগুলোই ঠিক করবে, কীভাবে সাংবাদিকরা তা পাবে। তবে নির্বাচনী ইশতেহারে থাকা আবাসনের বিষয়টি আমরা ইনশাআল্লাহ বাস্তবায়ন করব।’
বিএসআরএফের সভাপতি শ্যামল সরকারের সভাপতিত্বে সংলাপে ফোরামের যুগ্ম-সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
আরএমএম/এসএইচএস/এএইচ/এমএস