সরকারেই থাকতে চায় জাতীয় পার্টি
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের অংশীদার জাতীয় পার্টির (জাপা) অবস্থান কী হবে তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয় ভোটের ফল আসার পর থেকেই। সে বিষয়টি আজ খানিকটা খোলসা করলেন দলের মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা।
তিনি বলেন, আমরা মহাজোটগতভাবে নির্বাচন করেছি। তাই অধিকাংশ এমপিই সরকারের সাথে থাকতে চায়। এ ব্যাপারে মহাজোটের মহানেত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত নেবেন তাই চূড়ান্ত।
রাঙ্গার এমন মন্তব্যের পর সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চান, তাহলে কী সংসদে বিরোধী দল থাকবে না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জনগণই তো বিরোধী দল চায়নি। জনগণই উন্নয়নের স্বার্থে বড় ধরনের বিরোধী দল চায়নি। জনগণই মহাজোটকে ২৮৮ আসনে ভোট দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সংসদে জাতীয় পার্টির পার্লামেন্টারি পার্টির বৈঠক থেকে বেরিয়ে এমন মন্তব্য করেছেন জাপা মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা। এর আগে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী রুদ্ধদ্বার বৈঠক করে জাপা।
তিনি বলেন, ‘সভায় আমাদের সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ, কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদেরসহ নির্বাচিত সব সংসদ সদস্যরা ছিলেন। আমরা ২০০৮, ২০১৪ এবং এবারও মহাজোটগতভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। সুতরাং আমরা মহাজোটের সঙ্গেই আছি। আগামী দিনেও আমরা মহজোটের সঙ্গে থাকবো।’
‘২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি না থাকায় আমরা সরকার ও বিরোধী দলে ছিলাম। একসঙ্গে সরকারি ও বিরোধীদলে থাকাটা প্রধানমন্ত্রীর নতুন ফরমেট ছিল। দেশের উন্নয়নের জন্য আমরা সেভাবেই ছিলাম।’
রাঙ্গা বলেন, ‘মহাজোটের আসন সংখ্যা হচ্ছে ২৮৮টি। দেশের জনগণ চায় না যে সংসদে বড় ধরনের কোনো বিরোধীদল থাকুক। জনগণ সরকারের উপর সন্তুষ্ট। সে কারণেই তারা মহাজোটকে ভোট দিয়েছে। মহাজোটই আগামী ৫ বছর ক্ষমতায় থাকবে।’
জাতীয় পার্টি কী তাহলে সরকারে থাকছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘জাতীয় পার্টি মহাজোটে আছে। মহাজোটের মহানেত্রী আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আছেন, তিনি আমাদের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ, কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের সঙ্গে আলোচনা করে যে সিদ্ধান্ত নেবেন সেটাই হবে আমাদের সিদ্ধান্ত।’
‘তবে সরকারে বা বিরোধীদলে থাকতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আমাদের সংসদ সদস্যরা তাদের এলাকা ও দেশের উন্নয়নে মহাজোটের সঙ্গে সরকারেই থাকতে আগ্রহী।’
তাহলে সংসদে বিরোধী দলের নেতা কে হবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা আমাদের বিষয় নয়। এটা সংসদের নেতা ঠিক করবেন।
সংসদে জাতীয় পার্টির নেতা কে হবেন জানতে চাইলে পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেন, ‘সংসদে আমাদের পার্টির নেতা কে হবেন সেটা দলের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের মিটিংয়ে এ সিদ্ধান্ত হবে। সে মিটিংটা কবে হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটা আমরা পরে জানিয়ে দিবো।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে নির্বাচনের সময়ও ছিলাম, সরকারেও থাকবো। সেটাই আমরা চূড়ান্ত করেছি।’
গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে মহাজোট ২৮৮ আসনে জয়ী পেয়েছে। বিএনপি তথা তাদের জোট ঐক্যফ্রন্টের তরফ থেকে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তোলা হয়েছে। তবে তা সঠিক নয় দাবি করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
এমইউএইচ/এনএফ/জেএইচ/পিআর