ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

শেষটা দেখে ছাড়ব : ড. কামাল

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:১৮ পিএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ পুলিশসহ প্রশাসনের সবাইকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের দিন যে পরিস্থিতি হোক আমরা দেখব, শেষটা দেখে ছাড়ব।’

শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে বিদেশি সাংবাদিকদের উদ্দেশে এসব কথা বলেন ড. কামাল।

কেমন নির্বাচন আশা করছেন? এক বিদেশি সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচনী প্রচারণাকে উৎসব মনে করে। অথচ সহিংসতার মাধ্যমে সেই উৎসবকে আশঙ্কায় পরিণত করা হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত যে সহিংসতা দেখছি আমাদের মনে হচ্ছে সরকারদলীয় লোকজন কাউকে ভোট কেন্দ্রে যেতে দেবে না। পরিস্থিতি দেখে সহিংসতার আশঙ্কা করছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ পঞ্চদশ সংশোধনীর সুবিধা নিয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত করছে। শুধু তাই নয়; তারা বিরোধীদের সরিয়ে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে।’

এ ছাড়াও তিনি বিদেশি সাংবাদিকদের কাছে ষোড়শ সংশোধনী রায়ের পর প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ ও দেশত্যাগের বিষয়টি তুলে ধরেন।

ড. কামাল বলেন, ‘গত ৪ নভেম্বর থেকে ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের ওপর ১৫৭৪টি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ২৫ হাজার ৬৮৮ জন নেতাকর্মীর নামে এবং ১ লাখ ৫ হাজার ৬৭৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়াও পুলিশ ঐক্যফ্রন্টের ১৫ হাজার ৫৬৮ জনকে গ্রেফতার করেছে। গত কয়েকদিনে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের ওপর ২৮৩৩টি হামলা হয়েছে; যার মধ্যে ১২ হাজার ৯২৩ জন আহত হয়েছেন। মারা গেছেন ৯ জন।’

ড. কামাল আরও বলেন, ‘৩০০ আসনের মধ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ১৭টি আসনে কোনো প্রার্থী নেই। আমরা ৩০০ আসনেই প্রার্থী নির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশন ছাড়পত্র নেই। ছাড়পত্র পেয়ে অন্যান্য প্রার্থীরা যখন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেয় তখন ১৭টি আসনের ঐক্যফ্রন্টের একক প্রার্থীদের প্রার্থিতা স্থগিত করে দেন হাইকোর্ট।’

এত কিছুর পরও শেষ পরিণতি দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা বলেন ড. কামাল।

আপনাদের পার্টির অফিস রেখে কেন ডিআরইউতে সংবাদ সম্মেলন করলেন, আপনাদের (ঐক্যফ্রন্ট) মধ্যে ঐক্যের ঘাটতি আছে কি না- এ প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল বলেন, ‘এই হল নেয়াটা কোনোভাবে প্রমাণ করে না যে, আমাদের মধ্যে ঐক্য নেই। কোথাও বড় হল না পেয়ে এখানে এসেছি। আমাদের মধ্যে ঐক্য আরও সুসংহত হয়েছে।’

নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কি-না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা, আমরা অবশ্যই আশা করি, আমরা জিতব, সবাই এখন পরিবর্তন পরিবর্তন করে চিৎকার করছে। নির্বাচনে আমরাই জিতব যদি কোনো দুই নাম্বারি না হয়।’

সংবাদ সম্মেলনে তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তরুণ, তোমরা যারা প্রথমবার ভোট দেয়ার সুযোগ পেয়েছ, তারা সময়মতো ভোট দিতে যাবে। মনে রাখবে, যদি তুমি ভয় পাও তবেই তুমি শেষ, যদি তুমি ঘুরে দাঁড়াও, তবে তুমিই বাংলাদেশ।’

নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী, দেশের সব কেন্দ্রের প্রিসাইডিং এবং পোলিং অফিসারসহ ভোটগ্রহণের দায়িত্বে যারা আছেন তাদের উদ্দেশে ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক বলেন, ‘আপনার ওপর যে দায়িত্ব তা সততার সঙ্গে পালন করবেন। এটা করলে আপনাদের সম্মান বাড়বে। ভোটারের মুখের হাসির ওপরই নির্ভর করছে আপনার দায়িত্ব পালনে সফলতা ও তৃপ্তি। আপনি যদি কারও অধিকার হরণ করেন, তাহলে মনে রাখবেন অন্য কেউ আপনার মা, বাবা, স্ত্রী, সন্তানের অধিকার হরণ করছে। এটা করলে জনগণ, ইতিহাস ও আইন আপনাদের ক্ষমা করবে না।’

তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি, আনসার, ভিডিপি, কোস্টগার্ডসহ আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে জড়িতদের প্রতি অনুরোধ, আপনারা অতীতের মতো গৌরবময় ভূমিকা পালন করুন। বিশ্বব্যাপী শান্তিরক্ষায় আপনাদের ভূমিকা প্রশংসিত হচ্ছে। সে প্রশংসার ফলে সারা বিশ্বে আপনাদের সুযোগ বেড়েছে। কোনো অবস্থাতেই তা যাতে ব্যাহত না হয়, সে ব্যাপারে আপনারা সতর্ক থাকবেন।’

‘সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বলব, আপনারা কোনো দলের নন, জনগণের সেবক। জনগণ দেশের মালিক, দেশের মালিকদের তাদের ভোটের আনন্দ থেকে বঞ্চিত করবেন না। কোনো অন্যায় নির্দেশ মানবেন না,’ যোগ করেন ড. কামাল।

গণফোরামের সভাপতি বলেন, ‘প্রবাসী ভাই-বোনেরা এবং নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য যারা ভোট দিতে পারবেন না আপনারা আপনাদের স্বজনদের ফোন করে ভোট দিতে যেতে বলুন। তারা যদি ভোট দিতে পারেন সে আনন্দের অংশীদার আপনিও হবেন।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এআর/এনডিএস/জেআইএম

আরও পড়ুন