‘পরিস্থিতি ভালো থাকলে ভোট দিতে যাব’
‘ভোট দিতে যাব কি-না, তা এখনই বলতে পারছি না। নানা ধরনের কথা শুনতে পাচ্ছি। কারণ গন্ডগোল হলে ভোট দিতে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না। পরিস্থিতি ভালো থাকলে ভোট দিতে যাব।’
রোববার ভোটের দিনের ভাবনা নিয়ে জানতে চাইলে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার হাজী নগরের বাসিন্দা শামীমা আক্তার (৪০) এভাবে জবাব দেন। তিনি একজন গৃহিণী। স্থানীয় হাজী মোয়াজ্জেম আলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটার তিনি।
রোববার (৩০ ডিসেম্বর) দেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ৩০০ আসনের মধ্যে একটি ছাড়া বাকি সবগুলোতে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে।
নির্বাচনে প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ অন্যান্য সব দল অংশ নিচ্ছে। তবে নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে পারেনি বলে দাবি জানিয়ে আসছিল বিএনপি।
ভোটের দিন নিয়ে বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনেকের মধ্যেই এক ধরনের ভয় কাজ করছে। কোনো ধরনের সহিংস পরিস্থিতির কথা শুনলে তারা ভোট দিতে কেন্দ্রে যাবেন না। আবার কেউ কেউ জানিয়েছেন, তারা সকাল সকাল ভোট কেন্দ্রে যাবেন। তারা মনে করেন ভোটের দিনের পরিবেশ শান্তিপূর্ণই থাকবে।
সুজিত দত্ত, মাস্টার্স সম্পন্ন করে পৈত্রিক মিষ্টির ব্যবসা করছেন যাত্রাবাড়ী শনিরআখড়া গোবিন্দপুর বাজারে। তিনি স্থানীয় গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটার। ভোট দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় ভোট দেয়ার সিদ্ধান্ত এখনও নেইনি। আগামীকাল পরিস্থিতি কেমন থাকে সেটার ওপর ভিত্তি করে ভোট দেয়ার সিদ্ধান্ত নেব। ছোট ব্যবসা করি, ভোট দিতে গিয়ে তো কোনো ধরনের ঝুঁকি নিতে পারি না।’
গুলিস্তানের বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের কর্মচারী জালাল উদ্দিন হাওলাদার বলেন, ‘পরিস্থিতি খুব একটা সুবিধার মনে হচ্ছে না। আমি ভোট দিতে যাব না। আমার বাড়ি বরিশাল বাকেরগঞ্জের ফরিদপুরে। সেখানে আমার স্ত্রীকে ফোন করে জানিয়ে দিয়েছি বাড়ি বসে ভালমন্দ রান্না-বান্না করে খাও, ভোট দিতে যাওয়ার দরকার নেই।’
রাজধানীর স্বামীবাগের বাসিন্দা মো. নাছিম আহমেদ মিতালী বিদ্যাপীঠ ভোট কেন্দ্রের ভোটার। তিনি বলেন, ‘আমাদের এখানে ইভিএমে (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) ভোট হবে। আমি ইতোমধ্যে ইভিএমের মাধ্যমে পরীক্ষামূলক ভোটও দিয়েছি। আমি এখনকার বাসিন্দা, আগামীকাল সকাল সকাল ভোট দেব ইনশাআল্লাহ। ভোট নিয়ে কোনো আশঙ্কা আমি করছি না।’
উত্তর যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, ‘আমার ভোট দেয়ার ইচ্ছা আছে, বাকি আল্লাহর ইচ্ছা।’
এবার সারাদেশে মোট ভোটার ১০ কোটি ৩৮ লাখ ২৬ হাজার ৮২৩ জন। এরমধ্যে নারী ৫ কোটি ১৪ লাখ ৫৫ হাজার ২০৩ জন ও পুরুষ ভোটার ৫ কোটি ২৩ লাখ ৭১ হাজার ৬২০ জন। মোট ভোট কেন্দ্র থাকবে ৪০ হাজার ৫১টি।
২৯৯ আসনের মধ্যে ঢাকা-৬, ঢাকা-১৩, চট্টগ্রাম-৯, খুলনা-২, রংপুর-৩ ও সাতক্ষীরা-২ আসনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে। বাকি আসনে ভোটগ্রহণ হবে সনাতম পদ্ধতিতে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে।
আরএমএম/এনডিএস/জেআইএম