ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

‘বিএনপি-জামায়াতের অপকর্মে জরুরি অবস্থা জারি হয়’

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৪:১৬ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এসে দেশের মানুষের ওপর অন্যায়-অত্যাচার এবং শোষণ করতে থাকে। তাদের এই অপকর্মের কারণে দেশে জরুরি অবস্থা জারি হয়। ভুক্তভোগী হয় দেশের সর্বস্তরের মানুষ।

সোমবার কামরাঙ্গীরচর হাসপাতাল মাঠে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, ২০০৮ সালে নির্বাচনে দেশের জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে সংসদে দুই-তৃতীয়াংশ আসন দেয়, যার ফলে আমরা দেশ সেবার সুযোগ পায়। এরপর ২০১৪ সালে নির্বাচন ঠেকানোর নামে বিএনপি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করে। কিন্তু দেশের মানুষ তাদের প্রতিরোধ করে। নির্বাচনে আমরা জয়ী হয়ে সরকার গঠন করি। পরপর দুইবার একটানা সরকার গঠনের ফলে দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পেরেছি। মানুষের জীবনমান বদলেছে, উন্নত হচ্ছে। মানুষের ভাগ্য আমরা গড়ে তুলেছি।

তিনি বলেন, নিজের ভাগ্য গড়ার জন্য না, বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য গড়ে তোলার জন্যই আমার রাজনীতি। আগামী নির্বাচনে যদি আমরা জয়ী হয়ে আসতে পারি তাহলে দেশের কোনো মানুষ দরিদ্র থাকবে না। প্রত্যেকটা মানুষ সুন্দরভাবে জীবনযাপন করতে পারবে, আমরা সেই অনুযায়ী পরিকল্পনা নিয়েছি।

গত ১০ বছরে আমরা অনেক উন্নয়ন করেছি। পানির সমস্যা নাই, সাত-আট ঘণ্টা লোডশেডিং হয় না। বিদ্যুতের যেমন উৎপাদন বাড়িয়েছি-তেমন সঞ্চালন লাইন বাড়িয়েছি। এমনকি গ্রামীণ পর্যায়ে আমরা বিদ্যুৎ দিয়েছি। এ সময় কামরাঙ্গীরচর অবহেলিত ছিল বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

তিনি বলেন, এখানে জলাবদ্ধতা ছিল নিয়মিত ঘটনা। যোগাযোগব্যবস্থা অন্তত দুরহ ছিল। এখানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারিকরণ করেছি। স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করেছি। এখানে একটি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় করে দিব। এখন আর জলাবদ্ধতা নাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকার বস্তিবাসীদের চরম দুরবস্থা। তারা যেন অল্প কিছু দিয়ে ফ্ল্যাট বাড়িতে ভাড়া থাকতে পারে, সেই দিকে লক্ষ্য রেখে এই এলাকায় ১০ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। এই ফ্ল্যাটে যাতে দৈনিক, সাপ্তাহিক কিংবা মাসিক ভাড়া দিয়ে বস্তিবাসী থাকতে পারবে। এতে সব সুযোগ সুবিধা থাকবে। বস্তিতে মানবেতর জীবনযাপন না করে সেই পরিকল্পনা আমরা হাতে নিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, পুরো ঢাকা শহর ঘিরে আমরা একটা রিংরোড তৈরি করব। যে রিংরোড হবে সম্পূর্ণ এলিভেটেড, যাতে দ্রুতগামী যানবাহন চলতে পারে। যে রাস্তা থাকবে যাতে স্থানীয় মানুষ ব্যবহার করতে পারে।

তিনি বলেন, খাল আস্তে আস্তে বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। আমি মনে করি, প্রতিটা এলাকায় জলাধার থাকা উচিত। এই খাল বন্ধ হওয়া উচিত না। আমি মেয়র সাহেবকে বলব একটা প্রকল্প নিয়ে এই খালটা উদ্ধার করে এতে যাতে আরও ভালো পানি থাকে সেই ব্যবস্থা করা। আগুন লাগলে এই এলাকার মানুষ যাতে খালে পানি পায় সেই ব্যবস্থা আমরা করব। ময়লা পেলে এটা বন্ধ করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভূমি খেকোরা খালের অনেক অংশ দখল করে নিয়েছেন। আমি মনে করি কোনো জলাধার বন্ধ করা উচিত না। এর সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা, দুইপাড়ে বাধ দিয়ে পানি যাতে নিষ্কাশন হয় তার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। তাহলে পরিবেশ ভালো হবে, বাতাসও স্বাস্থ্যকর হবে। মানুষের বাসবাসও আরামদায়ক হবে। খাল দখলদারিত্ব বন্ধ করতে হবে।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা থাকা একান্তভাবে দরকার। কারণ শুধু ঢাকার এলিভেটেড রাস্তার কাজ শুরু হয়েছে। মেট্রোরেল নির্মাণ করেতেছি। বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। ভবিষ্যৎ কর্মসূচি হলো ঢাকায় আমরা পাতাল রেল নির্মাণ করব। যার সমীক্ষার কাজ ইতোমধ্যে আমরা করেছি। ঢাকা শহর ঘিরে থাকা পাঁচটি নদী খনন করে তার নাব্যতা ফিরিয়ে এনে তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করা হবে। নদী খনন করে আমরা নৌপথ সচল করব। এভাবে ঢাকার সৌন্দর্য যেভাবে বৃদ্ধি পাবে, সেভাবে মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নত হবে। যানজট মুক্ত হবে, সেই মহাপরিকল্পনা আমরা হাতে নিয়েছি। সমগ্র বাংলাদেশ নিয়ে আমাদের এই পরিকল্পনা রয়েছে।

তিনি বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বহু পুরানো। এর সামনের দিকটা ঠিক রেখে পিছনের দিকে নতুন ভবন করে, এই হাসপাতালকে আরও উন্নত করার জন্য মহাপরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। এর ডিজাইনও আমি দেখে রেখেছি। আগামীবার ক্ষমতায় আসলে এই হাসপাতালকে নতুন আঙ্গিকে আরও আধুনিকভাবে সাজাবো। ঢাকা ঘিরে যে যে অঞ্চলে চিকিৎসা কেন্দ্র নাই, সেখানে আমরা হাসপাতাল তৈরি করে দিচ্ছি।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে জনসভা সঞ্চালন করেন সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ। ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণ এলাকার অন্তর্ভুক্ত ৮টি সংসদীয় আসনে মহাজোট ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন সভা মঞ্চে। এ সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ৮টি আসনের প্রার্থীকে পরিচয় করিয়ে দেন।

এইউএ/জেএইচ/এমএস

আরও পড়ুন