ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

‘চষে’ বেড়াচ্ছেন মেনন, আব্বাসের উঠান ‘জমজমাট’

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৪:৫৯ পিএম, ২২ ডিসেম্বর ২০১৮

হ্যাটট্রিক (টানা তিনবার) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার আশায় ঢাকা-৮ আসনের বিভিন্ন এলাকা ‘চষে’ বেড়াচ্ছেন মহাজোট মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। প্রতিদিনই ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন এবং একাধিক পয়েন্টে নির্বাচনী গণসংযোগ চালাচ্ছেন ঢাকা-৮ থেকে পরপর দুইবার নির্বাচিত এ সংসদ সদস্য।

তবে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস মাঠে (নির্বাচনী এলাকায়) নেমে প্রচার-প্রচারণায় যথেষ্ট পিছিয়ে। গত ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর শনিবার পর্যন্ত বিএনপির এই প্রার্থী মাত্র তিনদিন প্রকাশ্যে মাঠে নেমে গণসংযোগ চালিয়ে ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করেছেন। মাঠে খুব একটা না নামলেও মির্জা আব্বাসের শাহজাহানপুরের বাসার উঠান কর্মী-সমর্থকদের পদচারণায় বেশ জমজমাট থাকছে।

রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা মতিঝিল, রমনা, শাহবাগ ও পল্টন এলাকা নিয়ে ঢাকা-৮ আসন গঠিত। ১০ বছর ধরে এ আসনের সংসদ সদস্যের দায়িত্ব পালন করছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। হ্যাটট্রিক সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার আশায় অতীতের মতো এবারও মহাজোট থেকে প্রার্থী হওয়া মেনন গত ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর পরই প্রচারণায় নেমে পড়েন।

menon-abbas

প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে ওইদিন বায়তুল মোকাররম এলাকায় গণসংযোগ চালিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন মেনন। গণসংযোগে ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে নৌকায় ভোট চান। এরপর পল্টন কমিউনিটি সেন্টারে মতিঝিল, শাহজাহানপুর, শাহবাগ, রমনায় আওয়ামী লীগ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় অংশ নেন এবং আওয়ামী মহিলা লীগের উদ্যোগে পুরনো রমনা থানার সামনে থেকে একটি মিছিল নিয়ে বেইলি রোড প্রদক্ষিণ করেন।

এরপর প্রথমদিকে সীমিত আকারে প্রচার-প্রচারণা চালালেও গত এক সপ্তাহ ধরে সকাল-সন্ধ্যা নির্বাচনী গণসংযোগ চালাচ্ছেন মহাজোটের এই প্রার্থী। প্রতিদিনই বিভিন্ন এলাকার ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। মতিঝিল, পল্টন, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শান্তিনগরসহ নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন স্থানে নেতাকর্মীদের সঙ্গে সরব উপস্থিত থাকছেন রাশেদ খান মেনন। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তুলনামূলক বেশি গণসংযোগ চালাচ্ছেন তিনি।

গত সপ্তাহের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকা মেডিকেলস্থ নার্সিং কলেজে আলোচনা সভা, ১৭ ডিসেম্বর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ ও বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময়, ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক ও জনতা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গণসংযোগ, ১৯ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময়, ২০ ডিসেম্বর মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ফকিরাপুল বাজার, স্কাইভিউ পার্ক এবং খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সঙ্গে মতবিনিময় ও গণসংযোগ, ২১ ডিসেম্বর শান্তিনগর বাজারে গণসংযোগ করেন রাশেদ খান মেনন।

menon-abbas

আজ (শনিবার) মহাজোটের এই প্রার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গণসংযোগ চালান এবং ফকিরাপুল টিঅ্যান্ডটি কলেজের সামনে থেকে গণমিছিলে অংশ নেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় গণসংযোগ চালিয়ে মেনন বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা ও অগ্রগতির পক্ষে সব সময় ভূমিকা রেখেছে। এখানে সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের কোনো স্থান নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার অতীত ও ঐতিহ্য অনুযায়ী সবসময়ই মুক্তচিন্তা ও মুক্তবুদ্ধির চর্চা করেছে। বাংলদেশের সর্বোচ্চ এই বিদ্যাপীঠ স্বাধীনতাযুদ্ধে গৌরবময় ভূমিকা রেখেছিল। আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা ভোট দিতে ভুল করবে না। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির পক্ষেই তারা রায় দেবে।

অপরদিকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর বিএনপির প্রার্থী ওইদিন কোনো গণসংযোগ চালালনি। তবে শাহজাহানপুরের নিজ বাসায় দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করেন। ১২ ডিসেম্বর প্রথম গণসংযোগ চালান মির্জা আব্বাস। এরপর গত সপ্তাহের শনিবার সেগুনবাগিচা বাজার এলাকায় গণসংযোগ করেন তিনি। ওই গণসংযোগে বিরোধী পক্ষ থেকে বাধা দেয়া ও হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করেন ধানের শীর্ষের এই প্রার্থী।

এরপর টানা পাঁচদিন কোনো গণসংযোগে না নামলেও শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) প্রায় হাজার খানেক কর্মী-সমর্থক নিয়ে রাজধানীর শান্তিনগর ও রাজারবাগ এলাকায় গণসংযোগ করেন মির্জা আব্বাস। ওই গণসংযোগ থেকে তিনি বলেন, মাঠের অবস্থা ভালো না। আমরা চোরাগুপ্তা কায়দায় প্রচারণা চালাচ্ছি। আমার ৪০ বছরের রাজনীতি জীবনে এমন চিত্র দেখিনি।

menon-abbas

তিনি বলেন, প্রচারণায় বাধা ও হামলার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) অভিযোগ করা হলেও ইসির পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ইসি মনে হয় কথা বলতেও জানে না আর কানেও শোনে না। ইসি মনে হয় কিছু দেখেও না। ইসি বলছে নির্বাচনের সব প্রচারণায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে। আমি তো আমার সারাজীবনে এমন নির্বাচন করিনি।

ভোটারদের দ্বারে দ্বরে ঘুরে গণসংযোগে খুব একটা সক্রিয় না থাকলেও মির্জা আব্বাসের শাহজাহানপুরের বাসার উঠানে প্রতিদিনই শতাধিক কর্মী-সমর্থকের উপস্থিতি হয়। চলে পারস্পরিক আলোচনা এবং ভোট নিয়ে বিভিন্ন কথাবার্তা। মূলত মির্জা আব্বাসের বাসার উঠানই তার একমাত্র নির্বাচনী প্রচারকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

অপরদিকে রাশেদ খানন মেনন বিভিন্ন এলাকা চষে বেড়ালেও তার প্রধান নির্বাচনী প্রচারকেন্দ্র রয়েছে শান্তিনগরে। সকাল থেকে রাত অবধি এ কেন্দ্রটি কর্মী-সমর্থকদের সরব উপস্থিতিতে থাকে জমজমাট।

এমএএস/বিএ/জেআইএম

আরও পড়ুন