ঢাকা-১১ : নির্ভার আওয়ামী লীগ, আতঙ্কে বিএনপি
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণায় সরব হয়ে উঠেছে ঢাকা-১১ আসন। প্রচারণায় ব্যস্ত আওয়ামী লীগ। তবে ভোটের লড়াইয়ে অনেকটা কোণঠাসা অন্যতম প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি। ভয়ে আতঙ্কে সীমিত আকারে চলছে তাদের প্রচারণা।
ঢাকা-১১ আসনটি রাজধানীর ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের রামপুরার ২২ ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ড এবং বাড্ডা, বেরাইদ, সাঁতারকুল ও ভাটারা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন বর্তমান এমপি এ কে এম রহমতুল্লাহ। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির শামীম আরা বেগম। তিনি বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এম এ কাইয়ুমের সহধর্মিণী।
এ আসনের অন্য প্রার্থীরা হলেন- জাতীয় পার্টির এস এম ফয়সাল চিশতী (লাঙ্গল), গণফোরামের মোজাম্মেল হক-বীর প্রতীক (উদীয়মান সূর্য), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির মো. আব্দুল বাতেন (কাঁঠাল), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. আমিনুল ইসলাম (হাতপাখা), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির মো. মিজানুর রহমান (আম), বাংলাদেশ মুসলিম লীগের শরীফ মো. মিরাজ হুসেইন (হারিকেন)।
আসনের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, আওয়ামী লীগের গণসংযোগ, লিফলেট বিতরণ ও মতবিনিময় সভা চলছে। পাড়া-মহল্লা, অলি গলি সবখানেই নৌকার মিছিল-মিটিংয়ে সরগরম। অন্যদিকে ধানের শীষের প্রচারণার নামলেও নেতাকর্মীদের মাঝে দেখা যাচ্ছে গ্রেফতার আতঙ্ক। এ ছাড়া হাতপাখা ও লাঙ্গলের পোস্টারও ঝুলছে বিভিন্ন স্থানে। সব মিলিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় আওয়ামী লীগ এগিয়ে থাকলেও অনেকটাই পিছিয়ে বিএনপিসহ অন্যরা।
রামপুরার বাসিন্দা আমজাদ বলেন, গত সপ্তাহ থেকে নির্বাচনী প্রচার-প্রাচারণা, মিছিল, মিটিং চলছে। তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ কে এম রহমতুল্লাহ পক্ষে বেশি প্রচার চলছে। বিএনপি প্রার্থীর তেমন প্রচার চোখে পড়েনি।
নির্বাচনের প্রচারণার বিষয়ে বিএনপির এক কর্মী বলেন, ‘গত দুই মাস ধরে কেউ ঘরে থাকতে পারছে না। ২০১২ সালের রাজনৈতিক মামলার তালিকা ধরে পুলিশ গ্রেফতার করছে। কিভাবে প্রচার-প্রচারণা করবো। এত প্রতিকূলতার মাঝেও যারা প্রচারণায় নেমেছে তাদের উপর হামলা হচ্ছে। এ ভাবে নির্বাচনী কাজ করা যায় না।’
মেরুল বাড্ডার বাসিন্দা তোফাজ্জল জানান, এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রার্থীই প্রচার প্রাচারণায় এগিয়ে আছে। এ ছাড়া তিনি গত দুইবারের এমপি। বর্তমানে ক্ষমতায় আছেন। এলাকার উন্নয়নের তার বিশেষ অবদান রয়েছে। তাই প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে তার প্রভাবই বেশি। ধনের শীষে শামীম আরার জায়গায় কাইয়ুম প্রার্থী হলে বেশি লড়াই হতো। তবে এখনও বলা যাচ্ছে না কি হয়।
এদিকে বনশ্রী এলাকায় নির্বাচনী গণসংযোগ করার সময় রহমতুল্লাহ বলেন, গত ১০ বছরে বাড্ডা রামপুরা এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আগামীতেও নৌকায় ভোট দিতে হবে। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে ৩০ ডিসেম্বর নৌকা বিপুল ভোটে জয়ী হবে।
বিএনপির প্রার্থী শামীম আরা বেগম জানান, গ্রেফতার আতঙ্কে নেতাকর্মীরা কেউ বাসায় থাকতে পারছে না। নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও নিয়মিত কর্মীদের নিয়ে মাঠে থাকার চেষ্টা করছি। জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে, নির্বাচন সুষ্ঠু হলে ঢাকা-১১ ধানের শীষের জয় হবে।
এদিকে দুপুরে বাড্ডা গুলশান লিংক রোডে এলাকায় লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগের সময় বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের লোকজন সবসময় হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। তবে আমরা মাঠে আছি। শেষ পর্যন্ত মাঠে থাকবে।
আমিনুল ইসলাম চঞ্চল নামের এক আওয়ামী লীগ কর্মী জানান, গত ১০ বছরে বাড্ডা, রামপুরা, বেরাইদ ও সাঁতারকুল এলাকায় এ কে এম রহমতুল্লাহ ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। তার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সবাই সন্তুষ্ট। এখানে তার বিকল্প কেউ নেই। তিনি এবারও বিপুল ভোটে জয়ী হবেন।
এসআই/এএইচ/আরআইপি