ফের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার বন্ধের দাবি বিএনপির
আবারও নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানি বন্ধের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। এ ছাড়া বাতিল হওয়া মনোনয়নের ব্যাপারে ইসির আপিল শুনানি তিন দিনের পরিবর্তে দুই দিন শেষ করার দাবি জানিয়েছে দলটি।
বুধবার নির্বাচন কমিশনে গিয়ে দলটি এ দাবি জানায়। বিএপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল এ দাবি জানায়। এ সময় তারা ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে চারটি চিঠি দিয়ে দাবি ও অভিযোগ তুলে ধরেন। এর আগেও একাধিকবার দলটি তাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার বন্ধ ও গ্রেফতারদের মুক্তি চেয়েছিল।
বিএনপি বলছে, রাজনৈতিক সংলাপে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানি বন্ধে প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন। ইসির সঙ্গে সংলাপেও এ আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। কিন্তু মাঠে বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে বিরোধী জোটের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানি অব্যাহত রয়েছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত কয়েকটি ঘটনা উল্লেখ করে বিএনপির ওই চিঠিতে বলা হয়, নির্বাচনী মাঠে সবার সমান সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য এবং ভয়ভীতিহীন পরিবেশে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে নেতাকর্মী-সমর্থকদের গায়েবি অজুহাতে অন্যায় আটক, গ্রেফতার ও হয়রানি বন্ধে জোর দাবি জানাচ্ছি।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী রিটার্নিং অফিসারদের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের সময়সীমা বুধবার শেষ হয়েছে। আপিল নিষ্পত্তির জন্য শুনানি ৬ থেকে ৮ ডিসেম্বর ধার্য করা হয়েছে। ঘোষিত তফসিল মোতাবেক প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৯ ডিসেম্বর।
বিএনপির চিঠিতে বলা হয়, আপিল নিষ্পত্তি বিলম্বের জন্য ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে দলের প্রার্থিতা চূড়ান্তকরণে জটিলতা সৃষ্টি হবে। প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা রাজনৈতিক দলসমূহের পক্ষে কষ্টসাধ্য হবে। এমতাবস্থায় প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনের স্বার্থে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রার্থিতা চূড়ান্তকরণের সুবিধার্থে ৬ ও ৭ ডিসেম্বরের মধ্যেই কিংবা অতি দ্রুততার সঙ্গে আপিল নিষ্পত্তির যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেছে বিএনপি।
প্রতীক বরাদ্দ ও চূড়ান্ত মনোনয়ন নিয়ে জিজ্ঞাসা
প্রতীক বরাদ্দ ও চূড়ান্ত মনোনয়ন নিয়ে ইসির কাছে কিছু বিষয় স্পষ্ট করার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছে বিএনপি। আরপিও’র ১৬ (২) অনুচ্ছেদ অনুসারে একটি আসনে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের দুই বা ততোধিক বৈধ প্রার্থী থাকলে একজনকে চূড়ান্ত মনোনয়ন প্রদানের জন্য কোনো নিদিষ্ট ফরম আছে কি-না এবং ফরম না থাকলে দলের প্যাডে পত্র আকারে প্রদান বৈধ বা গ্রহণযোগ্য হবে কি-না সে বিষয়টি জানতে চেয়েছে দলটি।
আরপিও’র ২০ (১) অনুচ্ছেদের শর্তাংশে বর্ণিত মতে, দুই বা ততোধিক নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের একক প্রতীক বরাদ্দের চিঠির কোনো নির্দিষ্ট ছক আছে কি-না? না থাকলে প্রতীক বরাদ্দের পত্র কমিশনে নাকি সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কাছে দিতে হবে সে বিষয়টিও জানতে চেয়েছে বিএনপি। কোনো কোনো আসনে দুই বা ততোধিক নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের একাধিক বৈধ প্রার্থী রয়েছে। দলগুলো যৌথভাবে একক প্রার্থী ও প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য যথাসময়ে কমিশনে পত্র দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে আরপিও’র ২০ (১) অনুচ্ছেদের বিধান মতে যেকোনো একজন বৈধ প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্দের পত্র দিলে জোটভুক্ত অন্য দল সমূহের বৈধ প্রার্থীর প্রার্থিতা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হবে কি-না অথবা জোটভুক্ত দলসমূহের যেকোনো একজন বৈধ প্রার্থীকে জোটের প্রধান দল হিসেবে বিএনপির পক্ষ থেকে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার পর জোটভুক্ত অন্যান্য দলের বৈধ প্রার্থীর প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে হবে কি-না তা জানতে চাওয়া হয়।
আরও ৩ দলকে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ
মোট ১১টি দলকে ধানের শীষ প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার বিষয় নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করেছে বিএনপি। বিএনপি ছাড়াও অন্য দলগুলো হচ্ছে- গণফোরাম, জেএসডি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, এলডিপি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), খেলাফত মজলিস, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, মুসলিম লীগ ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ।
এইচএস/এনডিএস/এমএস