‘এমপি হলে সবাই মিলে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে খাব’
আগামী সংসদ নির্বাচনে আবারও নির্বাচিত হলে সবাই মিলে টাকা ভাগ করে খাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী।
বর্তমান এই সংসদ সদস্য গত শনিবার (১ নভেম্বর) সাতকানিয়া উপজেলার নিজ বাড়িতে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় এ ঘোষণা দেন। তার ওই বক্তব্যের ভিডিও ইতোমধ্যে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
১৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী বক্তব্য দিচ্ছেন।
বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি বলেন, ‘আমাকে মোছলেম উদ্দিন সাহেব বলেছেন টাকা দাও। আমি টাকা দিয়েছি। অনেকবার টাকা দিয়েছি। কুতুব উদ্দিন সাহেবকে টাকা দাও, আমি টাকা দিয়েছি। খোরশেদ সাহেবকে টাকা দাও, টাকা দিয়েছি। ভবিষ্যতে, আমি আবার এমপি হলে আমরা সবাই ভাগ করে, বাঁটোয়ারা করে খাব, ইনশাঅাল্লাহ।’
আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী বক্তব্যে উল্লেখ করা মোছলেম উদ্দিন হলেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। কুতুব উদ্দিন চৌধুরী হলেন সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ওই সভায় এ দুজনই উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাংসদ আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী জাগো নিউজকে বলেন, ‘ওই ভিডিওতে পুরো বক্তব্য আসেনি। আমি মূলত সরকারি বিভিন্ন বরাদ্দের কথা বলেছি। ভাগ করা বলতে বিভিন্ন প্রকল্প ভবিষ্যতে এলে সমন্বয় করব বোঝাতে চেয়েছি। এসব জামায়াত-শিবিরের অপপ্রচার। ওই বক্তব্যে ভুল থাকায় আমি পরে শুধরে আবারও বক্তব্য দিয়েছি।’
এদিকে এমপির এমন বক্তব্যে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তারা বলছেন- কর্মীদের সঙ্গে সম্পর্কহীন এমপি নেতাদের তুষ্ট করতেই এমন সব কথা বলেছেন।
সাতকানিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, ‘দলের পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দিয়ে অতিথি পাখিদের এমপি বানালে এভাবে রাস্তা-ঘাটে দলের মান-ইজ্জত যাবে।’
প্রসঙ্গত, এক সময়ের জামায়াত নেতা আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েই ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
ওই সভার সঞ্চালক কুতুব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘প্রথমে উনি কথাগুলো ভুলভাবে উপস্থাপন করেন, যা আমিসহ উপস্থিত সকলকে বিব্রত করেছে। পরে তিনি বলেন, ‘আমার ভুল হয়েছে। আমি আসলে বরাদ্দ দেয়ার কথা বলেছি’।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি ওই বৈঠকে ছিলাম না, ভিডিও দেখিনি। তবে যতটুকু জানি বিষয়টি উনি ভুল করে বলেছেন। একজন ব্যক্তি যখন নিজের ভুল স্বীকার করেন তখন আর কিছু বলার থাকে না।’
আবু আজাদ/জেডএ/এমএস