হানাদারদের মতো আচরণ করছে সরকার : খলিকুজ্জামান
বাসদের সাধারণ সম্পাদক কমরেড খলিকুজ্জামান বলেছেন, ১৯৭১ সালে হানাদার বাহিনী মানুষকে তুলে নিয়ে গেছে, বিনা বিচারে হত্যা করেছে, গুম করেছে। সেখানে তো আমাদের সান্ত্বনা ছিল। কারণ আমরা তখন স্বাধীনতার জন্য লড়ছি। আর ওরা ছিল হানাদার। কিন্তু আজকে স্বাধীন দেশে হানাদারদের মতো আচরণ করছে সরকার।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘মায়ের ডাক’ নামের একটি সংগঠন আয়োজিত ‘গুম হওয়ার পাঁচ বছর শেষ আর অপেক্ষা কতদিন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
কমরেড খলিকুজ্জামান বলেন, ‘এ বিজয়ের মাসে পরাজয়ের একটা কলঙ্কের বোঝা গোটা জাতির ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম। এজন্য আমার একটু বেশি বেদনা। আমরা কি এ দেশ চেয়েছিলাম? আমরা কি এ স্বাধীনতা চেয়েছিলাম?’
তিনি বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে প্রায়ই বলা হয় যে, সংবিধানের বাইরে তারা যেতে পারবে না। এমনকি ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময়ও বলেছিল-সংবিধানের বাধ্যবাধকতার কারণে এর বাইরে আমরা যেতে পারি না। কিন্তু সংবিধানের কোন জায়গায় লেখা রয়েছে যে, বিনা বিচারে হত্যা করা যায়। সংবিধানের কোন জায়গায় লেখা আছে যে, মানুষকে গুম করে রাখা যেতে পারে। সংবিধানের কথা সরকারের মুখে মানায় না।’
বাসদ সাধারণ সম্পাদক মনে করেন, এই সরকার তাদের নিয়মমাফিক যে কাজ সেই কাজের অংশ হিসেবে গুমের মাধ্যমে নিখোঁজ ব্যক্তিদের খোঁজে তদন্ত কমিটি গঠন করতে পারে। আর নির্বাচন কমিশনও একটা তদন্ত কমিটি গঠন করতে পারে।
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যাদের গুম করে রাখা হয়েছে তারা যদি অপরাধী হয়, তাহলে তাদের বিচারিক কাজ শুরু করেন। আর যদি তারা অপরাধী না হয় তাহলে তাদের ফেরত দেন।’
কমরেড খলিকুজ্জামান বলেন, ‘তারা কী নির্বাচন করবে? যারা মানুষদের গুম করে ফেলে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালায়। এসব দিয়ে কি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে? বেআইনি কাজ চালিয়ে আইনের শ্বাসন প্রতিষ্ঠান করা যায় না। ফলে এ নির্বাচনের মধ্যদিয়ে গণতন্ত্র বা মানুষের অধিকার ফিরে আসবে না।’
পাঁচ বছর আগে গুমের শিকার হওয়া সুমনের মা হাজেরা বেগমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি প্রমুখ।
এমইউএইচ/এসআর/এমকেএইচ