ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

জামায়াতের অর্ধশতাধিক প্রার্থীর মধ্যে বাতিল ১৯

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:০১ পিএম, ০২ ডিসেম্বর ২০১৮

২০ দলীয় জোটের সঙ্গে শেষ অবধি সমঝোতা হয় ২৫ আসনে। এর বাইরে বিএনপিকে আসন বণ্টনের ক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত চাপের রাখার কৌশলে আরও ৩০ জনকে স্বতন্ত্র প্রার্থী অর্থাৎ ৫৫টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল জামায়াত।

সমঝোতা হওয়া ২৫ আসনে মনোনয়নপত্র জমা দেন দলের প্রার্থীরা। ধানের শীষ চাওয়া এই ২৫টি আসনের একটিতে জামায়াত প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে। আর রংপুরের একটি আসনে জামায়াত প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারেনি। অপরদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোয়নপত্র দাখিল করা ৩০টি আসনের প্রার্থীর মধ্যে ১৮ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে নির্বাচন অফিস ও রিটার্নিং কর্মকর্তারা।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মাওলানা আব্দুল হালিম জাগো নিউজকে বলেন, 'আয়কর দাখিল না করার অভিযোগে দিনাজপুর-১ আসনের জোটের প্রার্থী মো. আবু হানিফের মনোয়নপত্র বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন।'

তিনি বলেন, 'এটি ঠুনকো অভিযোগ। আমরা এ ব্যাপারে আইনের আশ্রয় নেব। আপিলে সব টিকে যাবে ইনশাআল্লাহ।'

জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থী কতো জন, কতো জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'বেশ কয়েকজনের ব্যাপারে মনোনয়নপত্র বাতিলের তথ্য পাচ্ছি। তবে এখনই কিছু বলতে চাই না।'

যদিও জামায়াতের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, এবার ২০ দলীয় জোট থেকে ২৫টি আসনে জামায়াতকে ছেড়ে দেবার সিদ্ধান্ত হয়। বিএনপি’র সাথে এ নিয়ে কয়েক দফা দরকষাকষির পর ২৫ আসন পায় জামায়াত। তবে জামায়াতের অসন্তুষ্টি বাড়ে ওই আসনগুলোতে জামায়াতের বিপরীতে বিএনপি’র প্রার্থীকে প্রত্যাহার না করায়।

দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের একজন সদস্য জানান, সমঝোতায় জামায়াত ২৫ আসন মেনে নিলেও দাবি ছিল তাদের (বিএনপি) প্রার্থীদের যেন প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। কিন্তু তারা করেনি। যদিও বলা হয়েছে প্রত্যাহারের সুযোগ হয়েছে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তাই বিএনপিকে চাপে রাখার কৌশল হিসেবে আরও ৩০ জন জামায়াত নেতাকে স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র নিতে বলা হয়। ওই ৩০ প্রার্থীর মধ্যে ১৮ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন।

সূত্রে জানা গেছে, এক মহিলা স্বাক্ষর দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করার অভিযোগে নীলফামারী-১ এর স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুস সাত্তারের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। এ ব্যাপারে ওই প্রার্থী আব্দুস সাত্তার বলেন, 'যে মহিলার স্বাক্ষর নিয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা অভিযোগ তুলেছেন তাকে হাজির করা হলেও তারা তা মানেননি। আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করেছেন। আমাদের আপিলে যেতে বলেছেন তারা। আমরা আপিল করবো।'

একজন স্বাক্ষর অস্বীকার করায় পটুয়াখালী-২ আসনে জামায়াতের ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। কুষ্টিয়া-২ আবদুল গফুরের ৭ জনের স্বাক্ষর সমস্যা, লালমনিরহাট-১ আবু হেনা এরশাদ হোসেন সাজুর ক্ষেত্রে ৩ জনের স্বাক্ষর সমস্যাজনিত কারণে মনোয়নপত্র বাতিল হয়েছে।

অন্যদিকে উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ না করার অভিযোগে বগুড়া-৪ আসনের জামায়াতের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাওলানা তায়েব আলীর মনোয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে ওই প্রার্থীর অভিযোগ, 'উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছি। কিন্তু এখন তারা বলছেন একসেপ্ট করেনি। এটা চাপে রাখার কৌশল। আমরা আপিল করবো।'

একই অভিযোগে বগুড়া-৫ আসনের দবিবুর রহমানের মনোনয়পত্র বাতিল হয়েছে।

অনদিকে দু’জন স্বাক্ষর অস্বীকারের অভিযোগে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে রুহুল আমিনের, লক্ষ্মীপুর-২ আসনে জেলা জামায়াতের আমির রুহুল আমীনের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।

মাত্র একজন স্বাক্ষর অস্বীকার করার অভিযোগে গাইবান্ধা-৪ এর স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আমির ডা. আব্দুর রহিমের মনোয়নপত্র বাতিল হয়েছে। ভোটার স্বাক্ষর সমস্যাজনিত কারণে কুড়িগ্রাম-৪ আসনে মোস্তাফিজুর রহমান ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ এর ইয়াহয়িয়া খালেদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা ভোটার তালিকায় অসঙ্গতির কারণে রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনে দলের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান এবং রাজশাহী-২ (পবা-মোহনপুর) আসনে দলরি জেলা কর্মপরিষদ সদস্য ও সাবেক কাটাখালী পৌর মেয়র অধ্যাপক মাজেদুর রহমানের মনোয়নপত্র বাতিল করেছেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক ও রিটানিং কর্মকর্তা এসএম আবদুল কাদের।

সেই হিসেবে মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ের দিনই জামায়াতের ২৩ জন প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীক পেলেন। আর দলটির স্বতন্ত্র প্রার্থী টিকেছে ১২ জন।

জামায়াতের অভিযোগ 'ঠুনকো কারণে' তাদের প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এক্ষেত্রে আপিল করার কথা ভাবছে তারা। সেইসঙ্গে রয়েছে জোটের মধ্যে দরকষাকষির ভাবনাও।

জেইউ/এসএইচএস/পিআর/জেআইএম

আরও পড়ুন