প্রার্থী না থাকলে কী করবে ঐক্যফ্রন্ট?
রোববার সকাল থেকে সব বিভাগের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়েছে বিভিন্ন দলের মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র। তবে তারা তিন দিনের মধ্যে এ আদেশের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আবেদন করতে পারবেন।
ইসির যাচাই-বাছাই ও মনোনয়নপত্র বাতিলে আপাতত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্ট। বিভিন্ন কারণে বগুড়া-৭, মানিকগঞ্জে ৩টি ও শেরপুরে একটি আসনে বিএনপি বা ২৩ দল কিংবা ঐক্যফ্রন্টের কোনো প্রার্থী নেই। এমতবস্থায় এখন কী করবে ঐক্যফ্রন্ট?
এ বিষয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমন্বয়ক ও গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু জাগো নিউজকে বলেন, ‘শূন্য আসনে যদি ঐক্যফ্রন্টের সমমনা ভালো লোক পাওয়া না যায় তাহলে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সমর্থন দেয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখনও আপিলের সময় রয়েছে, আসন শূন্য থাকার পরিস্থিতি এখনও আসেনি। তবে এ বিষয়টি আন্দাজ করে আমরা আগে থেকেই ফ্রন্টের পক্ষ থেকে এক আসনে একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন দিয়ে রেখেছি। আমরা আশা করি, কাউকে না কাউকে পাওয়া যাবে।যদি একজনকেও না পাওয়া যায় তাহলে আগামীকাল (৩ ডিসেম্বর) অথবা পরশু আমরা সভায় বসবো। সেখান থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমন্বয় কমিটির সমন্বয়কারী ও বিএনপি নেতা বরকতউল্লা বুলু জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রথমত আমাদের বাতিলকৃত প্রার্থীরা আপিল করবেন। যদি এতেও না হয় তবে বিকল্প চিন্তা করা হবে।’
বিকল্প চিন্তা কী স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন দেয়া? জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি নির্ধারণে আমরা দল ও জোটের সঙ্গে আলোচনা করবো।
এ বিষয়ে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও ঐক্যফ্রন্ট নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না জাগো নিউজকে বলেন, ‘সবই বাতিল করে থাকলে আমরা একসঙ্গে বসে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেব। তবে সেক্ষেত্রে স্বতন্ত্র কোনো প্রার্থীকে সমর্থন দেয়ার বিষয়ে আমরা ভাববো। সেসব আসনে কারা কারা আছে সেসব দেখে সমর্থনের বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবো।’
এর আগে সকালে বগুড়া-৭ (শাজাহানপুর ও গাবতলী) আসনে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্রটি বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। পাশপাশি বগুড়া-৭ আসনে বিএনপির প্রার্থী মোর্শেদ মিল্টন ও সরকার বাদলের মনোনয়নপত্রও বাতিল করা হয়। এই দুই প্রার্থী স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যান। মনোনয়ন পাওয়ার জন্য এই দুইজন পদত্যাগপত্র জমা দিলেও তা গ্রহণ করা হয়নি। তাই তারা কেউই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। ফলে এই আসন থেকে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের মনোনীত কোনো প্রার্থী এই আসনে নেই।
এছাড়াও মানিকগঞ্জের তিনটি (১,২,৩) আসনের সবকটিতেই বিএনপির প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। মানিকগঞ্জ-১ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী দৌলতপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হকের অনলাইন আবেদন যথাযথভাবে না হওয়ায় ও চেয়ারম্যান পদ থেকে তার পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়ায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
মানিকগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী মঈনুল ইসলাম খানের মনোনয়নে বিএনপি মহাসচিবের স্বাক্ষরে মিল না থাকায় এবং একই আসনে বিএনপির আরেক প্রার্থী সিঙ্গাইর উপজেলা চেয়ারম্যান আবিদুর রহমান রোমান চেয়ারম্যান পদ থেকে তার পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়ায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়।
মানিকগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতার পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়ায় তার মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়।
শেরপুর-১ আসনে বিএনপির মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন ৩ জন। সবার মনোনয়নপত্র বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ঢাকা অঞ্চলের মোট ১১৬ প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।
এআর/জেএইচ/পিআর