সবার উচিত ভদ্রভাবে কথা বলা : ড. কামাল
ফোনালাপ ফাঁস ও আসন বণ্টন নিয়ে ‘ঐক্যফ্রন্ট ব্ল্যাকমেইল’ করছে- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের এমন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘আমি আশা করবো, এসব ভাষা আমরা ব্যবহার করবো না। আমি সিরিয়াসলি বলছি, এসব ভাষা ব্যবহার করা আমাদের কালচার হয়ে গেছে। যেমন- ব্ল্যাকমেইলিং, টেররাইজিং।’
আরও পড়ুন >> কোন আসনে আওয়ামী লীগের কে মনোনয়ন পেলেন
বিএনপি ও শরিকদলগুলোর সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে গতকাল রোববার (২৫ নভেম্বর) সন্ধ্যার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়। সেখানে বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী ড. এমাজউদ্দিনের সঙ্গে আলাপকালে ‘আসন বণ্টন নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট ব্ল্যাকমেইল করছে’ বলে অভিযোগ করেন খন্দকার মোশাররফ।
খন্দকার মোশাররফের ওই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণফোরাম আয়োজিত এক আলোচনা সভা শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল আরও বলেন, ‘গণতন্ত্র লালন করতে হলে সবার উচিত ভাষার ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখা, ভদ্রভাবে কথা বলা। একে-অন্যকে কথায় কথায় আক্রমণ না করা। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এটা হয়ে গেছে। আসন ভাগাভাগির জন্য আমাদের দায়িত্বপ্রাপ্তরা কাজ করছেন। আলোচনা কিছুটা শুরু হয়েছে, আরও আলোচনার প্রয়োজন আছে।’
গতকাল রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এবং বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী ড. এমাজউদ্দিন আহমেদের মধ্যে কথোপকথনে একটি অডিও ক্লিপ অনলাইনে ফাঁস হয়। সেখানে ‘নাগরিক ঐক্যের মান্না ৪০ আসন দাবি করায় বিব্রত অবস্থায় পড়েছে বিএনপি’- এমন মন্তব্যও করেন খন্দকার মোশাররফ।
কথোপকথনের অংশবিশেষ নিচে উপস্থাপিত হলো-
এমাজউদ্দিন : ‘অনেক রাত ধরে কাজ করছেন আপনাদের পরিশ্রম যাচ্ছে। ঐক্যফ্রন্ট কী খুব বেশি দাবি-দাওয়া করছে নাকি শুনলাম।’
খন্দকার মোশাররফ : ‘হ্যাঁ দাবি-দাওয়ার শেষ নাই। মান্নার পার্টির তো কোনো নিবন্ধন নাই। তাকে বগুড়ার আসন দিতে চেয়েছি। সে পেলে আমাদের তিনবারের পাস করা এমপি পাবে না। আর সে যদি চল্লিশটা চায়…’
এমাজউদ্দিন : ‘চল্লিশ টা!!’
খন্দকার মোশাররফ : ‘তাদের দাবি রক্ষা করা খুব কঠিন হচ্ছে।’
এমাজউদ্দিন : ‘তাদের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে বিএনপিকে উদ্ধার করতে নেমেছে… ’
খন্দকার মোশাররফ : ‘তাদের এমন ব্যবহার, খুবই খারাপ অবস্থায় আছি। তারা এখন আছে তাই ভালো ব্যবহার করি। আপনি বলেন, এইটার কোনো যুক্তি আছে। মান্নাকে আমরা অনেক সম্মান দিয়ে ফেলেছি।’
এমাজউদ্দিন : ‘আর অন্যদের, রবের কী ব্যাপার?’
খন্দকার মোশাররফ : ‘রবের ঢাকাতে এমন সিট দিতে পারি সে পাস করবে। না রব লক্ষ্মীপুর থেকেই করবে। ওখানে নাজিম আছে। ২০০৮ সালে ৩৩ আসনের মধ্যে একটা ওই ছেলে পেয়েছিল। রব তার কাছে জামানত হারায়ছিল। কিন্তু সে এখন বলছে ওই খান থেকেই দাঁড়াবে। ঐখানে নির্বাচন করলে সে ফাইট করবে কিন্তু ঢাকায় সে পাস করবে। এরা এমনই ফালতু লোক।’
এমাজউদ্দিন : ‘এখন মনে হচ্ছে ব্ল্যাক মেইলিংয়ের দিকে চলে যাচ্ছে…’
খন্দকার মোশাররফ : ‘আপনারা বলেন, ঐক্য ভালো, ঐক্য ধরে রাখতে হবে। কিন্তু আর কত? জনসভায় আমরা লোক জোগাড় করি। এরা বক্তব্য দেয়। কামাল হোসেন সাহেবকে বলেছি, একটা লিস্ট দেন। এই লিস্ট দেখে কাজ হবে। আমাদের ৩০০ আসনে জনসভা করতে হবে। আমাদের লোক জোগাড় করতে হবে। অথচ দেখেন তারা একটা লোক খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই বলে না। কামাল হোসেনকে বলেছি, আপনারা নির্বাচন করেন একা। আমরা লোক দিব। জনসভাও করে দিব। কেন বলবো না বলেন, ওরা এমন ব্যবহার করলে কেন বলবো না।’
এমাজউদ্দিন : ‘এটা খুব খারাপ কথা আসলেই। এরা যেমন করছে, তাহলে ২০ দলীয় জোট কী দোষ করলো?’
খন্দকার মোশাররফ : ‘হ্যাঁ ২০ দলীয় জোট আমাদের সাথে থাকল। তারাওতো নির্যাতনের শিকার হয়েছে। কামাল হোসেন সাহেবের আসলে বয়স হয়ে গেছে…’
এআর/এমএআর/এমএস