ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

৬০ আসনে জামায়াতের ‘দর-কষাকষি’

জসীম উদ্দীন | প্রকাশিত: ০৯:০৫ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০১৮

জোটগতভাবে মনোনয়নের প্রত্যাশায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিকে ৬০ সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। জামায়াতের একটি প্রতিনিধি দল গত শনিবার ২৩ দলীয় জোটের লিয়াজোঁ কমিটির সমন্বয়কারী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও নজরুল ইসলাম খানের কাছে এ তালিকা জমা দিয়েছে। ৬০ আসনের মধ্যে কমপক্ষে ৪৫টি আসনে কোনো ছাড় না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মাওলানা আব্দুল হালিম জাগো নিউজকে বলেন, ১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত ২২২ আসনে প্রার্থী দিয়েছিল। জয়ী হয়েছিল ১৮ প্রার্থী। আমাদের প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা আগের তুলনায় বেড়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

তিনি বলেন, প্রেক্ষাপট বদলেছে। ৩০০ আসনেই নির্বাচন করার মতো যোগ্য প্রার্থী আমাদের রয়েছে। তবে জাতীয় স্বার্থে এবার আমরা ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারকে হটাতে জোটগতভাবে ঐক্যবদ্ধ থেকে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জোটগতভাবে নির্বাচন করার কারণে আমরা ছাড়ও দিচ্ছি অধিকাংশ আসনেই। ৬০ আসনে জেতার সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা বিএনপিকে দেয়া হয়েছে। এবার এ নিয়ে আলোচনা হবে।

তিনি আরও বলেন, এই ৬০ আসনে জামায়াতের প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা, কেন জিততে পারে, কী কী কারণে তারা জনপ্রিয় এবং জামায়াত প্রার্থীদের বিরোধী প্রার্থীদের অবস্থান সম্পর্কেও বিএনপিকে ধারণা দেয়া হয়েছে। আশা করছি, আমরা আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করতে পেরেছি। জোটগত সিদ্ধান্ত জানার অপেক্ষায় আছি আমরা।

জামায়াতের রংপুর বিভাগের নেতা ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের এক সদস্য জাগো নিউজকে বলেন, এবার উত্তরাঞ্চলের আসনগুলোতে জামায়াতের অবস্থান খুবই শক্তিশালী।

তিনি বলেন, সর্বশেষ ২০০৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল জামায়াত। সেবার গাইবান্ধায় ৩টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল জামায়াত। এবার জেলাটির ৫টি আসনের মধ্যে চার আসনেই জামায়াতের হেভিয়েট প্রার্থী। তাদের কোনোভাবেই বাদ দেয়ার সুযোগ নেই। গত উপজেলা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে প্রায় দ্বিগুণ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে গাইবান্ধা জেলা জামায়াত সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল করিম নির্বাচিত হন। সামাজিক ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি এলাকায় সরকার দলীয় প্রার্থীর চেয়েও এগিয়ে। দলগত সিদ্ধান্তে গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনে অধ্যাপক মাজেদুর রহমান, গাইবান্ধা-৩ (সাদুল্যাপুর-পলাশবাড়ী) আসনে মাওলানা নজরুল ইসলাম, গোবিন্দগঞ্জ থেকে ডা. আব্দুর রহিমের পাশাপাশি সদর আসনে এবার এক রকম চূড়ান্ত আব্দুল করিম।

জামায়াতে ইসলামীর ঢাকার একটি ইউনিটে প্রধান ও ছাত্র শিবিবের সাবেক সভাপতি জাগো নিউজকে বলেন, সময় গড়াচ্ছে। দর-কষাকষিও চলছে। আমাদের পক্ষ থেকে এবারের ভোটের হিসাব, গত নির্বাচনগুলোর তুলনায় এবার সংশ্লিষ্ট আসনগুলোতে সম্ভাব্য জামায়াত প্রার্থীর অবস্থান ও বিএনপিসহ জোটের অন্য দলের অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিয়েছি। ঠিক কত আসনে নির্বাচন করার মতো সমঝোতা হচ্ছে তা জানতে আরও কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে।

এ বিষয়ে ২০ দলীয় জোটের লিয়াজোঁ কমিটির সমন্বয়কারী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার বোর্ডে আছি। এ বিষয়ে পরে কথা বলবো।’

তবে বিএনপি ও ২৩ দলীয় জোট সূত্রে জানা গেছে, এবার বিএনপিকে ২৩ দলীয় জোটের পাশাপাশি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গেও আসন ভাগাভাগি করতে হবে। যে কারণে এবার জামায়াতসহ পুরান শরীক দলগুলোকে আসন ছাড় দেয়া নিয়ে আলোচনা চলছে। বিএনপির পক্ষ থেকে জামায়াতকে ২৫টি আসন দেবার আলোচনা চলছে। তবে দর-কষাকষিতে জামায়াতের টার্গেট কমপক্ষে ৪৫টি আসন।

এখানে উল্লেখ্য যে, স্বাধীনতা যুদ্ধে বিতর্কিত জামায়াতে ইসলামী ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দল হিসেবে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন হারিয়েছে। এ অবস্থায় দলের নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এর আগে, ২০০১ সালে চারদলীয় জোটের ব্যানারে ৩১টি, এরমধ্যে জোটবদ্ধভাবে ৩০টি এবং এককভাবে একটিতে নির্বাচন করে জামায়াত। ২০০৮ সালের নির্বাচনে ৩৯টি আসনে জোটগত সমর্থন পেলেও চারটি থেকে দলীয়ভাবে নির্বাচন করে জামায়াত।

জেইউ/জেএইচ/এমএস

আরও পড়ুন