সংলাপে দাবি না মানলে রাজপথে যাবে ঐক্যফ্রন্ট
জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের বৈঠক শেষে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহামুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘সংলাপে (দ্বিতীয় দফা) দাবি মানা না হলে রাজপথের মাধ্যমে দাবি আদায় করা হবে। রাজপথ খোলা আছে।’
মঙ্গলবার রাত পৌনে ৮টায় মতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শুরু হয়। চলে রাত পৌনে ১০টা পর্যন্ত।
মান্না বলেন, ১১ সদস্যদের প্রতিনিধি দল আগামীকাল (বুধবার) সংলাপে যাবেন। সাত দফা দাবি নিয়েই আলোচনা হবে।
বৈঠক সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের দ্বিতীয় দফার সংলাপের বিষয়ে এ বৈঠক হয়। বৈঠক থেকে ঐক্যফ্রন্টের প্রতিনিধি দলের তালিকাটি চূড়ান্ত করা হয়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমেদ, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার মোস্তফা মহসীন মন্টু, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব প্রমুখ।
এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
সমাবেশে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, দেশের মালিক কোনো মহারানি-মহারাজা নন, এই দেশের মালিক জনগণ। জনগণের দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য আপসহীনভাবে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চালিয়ে যাব।
তিনি বলেন, আমরা দেশের মালিক হিসেবে ঐক্যবদ্ধ থাকব। ঐক্যবদ্ধ হয়ে সিদ্ধান্ত নেব। সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে। ভোটকেন্দ্রে পাহারা দিতে হবে।
সমাবেশে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আগামীকালের (বুধবার) সংলাপ সফল না হলে এবং দাবি না মানলে পরদিন (৮ নভেম্বর) রাজশাহী অভিমুখে রোডমার্চ। এরপরের দিন (৯ নভেম্বর) রাজশাহীতে জনসভা হবে। একে একে খুলনা ও বরিশাল অভিমুখেও রোডমার্চ হবে।
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী সমাবেশে বলেন, ‘আমি খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই না। কারণ, শেখ হাসিনার হাত থেকে আমাদের মুক্তি হবে? সেটা আগে নিশ্চিত করতে হবে। খালেদা জিয়ার মুক্তি চাওয়ার দরকার নাই। কারণ, তিনি জেলে গিয়ে জননেতায় পরিণত হয়েছেন।’
মঙ্গলবার দুপুর ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিএনপির সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) কর্মীদের সম্মিলিত সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হয়। উদ্যান ঘিরে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবিসংবলিত ব্যানার ও ফেস্টুন ছিল। এ ছাড়া বিএনপি নেতাদের ছবি সংবলিত ব্যানার-ফেস্টুনও ছিল চোখে পড়ার মতো।
বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন, ঢাকা ও আশপাশের জেলার সাবেক এমপি এবং জনপ্রতিনিধিরাও এই সমাবেশে যোগ দেন। গণভবনে দ্বিতীয় দফা সংলাপের আগের দিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করে শক্তি ও জনসমর্থনের বিষয়টি জানান দিতে চান ঐক্যফ্রন্ট নেতারা।
গত ১৩ অক্টোবর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের পর ঢাকায় এটাই তাদের প্রথম জনসভা। ইতোমধ্যে এই জোটের নেতারা সিলেট ও চট্টগ্রামে সাত দফা নিয়ে জনসভা করেন।
কেএইচ/জেডএ/জেআইএম