ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

ড. কামালকে হতাশ করলেন কাদের সিদ্দিকী, সিদ্ধান্ত জানাবেন পরশু দিন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৯:০৩ পিএম, ০৩ নভেম্বর ২০১৮

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর আজ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত জানানোর কথা থাকলেও তিনি ফের সময় চেয়েছেন ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেনের কাছে। এর আগে গত ৩১ অক্টোবর কাদের সিদ্দিকী বলেছিলেন, ‘আমি জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে থাকবো কি-না, সেটা ৩ নভেম্বর জানাবো।’

আজ ড. কামাল হোসেনের উদ্দেশ্যে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘স্যার আমি একদিন সময় চেয়ে নিচ্ছি। আগামী ৫ নভেম্বর আমি আমার অভিমত আপনাদের জোটের নেতাদের সামনে জানিয়ে দেবো।’

তিনি বলেন, ‘সুলতান মোহাম্মদ মুনসুর আমাকে যোগ দিতে বলেছেন। আমি যদি যোগ দেই, তাহলে মনপ্রাণ দিয়ে কাজ করবো। আর যদি আপনাদের সঙ্গে নাও থাকতে পারি, তাও জানিয়ে দেবো। তবে, যেদিন প্রধানমন্ত্রী আপনাদের সঙ্গে সংলাপ করেছেন, আপনাদের বিজয় সেদিন হয়ে গেছে। আমি যেখানেই থাকি না কেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না।’

শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন কাদের সিদ্দিকী।

আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে কাদের সিদ্দিকী বলেন, গত পরশুদিন আমি ড. কামাল হোসেনের বাসায় গিয়েছিলাম। গত ৩ দিন ধরে আমার দলের নেতারা বারবার বলেছেন ঐক্যফ্রন্টের যোগদানের কথা আমি চিন্তা করছিলাম, প্রেসকেও বলেছিলাম। ড. কামাল হোসেনকে আমি পিতার মতো সম্মান করি।

ড. কামালকে রাজাকার বলে কটাক্ষ করা নিয়ে তিনি বলেন, ওরা আপনাকে অনেক অপমান করেছে। আপনাকে রাজাকার বলেছে। বলেছে, খুনিদের সঙ্গে আপনি এক হয়েছেন। আপনি এসব মাথায় নেবেন না। হাতী রাস্তায় হেঁটে যাওয়ার সময় অনেক প্রাণী ঘেউ ঘেউ করে। আপনারা ঐক্য করেছেন মানুষের জন্য। আপনাদের বিজয় হয়ে গেছে।

কাদের সিদ্দিকী আরও বলেন, ড. কামাল হোসেনকে আজকে এখানে পেয়ে ধন্য হয়েছি। তিনি শুধু কামাল হোসেন নন। তিনি ঐক্যফ্রন্টের প্রধান। তিনি সমগ্র জাতির প্রধান। কামাল হোসেন এমন অবস্থানে এখন তিনি যেখানে নির্বাচনে দাঁড়াবেন, সেখানে বিজয়ী হবেন। এমনকি টুঙ্গি পাড়ায় শেখ হাসিনার আসনেও তিনি বিজয়ী হবেন। মানুষের পরিবর্তন হতে সময় লাগে না।

তিনি বলেন, সারা জীবন আমি স্রোতের উজানে চলেছি। আজকেও চলেছি। আজকের আওয়ামী লীগ আমার পেছনে গুন্ডা লেলিয়ে দিয়েছিল। আমার কর্মীরা আহত হয়েছিল। পঙ্গু হয়ে গিয়েছিল। অন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বলেন, আমার ভাই আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশ বলতে শেখ হাসিনা। স্বাধীনতা বলতে শেখ হাসিনা। কিন্তু তা আমি মানি না। আমি বলি, বাংলাদেশ বলতে বঙ্গবন্ধু। স্বাধীনতা বলতে বঙ্গবন্ধু। শেখ হাসিনা যদি হেরে যান, কি হবে? এখন তো তিনি হেরে যাচ্ছেন। এতোদিন দেখতাম আওয়ামী লীগ ২০ সিট পাবে। এখন তো দেখি ১৯ সিটও পাবে না।

ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংলাপ বিষয়ে তিনি বলেন, কোনো সংলাপ নয়, বিএনপির শরিকের সঙ্গে সংলাপ নয়, কই সেদিন তো একই টেবিলে বসেছেন। জামাই আদরে খাওয়ালেন। এর জন্য তাদের ৭ দফা মানার প্রয়োজন নেই। যেদিন আলোচনায় বসেছেন সেদিন কিন্তু গোলাপ ফুলের সুবাতাস পাননি। ড. কামালের নেতৃত্বে আপনি বসেছেন। আপনার বাবার প্রতিনিধি হয়ে ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন ড. কামাল হোসেন। ইতিহাস তো আপনাকে সাক্ষ্য দেয় না। আপনার চাপার জোর থাকবে না। সকালে পত্র পেলেন বিকেলে সংলাপে রাজি হলেন। এভাবে রাজি হতে হতে আপনার আমও যাবে, ছালাও যাবে।

এর আগে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেন, আজকে আমার দুঃখ লাগে, স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরেও আমাদের লক্ষ্য অর্জন হয়নি। আমি বিশ্বাস করি, তিন বছর পরে স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি হবে। জনগণের ভোট ও গণতন্ত্রের ধারা রেখে যেতে চাই পরবর্তী প্রজন্মের জন্য। উনি (বঙ্গবীর) এটা করে যাবেন। উনার কথার মধ্য দিয়ে সেই সাহসটা আমরা পাবো। উনি (কাদের সিদ্দিকী) আমাদের কথা দিয়ে আশ্বস্ত করবেন।

কামাল হোসেন বলেন, জাতীয় ৪ নেতার স্বপ্নকে সামনে রেখে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে আরও সুসংগঠিত করতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর চিন্তাতেও ছিল জাতীয় ঐক্য। এখন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সবাইকে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তুলবো আমরা।

তিনি বলেন, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার অনেকে চেষ্টা করেছে। কিন্তু কেউ পারেনি। স্বৈরাচারও চেষ্টা করেছে। আগামীতেও কেউ ধ্বংস করতে পারবে না। বাঙালিকে কেউ পরাজিত করতে পারেনি। জাতির পিতা সেটা প্রমাণ করেছেন।

এতে আরও বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ডাকসুর সাবেক ভিপি সুলতান মোহাম্মদ মুনসুর, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, নাসরিন সিদ্দিকী প্রমুখ।

কেএইচ/এইউএ/জেএইচ/আরআইপি

আরও পড়ুন