ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

‘সংলাপে না গেলে দোষ আমাদের ওপর পড়বে’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৯:৫৬ পিএম, ৩১ অক্টোবর ২০১৮

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপের আহ্বানে সরকারি দলের সাড়া দেয়া জাতি সন্দেহের চোখে দেখছে। অনেকে বলছেন, প্রধানমন্ত্রীকে বিশ্বাস করবেন না। বিশ্বাস বা অবিশ্বাসের ব্যাপার না। যদি আমরা সংলাপে না যাই, তাহলে দোষটা আমাদের ওপর পড়বে।’

তিনি বলেন, ‘নিয়মতান্ত্রিভাবে যত পথ আছে আমরা সব চেষ্টা করছি। ভোট ছাড়া গায়ের জোরে সরকার ক্ষমতায় টিকে আছে, এটা বুঝেও শেষ চেষ্টা করার জন্যই আমরা সংলাপে যাচ্ছি। আলোচনা হবে সাত দফার ভিত্তিতে। এই সাত দফার মধ্যে প্রথম দফাই হচ্ছে খালেদা জিয়ার মুক্তি।’

বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশ : শিক্ষক সমাজের ভাবনা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, আমরা একটু আশ্চর্যই হয়েছি প্রধানমন্ত্রী দাওয়াত দিয়েছেন, আমাদের সঙ্গে সংলাপ করবেন। প্রধানমন্ত্রী তার চিঠিতে লিখেছেন, ‘অনেক সংগ্রাম ও ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে আলোচনা করবেন।' বাংলাদেশে তো কোনো গণতন্ত্র নেই। তাহলে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত বলার অর্থ কী। গণতন্ত্র তো আওয়ামী লীগের বাক্সে বন্দী। আসলে বাক্সে বন্দী গণতন্ত্রও হয়তো কোনো হুমকির সম্মুখীন। সেই জন্যই তা রক্ষা করার ভাষা লিখেছেন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংলাপের নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, জাতিকে সারপ্রাইজ দেবেন। আর রাজনীতিতে সুবাতাস বইতে শুরু করবে। আমি বলি, তাহলে এতদিন যে বাতাস ছিল না তা তারা উপলব্ধি করেছেন। সরকার যদি সুবাতাসকে বন্ধ করে দেয়, গণতান্ত্রিক সব রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়, তারপরে কি হবে তার দায়দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে না? যখন সরকার পরিবর্তনের জন্য সব গণতান্ত্রিক পথ বন্ধ হয়ে যায় তখন গণঅভ্যুত্থান হয়। অতীতে আমাদের দেশের এর উদাহরণ আছে।’

গঠনতন্ত্রের ৭ নম্বর ধারা বাদ দিয়ে বিএনপির সংশোধনী গ্রহণ না করতে বুধবার নির্বাচন কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে আদেশ হয়েছে তা আরও ভয়ঙ্কর। বিএনপির নেতৃত্বে জিয়া পরিবারের কেউ যেন না থাকতে পারে সেই ইঙ্গিতপূর্ণ একটি আদেশ আদালত দিয়েছেন। এ ব্যাপারে বিস্তারিত আজ বলতে পারবো না। কারণ, আদেশের বিস্তারিত এখনও পড়ে দেখিনি।’

আন্দোলন আসছে

খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, বিএনপি ও জিয়া পরিবারকে আগামী নির্বাচন থেকে বাইরে রাখার ষড়যন্ত্র করছে সরকার। কারণ, তারা জিয়া পরিবারকে ভয় পায়। এই ষড়যন্ত্র জনগণ সফল হতে দেবে না। সারাদেশের মানুষ আজ একমত স্বৈরাচারের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। এটা করতে হলে নির্বাচনের মাধ্যমে পরিবর্তন সম্ভব। এ জন্য এখন প্রয়োজন একটি আন্দোলন। স্বৈরাচারী সরকারের কাছে টেবিলে বসে আলাপ-আলোচনা করে কিছু আদায় করা যাবে না। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হলে আন্দোলনের বিকল্প নেই। আগামী দিনে আন্দোলন আসছে।’

আন্দোলনে শিক্ষকদের পাশাপাশি দেশের সব শ্রেণিপেশার মানুষকে সম্পৃক্ত হওয়ার জন্য আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমন্বয় কমিটির আত্মপ্রকাশ

আলোচনা সভায় সারাদেশের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ-স্কুল-মাদরাসার কর্মরত জাতীয়তাবাদী মতাদর্শে বিশ্বাসী শিক্ষকদের নিয়ে ‘বাংলাদেশ শিক্ষক সমন্বয় কমিটি’ নামের একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ হয়। গঠন করা হয় ১১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় সেল।

এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক এবিএম ওবায়দুল ইসলামকে আহ্বায়ক এবং বাংলাদেশ শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়াকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।

বাকি সদস্যরা হলেন- অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান খান, অধ্যাপক রইছ উদদীন, অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, অধ্যাপক রজ্জব আলী, মাওলানা দেলোয়ার হোসেন, অধ্যাপক কাজী মাঈন উদ্দিন ও মো. জাকির হোসেন।

সভায় সংগঠনটির নেতারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে রাজপথে থাকার ঘোষণা দেন।

বিএনপির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন- অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান, অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম, অধ্যাপক নুরুল আমীন বেপারী, অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক আক্তার হোসেন খান, অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান খান, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, অধ্যাপক সদরুল আমীন, অধ্যক্ষ বাহাউদ্দিন বাহার, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম, ড. মোহাম্মদ ছবিরুল ইসলাম হাওলাদার, অধ্যক্ষ নিজাম উদ্দিন তালুকদার, অধ্যক্ষ শামসুল হক, অধ্যক্ষ আব্দুর রহমান, অধ্যাপক ইয়াকুব, শামিমুর রহমান শামীম, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক আব্দুল করীম, অধ্যাপক রইছ উদদীন প্রমুখ।

কেএইচ/জেডএ/এমএস

আরও পড়ুন