‘মুক্তির পথ’ হিসেবে এরশাদের ১৮ দফা ইশতেহার
>> বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী সাত দফা মানা সম্ভব নয়
>> জাতীয় পার্টি নির্বাচন পদ্ধতির পরিবর্তন চায়
>> পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে নির্যাতিত রাজনীতিবিদ আমি
>> দেশের প্রত্যেকটি নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন হবে কি হবে না, আমরা জানি না। একটি দল সাত দফা দিয়েছে। বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী, তা মানা সম্ভব নয়। এই অবস্থায় আগামী দিনগুলো নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের শঙ্কা রয়েছে।’
শনিবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত জাতীয় জোটের মহাসমাবেশে এসব কথা বলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা চাই। নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।’
‘জাতীয় পার্টি নির্বাচন পদ্ধতির পরিবর্তন করতে চায়’ উল্লেখ করে এরশাদ বলেন, ‘দেশের প্রত্যেকটি নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।’
‘আমি জোটের সবাইকে প্রার্থীদের তালিকা দিতে বলবো। তবে দলের চেয়ে প্রার্থীর যোগ্যতা বেশি হতে হবে।’ জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে মানুষের ভালোবাসা নিয়ে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় যাবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ জাতীয় পার্টিকে চায়, দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়। পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে নির্যাতিত রাজনীতিবিদ আমি, কোনো নেতা আমার মতো নির্যাতন সহ্য করেনি। ৯০ সালের পর একটি রাতও আতঙ্কে ঘুমাতে পারিনি। আতঙ্ক ছিল কখন আবার জেলে যেতে হয়।’
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে সাধারণ মানুষের সংশয় আছে। একটি দল সাত দফা দিয়েছে যা বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী মানা সম্ভব নয়। জাতীয় পার্টি সব নির্বাচনে অংশ নিয়েছে, আমার আজও নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। তবে আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই, সুষ্ঠু নির্বাচনের নিশ্চয়তা চাই। জোটবদ্ধভাবে আমরা ৩০০ আসনেই নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত।’
‘সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলের সমন্বয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করতে হবে’ বলেও জানান তিনি। দলকে সংগঠিত করতে, আরও শক্তিশালী করতে নেতাকর্মীদের নির্দেশও দেন এরশাদ।
‘আমি নতুনভাবে কর্মসূচি প্রণয়ন করেছি, এটাই হবে মুক্তির পথ। এটাই হবে আমাদের ইশতেহার।’ এরশাদের ঘোষিত ১৮ দফা ইশতেহার হলো- প্রাদেশিক সরকার গঠন করবো, নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তন করবো, পূর্ণাঙ্গ উপজেলা প্রতিষ্ঠা করবো, সংখ্যালঘুদের জন্য আসন সংরক্ষণ করবো, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করবো, ধর্মীয় মূল্যবোধ রক্ষা করবো, কৃষকের কল্যাণসাধনে কাজ করবো, সন্ত্রাস দমনে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবো, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে কার্যকর ব্যবস্থা নেবো, ফসলি জমি নষ্ট না হয় সে ব্যবস্থা করবো, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো, শিক্ষা পদ্ধতির সংশোধন করবো, স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণ করবো, শান্তি ও সহাবস্থানের রাজনীতি প্রবর্তন করবো, সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো, গুচ্ছগ্রাম পথকলি ট্রাস্ট পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবো, পল্লী রেশনিং চালু করবো, শিল্প ও অর্থনীতির অগ্রগতি সাধন করবো।
মহাসমাবেশে আরও বক্তৃতা করেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ, কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, ইসলামি ফ্রন্টের এম এ মান্নান, খেলাফত মজলিসের মাওলানা মাহফুজুল হক, প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি, এস এম ফয়সল চিশতী, ইসলামী ফ্রন্টের আল্লামা আবু সুফিয়ান, বিএনএর সেকান্দার আলী মনি, প্রেসিডিয়াম সদস্য ফখরুল ইমাম এমপি, বিরোধী দলের চিফ হুইপ নুরুল ইসলাম ওমর এমপি, রংপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, রুস্তুম আলী ফরাজী এমপি, জাতীয় ইসলামী মহাজোটের আলহাজ আবু নাছের ওহেদ ফারুক।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন- প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, এম এ সাত্তার, কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু এমপি, মো. আবুল কাশেম, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, আলহাজ গোলাম কিবরিয়া টিপু, সাহিদুর রহমান টেপা, অ্যাডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, নুর-ই-হাসনা লিলি চৌধুরী এমপি, সৈয়দ মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা, সুনীল শুভরায়, মীর আবদুস সবুর, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, মো. আজম খান, এ টি ইউ তাজ রহমান, মশিউর রহমান রাঙ্গা এমপি, সোলায়মান আলম শেঠ, আতিকুর রহমান আতিক, নাসরিন জাহান রতনা এমপি, আব্দুর রশীদ সরকার, মেজর (অব.) খালেদ আখতার, মজিবুর রহমান সেন্টু, ব্যারিস্টার দিলারা খন্দকার, আলহাজ শফিকুল ইসলাম সেন্টু, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, ইসলামী মহাজাটের কো-চেয়ারম্যান আবু হানিফ হৃদয়, বাংলাদেশ জাতীয় জোট বিএনএ’র মহাসচিব অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, ইসলামী ফ্রন্টের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা স উ ম আব্দুস সামাদ, যুগ্ম-মহাসচিব এম এ মোমেন, মাসউদ হোসাইন আল ক্বাদেরী।
চেয়ারম্যানের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য অধ্যক্ষ রওশন আরা মান্নান, রিন্টু আনোয়ার, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, কারী হাবিবুল্লাহ বেলালী, মেরিনা রহমান এমপি, সৈয়দ দিদার বখত, এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান, অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, সেলিম উদ্দিন এমপি।
ভাইস চেয়ারম্যান ড. আনোয়ার চৌধুরী জীবন, আলহাজ আব্দুস সাত্তার মিয়া, এম এ তালহা, জিয়াউল হক মৃধা এমপি, মাহজাবিন মোর্শেদ এমপি, মো. দেলোয়ার হোসেন, নুরুল ইসলাম মিলন এমপি, শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ এমপি, খন্দকার আব্দুস সালাম, এইচ এম এন শফিকুর রহমান, অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন, অ্যাডভোকেট একরামুল হক, অ্যাডভোকেট শামসুল আলম মাস্টার, হাজী আবু বকর, অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু, জহিরুল ইসলাম জহির, আরিফুর রহমান খান, আলমগীর সিকদার লোটন, ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীর, দেওয়ান আলী, নুরুল ইসলমা নুরু, অধ্যাপক মহসিন-উল-ইসলাম হাবুল, আমানত হোসেন আমানত, সরদার শাহজাহান, আলহাজ মো. এমরান হোসেন মিয়া, মো.শওকত চৌধুরী এমপি, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, মেহেরুন্নেছা খান হেনা, আতাউর রহমান সরকার, ডা. রুস্তুম আলী ফরাজী, শাহানারা বেগম এমপি, মামুনুর রশীদ এমপি, পীর ফজলুর রহমান মেজবাহ এমপি, আমির হোসেন ভুইয়া এমপি, আকরাম আলী এমপি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
যুগ্ম-মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি, গোলাম মোহাম্মদ রাজু, শফিকুল ইসলাম মধু, মোস্তাকুর রহমান মোস্তাক, মো. আলমগীর হোসেন, অ্যাডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন, আশরাফ সিদ্দিকী, জাহাঙ্গীর হোসেন মানিক, নুরুল ইসলাম ওমর এমপি, ইয়াহইয়া চৌধুরী এমপি, সালাউদ্দিন আহমেদ মুক্তি এমপি, আলহাজ মো. দিদারুল কবির দিদার, শফিকুল ইসলাম শফিক, জহিরুল আলম রুবেল, মো. নোমান মিয়া।
এইউএ/এমএআর/আরআইপি