জোটের পরিসর নিয়ে সিদ্ধান্ত পরে : কাদের
নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটে দলের সংখ্যা বাড়বে কিনা এ সিদ্ধান্ত আরও কিছুদিন পরে নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
বৃহস্পতিবার সকালে বনানী কবরস্থানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠপুত্র শেখ রাসেলের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ কথা জানান। শহীদ শেখ রাসেলের জন্মদিন উপলক্ষে এ শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগে জোটে নতুন কোনো দল আসবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমার সঙ্গে জাকের পার্টি দেখা করেছে। ৭ দলীয় একটা বাম জোট অফিসে এসে একটা আবেদন রেখে গেছে, তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে কাজ করতে চায়। বাহাদুর শাহের ইসলামী ফ্রন্টও আওয়ামী লীগের সঙ্গে নির্বাচনী ঐক্যে সামিল হতে চান। প্রতিদিনই দুই একটা আবেদন কিংবা দেখা করে তাদের আগ্রহের কথা প্রকাশ করছেন। তবে আমরা এ বিষয়ে এখনও মুখ খুলছি না, সবার কথা শুনছি। আমাদের নেত্রী দেশে ফিরে আসলে আমাদের কার্যনির্বাহী মিটিং এ বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে কাকে আমরা জোটে নেবো, কাকে নেবো না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের ১৪ দলীয় জোট রয়েছে। আবার জাতীয় পার্টিও রয়েছে, জাতীয় পার্টি আগে আমাদের সঙ্গে মহাজোট করেছিল। সবাইকে নিয়ে একটা নির্বাচনী মহাজোট হতে পারে, তবে সেটা নির্ভর করছে বাস্তব পরিস্থিতি ও মেরুকরণের ওপর। আমরা জোটের পরিসর বাড়াবো কি বাড়াবো না, অথবা আমরা জোটবদ্ধ নির্বাচন করবো কিনা সেটা নিয়ে আরও কয়েকদিন পরে সিদ্ধান্ত নেবো।’
বিকল্পধারা ও এলডিপি আপনাদের জোটে আসার সম্ভবনা রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘অলি আহমেদ সাহেবের সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল, কিন্তু তিনি আমাদের সঙ্গে নির্বাচন করতে চান- এমন কোনো অভিপ্রায় তিনি ব্যক্ত করেননি। বদরুদ্দোজা সাহেবের যুক্তফ্রন্ট নিজেরাই বোধহয় জোট করার চিন্তাভাবনা করছে বলে জানি। ভালোই তো ১৪টা জোট হয়েছে, ২০-২৫টা হলে অসুবিধা কি? এটাতো গণতন্ত্র। শতফুল ফুটতে থাকুক।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন আসছে, কাজেই রাজনীতিতে অ্যালায়েন্সের কাফেলা এগিয়ে চলছে। ২০০টা রাজনৈতিক দল ১৪টা অ্যালায়েন্স এরই মধ্যে হয়ে গেছে। এর মধ্যে আবার জোট ভাঙছে, গড়ছে। এই দুটো বিষয় সমানে চলছে। শেষ পর্যন্ত মেরুকরণ কোথায় গিয়ে থামে, তার ওপর নির্ভর করবে নির্বাচনের অ্যালায়েন্সের সমীকরণটা কীভাবে হবে।’
ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘এটা ২০০১ কিংবা ২০১৪ সাল নয়। আগামী ১৫-২০ দিনে বিএনপি যদি মনে করে, তারা ২০০১ সালের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে, তাহলে তারা বোকার স্বর্গে বাস করে। এটা সম্ভব নয়, আমাদের সবচেয়ে বড় আত্মবিশ্বাসের কারণ হলো বাংলাদেশের জনগণ এবার দলীয়ভাবে আমাদের সঙ্গে রয়েছে। দেশের জনগণ শেখ হাসিনার উন্নয়ন ও সৎ নেতৃত্বে আস্থাশীল।’
তিনি বলেন, ‘দেশের জনগণ যেহেতু আমাদের সঙ্গে রয়েছে, তাই নেতায় নেতায় যে ঐক্য, এদের মধ্যে অধিকাংশই হলো জনবিচ্ছিন্ন। জনবিচ্ছিন্ন নেতাদের ঐক্যে বাংলাদেশের জনগণের কিছু আসে যায় না। এ নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা আমাদের নেই। কারণ আমরা জানি জনগণ আমাদের সঙ্গে রয়েছে, আগামী নির্বাচন নৌকায় ভোট দেবে, শেখ হাসিনাকে ভোট দেবে এ ব্যাপারে আমরা দৃঢ়ভাবে আশাবাদী।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শহীদ শেখ রাসেলের আজকে জন্মদিবস, মৃত্যূর বেদনা সেই জন্মদিবসকে ছাপিয়ে যায়। আমাদের শপথ হবে বাংলাদেশের রাজনীতি থেকে হত্যা, সন্ত্রাস ও খুনের রাজনীতিকে নির্মূল করা। হত্যা, সন্ত্রাস ও খুনের রাজনীতি চিরতরে বন্ধ করতে হবে, এটাই আমাদের অঙ্গীকার।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুল মতিন খসরু, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আব্দুস সবুর, কার্যনির্বাহী সদস্য আখতারুজ্জামান, এসএম কামাল হোসেন প্রমুখ।
এইউএ/এমবিআর/আরআইপি