ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

‘ভালো কিছু পেতে চাইলে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০২:৫৬ পিএম, ০৭ অক্টোবর ২০১৮

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, যদি ভালো কিছু চান, যদি রক্ষা পেতে চান তাহলে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। জেলে যাওয়ার আগেই তিনি বলেছেন, আপনাদের মাফ করে দিয়েছেন।

জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে রোববার দুপুরে জিয়া সাংস্কৃতিক সংগঠন (জিসাস) আয়োজিত এক সনদ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের থাকার কথা থাকলেও তিনি না আসায় শামসুজ্জামান দুদু প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। দুদু বলেন, আমাদের নেত্রী জেলে, তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে জেলখানায় নেয়া হয়েছে। গতকাল আপনারা লক্ষ্য করেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার কষ্ট-কৃষ্ট একটি চেহারা। কিসের জন্য তিনি জেলে গেছেন? গণতন্ত্রর জন্য, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে সুরক্ষার জন্য তিনি জেলে গেছেন।

তিনি বলেন, মিথ্যা মামলার একটা সীমা থাকে, কিন্তু এই লজ্জাহীন সরকারের কোনো লজ্জা নেই, সবকিছু অতিক্রম করেছে। সেন্ট্রাল ব্যাংক, শেয়ার বাজার, সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক- এমন কোনো অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান নেই যেটা এই সরকার শেষ করে দেয়নি। তারা যখন বলে দুর্নীতি আর অর্থপাচারকারীরা এই দেশে যদি ক্ষমতায় আসে তাহলের দেশের ভবিষ্যৎ নাই। আমি হাসবো না কাঁদবো!

‘প্রধানমন্ত্রীকে বলি, অর্থপাচারকারী, লুটেরা যদি সরকারে থাকে তাহলে দেশের কোনো ভবিষ্যত নাই, আপনার সাথে এক মত। কিন্তু আপনার মতো এত বড় লুটেরা, অর্থপাচারকারী বাংলাদেশে আর দ্বিতীয়টা জন্মলাভ করেনি। শেখ হাসিনার সরকার যে লুটপাট ও হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করেছে, নিখোঁজ করেছে, গুম করেছে, এতো বড় ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি এর আগে অন্য কোনো সরকার করেনি।

সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে এ ছাত্রনেতা বলেন, দেশনেত্রীকে ছেড়ে দিন, যদি ভালো কিছু চান, যদি রক্ষা পেতে চান। বারবার আপনি এবং আপনার দলের সহকর্মীরা বলেছেন, সরকার পরিবর্তন হলে, এক লাখ, কেউ বলছেন দুই লাখ, কেউ বলছেন পাঁচ লাখ, কেউ বলছেন ২০ লাখ লোক মারা যাবে। কেন বলছেন মারা যাবে? কী এমন অপরাধ করেছেন আপনারা? শেখ মুজিবের মৃত্যুর পরে যারা ক্ষমতা নিয়েছিল তারা কি এক লাখ লোক মেরে ফেলেছে? যারা শহীদ জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর ক্ষমতায় এসেছিল, তারপর কি দুই লাখ লোক মারা গিয়েছিল? হ্যাঁ, এখন যে বাস্তব, ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি করেছেন, তা থেকে একজন মানুষ আপনাদের উদ্ধার করতে পারে তার নাম দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি তো জেলে যাওয়ার আগেই বলেছেন, আপনাদের মাপ করে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, তখন এই কথা আপনাদের পছন্দ হয়নি। খুব উপহাস করেছেন। যে তিনি মাফ করার কে? প্রধানমন্ত্রী আপনি যেভাবেই ক্ষমতায় দখল করে থাকেন না কেনো, আপনার সুস্থতা, আপনার রক্ষাকবচ বেগম খালেদা জিয়া। তাকে ছাড়েন, মুক্ত করেন। ভালো নির্বাচন চান বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়েন।

জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, বারবার বলেছেন (প্রধানমন্ত্রী), বিএনপি যদি নির্বাচনে না আসে, কে বলেছে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না? একবারও আমরা বলেছি আমরা নির্বাচনে যাব না? আমরা বলেছি নির্বাচনে যাব, কিন্তু পাশে খালেদা জিয়াকে চাই। আমরা বলেছি, নির্বাচনে আমরা যাব আপনাকে পদত্যাগ করতে হবে, পার্লামেন্ট ভেঙ্গে দিতে হবে, সাত দফা মেনে নেন। একবারের জন্যও বলিনি যে, নির্বাচনে যাব না। নির্বাচনে আপনারই যেতে চান না, ভালো নির্বাচন আপনি চান না। চান না বলেই নির্বাচনের সব পক্রিয়ার সমস্ত পথ আপনি বন্ধ করে দিয়েছেন। এমন কোনো ব্যক্তি, কর্মী, সমর্থক, নেতার বিরুদ্ধে কেস দেয়া হয়নি, যার নামে মামলা দিয়ে জেলে নেয়ার পক্রিয়া করা হয়নি। এটাতো স্বাভাবিক নির্বাচনের পথ নয়। নেতারা এলাকায় যাবে, যেতে পারছেন না। নির্বাচনী প্রক্রিয়া আপনারা ধ্বংস করে দিয়েছেন।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা মনে মনে তৈরি হন, পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেন। ডাক আসবে। সেই ডাকে আমাদের রাস্তায় নামতে হবে। রাজপথ ছাড়া, এই সরকারের মুখোমুখি হওয়া ছাড়া আইন দিয়ে কিছু হবে না। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রশাসনকে যদি সহযোগিতা করতে চাই, তাহলে রাস্তায় নামতে হবে।

‘শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, এ কথা পাগল ছাড়া আর কেউ বিশ্বাস করে না। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না, হতে দেয়া হবে না।’

আয়োজক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আবুল হাশেম রানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস প্রমুখ।

কেএইচ/এমএআর/এমএস

আরও পড়ুন