‘জোট গঠনের অন্তরালে ষড়যন্ত্র রয়েছে’
প্রবীণ আইনজীবী ড. কামাল হোসেনের উদ্যাগে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া আবেদন হারিয়ে ফেলেছে বলে মনে করছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা। তাদের মতে, তারা (জাতীয় ঐক্যের নেতারা) যে সরকারের বিরুদ্ধে, নির্বাচনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তা ধীরে ধীরে স্পষ্ট হতে শুরু করেছে।
রাজনীতিতে নতুন জোট গঠনকে সাধুবাদ জানালেও বিএনপি নেতাদের উপস্থিতি নাগরিক সমাবেশ থেকে ঘোষিত দাবির প্রেক্ষিতে এমন অভিমত ব্যক্ত করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা।
ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে গতকাল শনিবার রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার’ উদ্যাগে নাগরিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। নাগরিক সমাবেশে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ।
ঘোষণায় বলা হয়, সরকার আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন পুর্নগঠন করে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে এবং তফসিল ঘোষণার পূর্বে বর্তমান সংসদ ভেঙে দেবে।
আরও বলা হয়, ন্যায় বিচারের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে অগ্রাহ্য, ব্যহত ও অকার্যকর করে অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার আইনগত ও ন্যায় সঙ্গত অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ছাত্র-ছাত্রীসহ সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আনীত মিথ্যা মামলাসমূহ প্রত্যাহার করতে হবে এবং গ্রেফতারদের মুক্তি দিতে হবে। এখন থেকে নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা যাবে না।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের অপর সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ বলেন, নাগরিক সমাবেশ থেকে জাতির কাছে একটা বার্তা পৌঁছে গেছে যে জোট গঠনের অন্তরালে ষড়যন্ত্রও রয়েছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, ড. কামাল হোসেন কখনই শুভবুদ্ধির রাজনৈতিক চর্চা করতে পারে না। তার নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া ও নাগরিক সমাবেশে বিএনপির নেতাদের উপস্থিতি ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জাতির কাছে এ বার্তাই পৌঁছে দিয়েছে। জোট গঠনের তোড়জোড়কে আমরা সহজভাবেই দেখেছি। আজকের পরে বিষয়টি জাতিকে ভাবিয়ে তুলেছে, সঙ্গে আওয়ামী লীগকেও।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, নাগরিক সমাবেশ থেকে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি তুলে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া জাতির কাছে আবেদন হারিয়ে ফেলেছে। তারা যে সরকারের বিরুদ্ধে, নির্বাচনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তা ধীরে ধীরে স্পষ্ট হতে শুরু করেছে।
এছাড়া ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের গতকাল শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘নেতায় নেতায় ঐক্য হয়েছে। জনগণের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এ ঐক্য জাতীয় নয়, এ ঐক্য জাতীয়তাবাদী, এ ঐক্য সাম্প্রদায়িক। এ ঐক্য কোনো কাজে আসবে না। আওয়ামী লীগকে ছাড়া কোনো জাতীয় ঐক্য হতে পারে না।’
জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া আয়োজিত নাগরিক ওই সমাবেশ থেকে আগামী ১ অক্টোবর থেকে সারাদেশে সভা-সমাবেশ করার ঘোষণাও দেয়া হয়েছে।
এইউএ/আরএস/এমএস