নির্বাচনে জাতিসংঘের পরিদর্শক চান বি. চৌধুরী
‘বাংলাদেশের সেনাবাহিনী শান্তিমিশনে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কাজ করছে’ উল্লেখ করে বিকল্প ধারা বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী (বি. চৌধুরী) প্রশ্ন রেখেছেন, ‘দেশের শান্তির জন্য কেন তারা কাজ করবে না, সেনাবাহিনীকে নির্বাচনের এক মাস আগেই নামাতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ থেকে পরিদর্শক আনতে হবে। তারা নির্বাচন দেখবে। নির্বাচন শেষে তারা এক মাস এ দেশে অবস্থান করবে।’
শনিবার বিকেলে রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে ‘জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া’র অংশ হিসেবে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এদিন বেলা ৩টার দিকে সমাবেশ শুরু হলেও বি. চৌধুরীকে দেখতে না পেয়ে উপস্থিত অনেকের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়, হয়তো তিনি আসবেন না। যদিও মঞ্চ থেকে বারবার বলা হয়, তিনি আসবেন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে তিনি সমাবেশে যোগ দেন এবং প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেন।
বি. চৌধুরী বলেন, ‘এখনই আমাদের রুখে দাঁড়াবার সময়, প্রতিরোধের সময়, দাবি আদায়ের সময়। আমরা সব রাজবন্দির মুক্তি চাই, এই সরকারের পতন চাই। ভবিষ্যতে এই ধরনের সরকার যেন আর না আসে, সে জন্য আমাদের রক্ষাকবচ তৈরি করতে হবে। আমরা গণতান্ত্রিক সরকার চাই। শান্তি-সুখের বাংলাদেশ গড়তে চাই। এ জন্য জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য।’
সরকারের কড়া সমালোচনা করে সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা দিয়ে ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) কিনছেন। দেশের মানুষ এসব মানবে না।’
তিনি বলেন, ‘টানা ১০ বছর দেশ শাসন করছেন। এই ১০ বছরে গঙ্গা-তিস্তা থেকে এক ফোঁটা পানিও আনতে পারেননি। আপনারা বলেন, ভারত আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র। ভারত যখন আমার বন্ধুরাষ্ট্র, তখন আমার নদীতে পানি নেই কেন? বন্ধুরাষ্ট্র থেকে পানি আনতে না পারলে দেশ চালাবেন কীভাবে?’
বিএনপি চেয়ারপারসন কারাবন্দি খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সরকারের টালবাহানার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আমি যাকে মনোনীত করিনি, তিনি আমার চিকিৎসা করতে পারেন না। খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা হলো। সেই রিপোর্ট কেন তার মনোনীত ডাক্তারকে দেখনো হলো না?’
সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে বি. চৌধুরী আরও বলেন, ‘মেধাবী ছাত্ররা তাদের দাবি জানাতে রাস্তায় নামে। কেন তাদের হাতুড়ি দিয়ে পেটালেন? চাপাতি দিয়ে কোপালেন? এসব প্রশ্নের জবাব দিতে হবে। সরকারের একটা মন্ত্রণালয় দেখান, যে মন্ত্রণালয় ঘুষ ছাড়া চলে না।’
‘প্রধানমন্ত্রী, আপনাকে কোটি টাকা চুরি-লুটপাটের জবাব দিতে হবে।’
স্বাধীন দেশে সমাবেশে কেন পুলিশের অনুমতি নিতে হবে- এমন প্রশ্ন রেখে তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘পুলিশ-র্যাবকে কলঙ্কিত করেছেন। আর আপনাদের তোয়াক্কা করবো না। স্বৈরাচার এরশাদ, ইয়াহিয়াকেও তোয়াক্কা করিনি।’
গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সচিব আ ব ম মোস্তফা আমীন।
সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, ড. আব্দুল মঈন খান, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের চেয়ারম্যান নূর হোসেন কাশেমী, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ প্রমুখ।
কেএইচ/এমএআর/আরআইপি