ভিডিও EN
  1. Home/
  2. রাজনীতি

এমপি হতে চান উপজেলা চেয়ারম্যানরাও

সায়েম সাবু | প্রকাশিত: ১১:৩৩ পিএম, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সব ঠিক থাকলে অক্টোবরেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা। নির্বাচন ঘিরেই রাজনীতির আকাশে এখন নানা রঙয়ের খেলা। সে রঙ বদলাচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে। নির্বাচন নিয়ে সরকারি দল আওয়ামী লীগ সাংবিধানিক নিশ্চয়তার কথা বলে আসলেও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কথা বলছেন বিশ্লেষকদের কেউ কেউ।

চলমান রাজনীতি অনিশ্চয়তার ঘোরটেপে আটকা থাকলেও ভোটের মাঠে চলছে জোর প্রচারণা। সরকারি দল আওয়ামী লীগ প্রচার-প্রচারণায় মাঠ দখলে রেখেছে শুরু থেকেই। সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা বিরোধী দল জাতীয় পার্টিও প্রচারে রয়েছে উত্তরের জেলাগুলোতে। দোটানায় থাকা বিএনপি নানা কৌশলে নির্বাচনী গণসংযোগে রয়েছে। আর জামায়াত দৃশ্যত মাঠছাড়া থাকলেও রাজনীতির গোপন গলিতে হাঁটছে আপন শক্তিতেই।

রাজনীতির কেন্দ্রে এখন জাতীয় নির্বাচন। আর সে কেন্দ্রে আসতে চাচ্ছেন উপজেলা চেয়ারম্যানরাও। দলীয় পরিচয়ে নির্বাচিত হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানদের অনেকেই এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে চাচ্ছেন। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের হয়ে অন্তত শতাধিক উপজেলা চেয়ারম্যান একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চান বলে আলোচনা হচ্ছে। যেসব উপজেলা চেয়ারম্যানের সাংগঠনিক পরিচয় রয়েছে, তাদের অনেকেই নির্বাচনী হাওয়ায় সক্রিয়। তৃণমূলে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

রঙিন পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে দিচ্ছেন তাদের নির্বাচনী এলাকা। দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে রীতিমতো মহড়া দিচ্ছেন তারা। কেন্দ্রীয় নেতাদেরও আশীর্বাদ নিচ্ছেন নিয়মিত। কোথাও স্থানীয় এমপির সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি করেই প্রকাশ্যে প্রচার চালাচ্ছেন উপজেলা চেয়ারম্যানরা। কোথাও ভিন্ন কৌশলে। আবার দলের আদেশ অমান্য করে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন তারাও দলের করুণা পেয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চান।

নির্বাচনী প্রচারণায় পিছিয়ে নেই বিএনপি-জামায়াতের উপজেলা চেয়ারম্যানরাও। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে বিএনপি-জামায়াতের যারা অংশ নিয়েছিলেন তাদের অনেকেই এখন এমপি হতে চাচ্ছেন। নির্বাচনী বাতাসে দোলাচালে থাকা বিএনপি-জামায়াতের নেতাদের মধ্যে স্থানীয় সরকারে বিজয়ীরাই খানিক মাঠে থাকার সুযোগ পেয়েছেন এই সময়ে। আসন্ন নির্বাচনে এই বাড়তি সুবিধাই কাজে লাগাতে চান তারা।

উত্তরের জেলা নীলফামারী-৪ আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে চান সৈয়দপুরের উপজেলা চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমেনিন। এই আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির। মোখছেদুল মোমেনিন নৌকা প্রতীকে ব্যানার-পোস্টার লাগিয়ে ভোট চাচ্ছেন চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকেই। এই আসনে নৌকা প্রতীকে ভোট চেয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন আরও কয়েকজন।

মোখছেদুল মোমেনিন বলেন, আমি মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। আমি এলাকার মানুষের কাছে পরীক্ষিত। তৃণমূলের রাজনীতি থেকে আমি ভীত গড়েছি। সংসদে যেতে পারলে এলাকার আরও উন্নয়ন করতে পারবো। দলের প্রতি বিশ্বাস এবং আস্থা রেখেই প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি।

কথা হয়, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বাবুলের সঙ্গে। পাটগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। সাবেক ছাত্রনেতা রুহুল আমিনের পারিবারিক পরিচয়ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত। লালমনিরহাট-১ আসন থেকে গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন তিনি। পরে দলের সিদ্ধান্তে প্রত্যাহার করেছিলেন প্রার্থিতা। এবারও মনোনয়ন প্রত্যাশা করে ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন পরপর দু’বার নির্বাচিত এই চেয়ারম্যান।

রুহুল আমিন বলেন, আমি সরকারের উন্নয়নের সারথী। পাটগ্রামকে আওয়ামী লীগের হয়ে ঢেলে সাজিয়েছি। এখানকার ইউনিয়ন পরিষদসহ স্থানীয় সরকারের সকল প্রতিনিধির সঙ্গে আস্থার সম্পর্ক আমার। বর্তমান সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেনও আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতা। তার সঙ্গেই এলাকার উন্নয়নে শরিক হয়েছি।

তিনি বলেন, আমি কাউকে প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করে রাজনীতি করি না। নিজের যোগ্যতা বলে মানুষের কাছাকাছি যেতে পেরেছি। মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য সীমানা বাড়াতে চাই। আমার ব্যাপারে কেন্দ্রও অবগত। মনোনয়ন অবশ্যই চাইবো। তবে দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।

সংসদ নির্বাচন করার প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নেমেছেন নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার চেয়ারম্যান আলহাজ সৈয়দ আলী। স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও উপজেলা নির্বাচনে জামায়াতের সমর্থন নিয়ে বিজয়ী হন তিনি।

জামায়াতের এই নেতা বলেন, আমি আমার প্রচারণা শতভাগ চালিয়ে যাচ্ছি। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকবো। দল বা জোট যদি মেনে নির্বাচনে যাব, তাহলে আমিও ইতিবাচক সাড়া পাবো বলে বিশ্বাস রাখি।

নির্বাচনে অংশ নিতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার চেয়ারম্যান আলহাজ শওকত সিকদার। তিনি সখীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। আওয়ামী লীগের সমর্থন নিয়ে দু’বার উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন শওকত।

তিনি বলেন, গত বুধবার রাতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। আমি আশাবাদী টাঙ্গাইল-৮ আসন থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে। সখীপুর-বাসাইলের সাধারণ মানুষের আবেগের জায়গায় অবস্থান করতে পেরেছি। সাধারণ মানুষ আর দলের নেতাকর্মীরাই আমার ভরসাস্থল। আশা করি, মনোনয়ন পেলে সকল প্রতিকূলতা পার করে বিজয়ী হতে পারবো।

এএসএস/এমআরএম/বিএ

আরও পড়ুন