সামান্য কয়টা টাকার লোভ সামলাতে পারেনি খালেদা!
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া কি কারণে কারাগারে গেছেন? এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে। এমনিতে কারো অর্থ-সম্পদ আত্মসাৎ করা পাপ আর সেটা যদি এতিমের অর্থ-পয়সা হয় তাহলে তো মহাপাপ। বেগম জিয়া সামান্য কয়টা টাকার লোভ সামলাতে পারেনি!
শুক্রবার রাজধানীর শেরে-ই-বাংলা নগরস্থ ইসলামিক ফাউন্ডেশনে আয়োজিত ‘৫ দিনব্যাপী রিফ্রেসার্স প্রশিক্ষণ কোর্স’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, তারা মিথ্যাচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। সরকারের প্রতিহিংসার কারণেই বেগম জিয়া কারাগারে এমনটা প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
খালেদা জিয়ার দুর্নীতি আদালতে প্রমাণিত হয়েছে বলেই তিনি দণ্ড ভোগ করছেন মন্তব্য করেন হানিফ।
বিএনপি নেতারা এটা নিয়ে মিথ্যাচার করছে অভিযোগ করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, বিএনপি নেতারা অনেক সময় বলেন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য তার বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। আপনাদের জানা উচিত, এই (জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা) মামলা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে দেয়া হয়েছিল। আওয়ামী লীগের আমলে নয়। আর দণ্ড দিয়েছেন আদালত, সরকার নয়।
বেগম খালেদা জিয়া এবং তার আইনজীবীরা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা চলাকালে বার বার সময়ক্ষেপণ করছে অভিযোগ করেন হানিফ।
তিনি আরও বলেন, মামলা চলাকালে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা ১৪৮ বার সময়ক্ষেপণ করেছেন। দশ বছর পরে এসে তিনি আদালতে দোষী প্রমাণিত হয়েছেন। দণ্ড দিয়েছেন আদালত।
হানিফ বলেন, কারাগারের পাশে আদালত হওয়ার পরও অসুস্থতা দেখিয়ে বেগম জিয়া ৬ মাস আদালতে যান না। যেহেতু তিনি অসুস্থ তার সুবিধার কথা বিবেচনা করেই কারাগারে আদালত বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর তিনি কি করলেন? আদালতে গিয়ে বলে আসলেন, আমি এখানে আর আসবো না!
এখন বিএনপি এটি নিয়েও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, বিএনপি এখন দেখাতে চাইছে এটা সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে সংবিধান পরিপন্থীভাবে আদালত কারাগারে স্থাপন করা হয়েছে।
তিনি প্রশ্ন রাখেন, আপনাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা মেজর জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে এই কারাগারের মধ্যেই আদালত বসিয়ে কর্নেল তাহেরকে ফাঁসি দিয়েছিলেন তাহলে সেটাও কি অসাংবিধানিক ছিল। একইভাবে আরও বারোশো মুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসারকে মেজর জিয়া এই কারাগারের মধ্যে আদালত বসিয়ে বিচার করে ফাঁসি দিয়েছিলেন। তাহলে সেটা কি সংবিধান পরিপন্থী ছিল? আলেম সমাজের মাধ্যমে এ প্রশ্ন আমি বিএনপি নেতাদের কাছে রেখে গেলাম।
খালেদা জিয়া তার মুক্তি চাইলে একমাত্র আইনি প্রক্রিয়ায়ই সেটা সম্ভব বলে মন্তব্য করে হানিফ বলেন, বেগম জিয়া, আপনি যদি নিজেকে নির্দোষ-ই ভাবেন, তাহলে কেন আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারেন না? বিএনপির বড় বড় ব্যারিস্টার-আইনজীবীরা কেন, তাদের নেত্রীকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারছেন না।
আদালতে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণে ব্যর্থ হলে খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা ভিক্ষার পরামর্শ দেন আওয়ামী লীগের এ নেতা।
তিনি বলেন, নির্দোষ প্রমাণে ব্যর্থ হয়ে যদি রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করেন, তিনি ক্ষমা পেতে পারেন। এছাড়া আর কোনো পথ নেই।
খালেদা জিয়ার সাজা প্রসঙ্গে বিএনপি নেতাদের ছড়ানো মিথ্যাচারে জনগণের মধ্যে যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে তাতে আলেম সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান হানিফ। সমাজের মানুষ যেহেতু আলেমদের শ্রদ্ধার চোখে দেখে তাই তারা যেন সত্য তুলে ধরে এমন প্রত্যাশা রাখেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক শামীম মোহাম্মদ আফজাল এর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইফা বোর্ড অব গভনর্স সিরাজ উদ্দিন আহমদ, ইফা সচিব কাজী নুরুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. বাহাউদ্দিন প্রমুখ।
এইউএ/এমআরএম/পিআর