‘ইভিএম কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়’
আরপিও সংশোধন এবং ইভিএম সংশোধন থেকে বিরত থাকতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘এ নিয়ে অগ্রসর হলে জনগণের আদালতে বিচার হবে।’ তিনি বলেন, ১০০ আসনে ইভিএম পদ্ধতি চালু করে ভোট চুরির জন্য এই পদ্ধতি গ্রহণ করা হচ্ছে। তাই ইভিএম কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত ‘তড়িঘড়ি করে আরপিও সংশোধনের উদ্যোগ এবং বিতর্কিত ইভিএম পদ্ধতি চাপিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্রে নাগরিক শঙ্কা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
স্বাধীনতা ফোরাম নামের একটি সংগঠন এ সভার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ। এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কায়সার কামাল, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহামুদুর রহমান মান্না, চিত্র নায়িকা শায়লা প্রমুখ।
মোশাররফ বলেন, ‘২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির প্রহসনের পুনরাবৃত্তি আর বাংলাদেশে করা সম্ভব হবে না তাই সরকার কৌশল পরিবর্তন করে এই ১০০ আসনে ইভিএম পদ্ধতি চালু করে ভোট চুরির জন্য এই পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। অতএব ইভিএম এবং আরপিও পরিবর্তনের বিষয়ে তাদের হীনউদ্দেশ্য সম্পর্কে আমরা পরিষ্কার।’
তিনি বলেন, এটা হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বিনাভোটের বর্তমান সরকারকে দীর্ঘায়িত করার উদ্দেশ্যে। ইভিএম কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। যেসব দেশে ইভিএম প্রচলন করা হয়েছিল, সেই সব দেশ থেকেও আজকে ইভিএম উঠে গেছে। যারা এখনও আলোচনা করছেন তারাও এই ইভিএম তুলে নেয়ার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছেন। যেমন, ভারতে কিছু সীমিতভাবে ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছিল সেখানেও আজকে আপনারা জানেন এই ইভিএম থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সেখানেও অনেক সোচ্চার কথাবার্তা হচ্ছে। আমরা পত্রিকায় দেখলাম কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে ভারতে আর ইভিএম ব্যবহার করা হবে না।’
আরপিও সংশোধন প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘ওয়ান ইলেভেনের যে জরুরি সরকার সে সময় তাদের যে উদ্দেশ্য লক্ষ্য নিয়ে তারা আরপিওতে সংশোধনী এনেছিল। প্রথমে মনে হয়েছিল সিগনিফিকেন্ট না। কিন্তু আমাদের অভিজ্ঞতা হলো প্রশাসন যন্ত্র যাকে চায় ভোটের তোয়াক্কা না করে তাকে যেন পাশ করিয়ে দেয়া যায় সেজন্য এটা করা হয়েছিল। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আরপিও সংশোধন কোনোক্রমে সুষ্ঠু ভোটের জন্য নয়। ওয়ান ইলেভেনের সরকার কারচুপির জন্য এটা করেছিলেন। এখন সেটা প্রতারণা করা যাবে না।’
মোশাররফ বলেন, ‘সুুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ভালো করেই জানে গোয়েন্দা সংস্থাও রিপোর্ট দিচ্ছে যে তারা ৩০টির আসন পাবে না। বেশিরভাগ মন্ত্রীর জামানত হারাবে। অতএব আওয়ামী লীগ আতঙ্কিত। সেই জন্য তারা একটা কৌশলের ওপর আরেকটা কৌশল গ্রহণ করছে।’
বিএনপির জাতীয় ঐক্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘জাতীয় ঐক্য হলে আওয়ামী লীগ যত কৌশল করুক না কেন জন জোয়ারে ভেসে যাবে। জাতীয় ঐক্যের প্রক্রিয়া অনেক দূর অগ্রগতি হয়েছে। প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পৃক্তদের অভিনন্দন। জাতীয় ঐক্য গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সুশাসন প্রতিষ্ঠায় যুগপত আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচার সরকারের হাত থেকে জনগণকে রক্ষা করবে। এই জাতীয় ঐক্যকে বাধাগ্রস্ত করতে ষড়যন্ত্র হয়েছে তা উপেক্ষা করে জাতীয় ঐক্যেও সূয্যদ্বয়ের আভাসে আমারা আশান্বিত। ’
কেএইচ/জেএইচ/জেআইএম