কূটনীতিকদের বিস্ময়, এই বাড়িতে থাকতেন বঙ্গবন্ধু
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধানমন্ডি-৩২ নম্বরের বাড়িতেই থাকতেন এ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ৪২টি দেশের কূটনীতিকরা।
শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডি-৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত বাড়িতে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক উপ-কমিটির সঙ্গে কূটনীতিকদের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে কূটনীতিকরা এ বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক উপ-কমিটির নেতারা ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে কেন হত্যা করা হয় সে বিষয়ে কূটনীতিকদের ধারণা দেন। এই হত্যার সঙ্গে জিয়াউর রহমান জড়িত বলে কূটনীতিকদের কাছে অভিযোগ করেন নেতারা।
জানা গেছে, বিদেশে পালিয়ে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে কূটনীতিকদের সহযোগিতা কামনা করেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। ঘটনার বিশ্লেষণ করে বিদেশিদের তিনি বলেন, এই ঘটনায় কীভাবে জিয়া জড়িত ছিলেন।
সংসদ সদস্য ফজলে নূর তাপস ১৫ আগস্টের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিবরণ তুলে ধরে বলেন, ইতিহাসের জঘন্যতম এই হত্যাকাণ্ড এটি। এই হত্যাকাণ্ড একটি রাজনৈতিক। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করাই ছিল এ হত্যাকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য।
এই হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন জিয়াউর রহমান দাবি করে তাপস বলেন, মাত্র তিন বছর বয়সে আমার মা আরজু মনি, বাবা শেখ ফজলুল হক মনির রক্তাক্ত দেহ মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেছি। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তা কারবালার হত্যাকাণ্ডকেও হার মানায়।
এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন তাপস। বৈঠকে উপস্থিত কূটনীতিকদেরও চোখ ভিজে উঠে তাপসের বক্তব্য শুনে।
জানা গেছে, কূটনীতিকদের উদ্দেশ্য আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের পরবর্তী পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলে, ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ কারা করেছিল, কেন করেছিল এগুলো বিশ্লেষণ করলে পরিষ্কার হয়ে যায় এই হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য কী? জিয়ার সম্পৃক্ততাও পাওয়া যায়।
বৈঠকে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক ও উপকমিটির সদস্য সচিব শাম্মী আহমেদ ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে কারা বেনিফিশিয়ারি তা তুলে ধরেন। পরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর কূটনীতিকদের ঘুরে দেখান উপ-কমিটির নেতারা। বৈঠকে ১৫ আগস্টের উপর নির্মিত বিভিন্ন ভিডিও চিত্র, এই হত্যাকাণ্ডের ওপর দেশি-বিদেশি বিভিন্ন লেখা, তদন্ত রিপোর্ট কূটনীতিকদের হাতে তুলে দেন।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভুটান, ভারত, চীনসহ ৪২টি দেশের কূটনীতিক ও তাদের প্রতিনিধি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ বলেন, ৪২টি দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি। এই বৈঠকে রাজনৈতিক কোনো আলাপ হয়নি। ১৫ আগস্টের পুরো ঘটনা সম্পর্কে বিদেশি কূটনীতিকরা বেশি কিছু জানেন না। তিনি বলেন, তাদের কাছে মূল ফ্যাক্ট তুলে ধরার চেষ্টা করেছি এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে।
শাম্মী বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যে জিয়া জড়িত ছিল খুনি ফারুক-রশীদ দেশি-বিদেশি সাক্ষাতকারে স্বীকার করেছেন, সেসব ডকুমেন্টস তাদের কাছে সরবরাহ করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু এই বাড়িতে থাকতেন তা জেনে কূটনীতিকরা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বলে জানান আওয়ামী লীগের এই আন্তর্জাতিক সম্পাদক।
এইউএ/জেএইচ