মানুষ সরকারের পতনের অপেক্ষায় : রিজভী
যে কোনো সময় সরকারের পতন হবে উল্লেখ করে বিএনিপর সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ বলেছেন, ‘মানুষ সরকারের পতনের অপেক্ষায় রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নাটক করে ইনিয়ে বিনিয়ে উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপালে মানুষ তা বিশ্বাস করবে না। ১/১১ এর কথা বলে পার পাবেন না।’
বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী আহমেদ।
‘বিএনপি আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে বিদেশিদের কাছে নালিশ করছে’ ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে রিজভী বলেন, ‘ওনারা যে নালিশ দেন, ওটা কীসের নালিশ? আওয়ামী লীগ আগেও যখন বিরোধী দলে ছিল তখন তারা নালিশ দিয়েছিল, আমরা দেখেছি।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কী করে শহীদ মিনার থেকে মিছিল নিয়ে কূটনৈতিক পাড়ায় গিয়েছিল আমরা তা ভুলে যাইনি। ক্ষমতায় থেকেও তো ওনারা নালিশ দেন।’
তিনি বলেন, ‘মানুষ যখন গণবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, পায়ের নীচে থেকে যখন মাটি সরে যায় তখন প্রলাপ বকে। ওবায়দুল কাদের সাহেবরা এখন প্রলাপ বকছেন।’
রিজভী বলেন, ‘তারা শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে পারছেন না বলেই এখন প্রলাপ বকতে শুরু করেছেন, গুজবের আশ্রয় নিয়েছেন। ক্ষমতাসীনরা তাদের নিজস্ব মিডিয়া দিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে নোংরা অপপ্রচারে মেতে উঠেছেন। ছাত্র আন্দোলনের সহিংসতায় বিএনপিকে জড়াতে তারা কুৎসিত অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘গত ৬ আগস্ট দৈনিক জনকণ্ঠে একটি ছবি ছাপা হয়েছে, যা ২০১২ সালের ২৫ জানুয়ারি দৈনিক ভোরের কাগজে ছাপা হয়েছিল। ছবিতে দেখানো হয়েছে ছাত্রদলের এক নেতার নাম। আসলে সে ছাত্রদলের নেতা নন, এটা ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের ছবি। ছবির সবাই ছাত্রলীগ করতো।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘জনগণকে বিভ্রান্ত করতেই বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনার জন্য সরকারি প্রোপাগান্ডা মেশিন দিনরাত কাজ করছে। যার নজির গত ৬ আগস্ট জনকণ্ঠে দেখানো হয়েছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘প্রতিনিয়ত মানুষ বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হচ্ছে। রাজনীতি ও ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। ন্যায় বিচারের বাণী গুমরে গুমরে কাঁদছে। এই অরাজক পরিস্থিতিকেই কি ওবায়দুল কাদের শান্তিময় পরিবেশ বলতে চাচ্ছেন?’
রিজভী বলে, ‘গতকাল সিইসি বলেছেন নির্বাচনে অনিয়ম হবে না, সে নিশ্চয়তা দেয়া যায় না। কেন নিশ্চয়তা দেয়া যায় না? কারণ ওবায়দুল কাদের সাহেবরা সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ পরিবেশ ধ্বংস করে দিয়েছে। ’
তিনি বলেন, ‘চলমান ছাত্র আন্দোলন সমাধানহীন সরকারি সহিংসতার ছোবলে রক্তাক্ত। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি মেনে না নিয়ে এখন অবলম্বন করা হয়েছে নির্যাতনের পথ। দেখানো হচ্ছে নানা ধরণের নাটক ও প্রহসন।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার স্কুল-কলেজ পড়ুয়াদের আন্দোলনে বিএনপিকে জড়াতে প্রথম থেকেই হীন কৌশল এঁটেছে। আমি এসব মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আটকৃতদের মুক্তি দাবি করছি।’
এ সময় তিনি বলেন, ‘দেশের স্বনামধন্য আলোকচিত্রী দৃকের পরিচালককে গ্রেফতার করে নির্যাতন করা হয়েছে। বাধ্য হয়ে এখন তাকে হাসপাতালে নিতে বাধ্য হয়েছে। তাকে রক্তাক্ত করা হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জোম হোসেন আলাল, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, সহ-দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কেএইচ/এমএমজেড/এমএস