শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় ক্ষমতাসীনদের অভিযুক্ত করেছে বিএনপি
জিগাতলাসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার জন্য আওয়ামী লীগকে দায়ী করেছে বিএনপি। শনিবার রাতে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, আজ (শনিবার) দুপুরের পর থেকে জিগাতলা, মিরপুরসহ বিভিন্ন স্পটে ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর দফায় দফায় হামলা করা হয়েছে। নিরাপদ সড়কের দাবিতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের এই শান্তিপূর্ণ এবং শিক্ষণীয় আন্দোলনের ওপর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা অমানবিক আক্রমণ চালিয়ে শিশু-কিশোরদেরকে মারাত্মকভাবে আহত করেছে। আমরা এ ধরনের কাপুরুষোচিত হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
‘ছাত্র-ছাত্রীরা অভিযোগ করেছে যে, সম্পূর্ণ বিনা উস্কানিতে ধানমন্ডি আওয়ামী লীগের অফিস থেকে ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। পূর্ব পরিকল্পতভাবে ওইসব সন্ত্রাসীরা হেলমেট পড়ে আগ্নেয়াস্ত্র, রামদা ও অন্যান্য অস্ত্র নিয়ে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের রক্তাক্ত ও জখম করেছে। আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে, সেখানে মুহুর্মুহু গুলি হয়েছে তাতে অনেক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছে।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ হয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের চলমান এই আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে সরকার বিএনপিকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘কয়েক গত কয়েদিন ধরে একেবারে শান্তিপূর্ণভাবে নিরাপদ সড়কের জন্য শিক্ষার্থীরা শিক্ষণীয় আন্দোলন করছিল। ছাত্র-ছাত্রীদের এই আন্দোলন শুধুমাত্র তাদের জীবনের নিরাপত্তার জন্য, নিরাপদ সড়কের জন্য।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী (ওবায়দুল কাদের) এই আন্দোলনকে সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে চিহ্নিত করে ছাত্র-ছাত্রীদের এই ন্যায়সঙ্গত যৌক্তিক আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য যে মন্তব্য করেছেন আমি তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’ এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে যৌক্তিক আখ্যায়িত করে রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থতার অভিযোগ এনে সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন।
‘আমরা কখনওই কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে কাউকে উৎসাহ দিইনি এবং দিই না। বরং সরকার ও সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা আজ ন্যাক্কারজনকভাবে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপরও ঠিক একইভাবে যে সন্ত্রাসী আক্রমণ চালিয়েছিল- এটা তারই ধারাবাহিকতা। সরকারের এ ধরনের হামলার ঘটনার মধ্য দিয়ে ‘একদলীয় বাকশালী চরিত্র’ পুনরায় প্রকাশিত হয়েছে মন্তব্য করে এর বিরুদ্ধে জনগণকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বানও জানান মির্জা ফখরুল।
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই জরুরি সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুল কাইয়ুম, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামা ওবায়েদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, নাজিমউদ্দিন আলম, বেলাল আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কেএইচ/এসআর