ইউনিফর্ম পরে মোড়ে মোড়ে অরাজকতা করছে ছাত্রলীগ : রিজভী
স্কুল ইউনিফর্ম পরে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান নিয়ে অরাজকতা করছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। তিনি বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের চলমান ন্যায্য আন্দোলনকে জনদৃষ্টি থেকে ভিন্ন দিকে ফেরাতে শিক্ষার্থীদের ছদ্মাবরণে ছাত্রলীগ-যুবলীগ গাড়ি ভাঙচুর, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে চলছে।’
রিজভী বলেন, ‘কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে দমন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সে জন্য আজ রাজধানীর মোড়ে মোড়ে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনকে মনিটরিংয়ের নামে দাঁড় করিয়ে রাখা হবে বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। যদি আওয়ামী লীগ এ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে তাহলে জনগণ ও অভিভাবকরা তাদের ক্ষমা করবে না, এর পরিণাম শুভ হবে না।’
শনিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘মন্ত্রীদের নির্দেশে আজকেও দেশব্যাপী গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কষ্ট দেয়া হচ্ছে সাধারণ মানুষদের। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এই গণপরিবহন বন্ধ করেনি। মূলত পরিবহন সেক্টরে নৈরাজ্যকারীদের হুকুমেই পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে। আজকের আন্দোলনে বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগ অশুভ উদ্দেশ্য নিয়ে অবস্থান করছে।’
এসব হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মুক্তি ও দোষীদের শাস্তি দাবি করেন রিজভী। সার্বিক পরিস্থিতির দায় নিয়ে এই মুহূর্তে সরকারের পদত্যাগ দাবি করেন তিনি।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে বর্তমান অবৈধ সরকার সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে সাজানো মিথ্যা মামলায় কারাবন্দি করে তাকে সুচিকিৎসা না দেয়ায় প্রতিনিয়ত তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি দলের পক্ষ থেকে আবারও বেগম খালেদা জিয়াকে তার পছন্দ অনুযায়ী ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করে সুচিকিৎসার দাবি জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে দেশনেত্রীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।’
রিজভী বলেন, ‘গতকাল বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার স্বজনরা দেখা করেছেন। বেগম জিয়া এখনও গুরুতর অসুস্থ। পুরাতন, জ্বরাজীর্ণ, নোংরা, স্যাঁতস্যাঁতে মেঝেতে ইঁদুর তেলাপোকায় ভরা পরিত্যক্ত রুমে তাকে থাকতে হচ্ছে। এটি সরকারের নিষ্ঠুর নির্যাতনের নানামুখী পদক্ষেপের একটি। দীর্ঘদিন থেকে তার ঠান্ডা জ্বর সারছেই না।’
তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়া নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হলেও তার ইচ্ছানুযায়ী চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। তাকে কষ্ট দিয়ে তিলে তিলে তার শারীরিক অবস্থা আরও খারাপের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাকে চিকিৎসা না দিয়ে প্রতিহিংসারই বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছেন সরকারপ্রধান।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গুরুতর অসুস্থ দেশনেত্রীকে চিকিৎসা না দিয়ে উল্টো শেখ হাসিনা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে নিষ্ঠুর রসিকতা করেই যাচ্ছেন।’
তিনি বলেন, ‘নিজের সন্তুষ্টি অনুযায়ী চিকিৎসা পাওয়া যেকোনো বন্দির অধিকার। শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের দেশে দেশে যারা বন্দি বা রাজবন্দি আছে তাদের প্রতি সরকারগুলো কতটা মানবিক ব্যবহার করে। কিন্তু ভোটারবিহীন সরকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি যে আচরণ করছে তা অমানবিকতারই বহিঃপ্রকাশ।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কেএইচ/বিএ/পিআর