রাস্তায় থাকলে লক্ষ্যভ্রষ্ট হবে : নাসিম
লক্ষ্য অর্জনের পরেও শিক্ষার্থীরা রাস্তায় থাকলে আন্দেলন লক্ষ্যভ্রষ্ট হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
শুক্রবার (৩ আগস্ট) বিকেলে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
নাসিম বলেন, দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় চৌদ্দ দলের পক্ষ থেকে গভীরভাবে শোক জানাচ্ছি। শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। এটি দুর্ঘটনা নয়, এটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড। চৌদ্দ দল মনে করে এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার করে খুনিদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
নাসিম বলেন, শিক্ষার্থীরা ৯ দফা দাবি দিয়েছিল। দ্রুত সময়ের মধ্যে তা মেনে নিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ যথাযথ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। শিক্ষার্থীদের এ স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনকে আমরা সম্মান জানাই, শ্রদ্ধা জানাই। তাদের প্রতি চৌদ্দ দলের সম্পূর্ণ সহানুভূতি রয়েছে। কারণ তাদের প্রতিবাদ অত্যান্ত যুক্তিসংঙ্গত।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের চারদিনের আন্দোলনে দেশের মানুষ সার্বিকভাবে সমর্থন দিয়েছে। এখন লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে। লক্ষ্য অর্জিত হওয়ার পরে আর কোনোভাবেই রাস্তায় থাকার অর্থ হয় না। তাই চৌদ্দ দলের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরতে অনুরোধ করছি। অভিভাবকদের অনুরোধ করবো তারা যেন ঘরে ফিরে যায়।
চৌদ্দ দলের মূখপাত্র বলেন, চারদিন ধরে রোদে বৃষ্টিতে যে প্রতিবাদ চলছে, আমাদেরকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। কোথায় অব্যবস্থাপনা আছে, কোথায় দুর্বলতা আছে। এটি অত্যান্ত দুঃখের বিষয় আমাদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে। এটা স্বীকার করতে আমাদের লজ্জা বা দ্বিধা নেই। এ অব্যবস্থাপনা দীর্ঘদিনের।
কোনো দল মত নয় শ্রমিক ফেডারেশন নিজেদের স্বার্থে কাজ করে জানিয়ে নাসিম বলেন, শ্রমিক নেতৃত্বে সরকার বা বিরোধী দল বলতে কিছু নেই। কয়েক যুগ ধরে তারা পরিবহন সেক্টরকে এমন জায়গায় নিয়ে গেছে যে, মানুষ জিম্মি হয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে অনেকবার আলোচনা হয়েছে। এখানে ডান বাম কিছু নেই। দল মত নির্বিশেষে একই স্বার্থে তারা কাজ করে।
তিনি বলেন, চৌদ্দ দলের পক্ষ থেকে অভিভাবক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির নেতৃবৃন্দ এবং সব রাজনীতিবিদদের অনুরোধ করবো- আমাদের সহযোগিতা করুন। সরকারকে সহযোগিতা করুন। এমন কথা বলবেন না, এমন কোনো উক্তি করবেন না যাতে এ আন্দোলন লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে যায়।
নৌমন্ত্রীর পদত্যাগ করবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৯ দফার মধ্যে একটি দাবি ছিল নৌমন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে হবে। তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন, ক্ষমা চেয়েছেন। এখন আমার কাছে মনে হয় এটা রাজনৈতিক দাবি উঠেছে। কারণ পদত্যাগের মাধ্যমে এর সমাধান হবে না।
সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়ার সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, জাসদ একাংশের শরীফ নূরুল আম্বিয়া, ওয়ার্কার্স পার্টির আনিসুর রহমান মল্লিক, কামরুল আহসান খান, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের ওয়াজেদুল ইসলাম, গণতন্ত্রী পার্টির শাহাদাত হোসেন, বাসদের রেজাউর রশিদ খান, গণ আজাদী লীগের এস কে শিকদার, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায়, বিএমএ মহাসচিব মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন।
এইউএ/এএইচ